মার্কিন ডলারের উপর নির্ভরতা ধীরে ধীরে কমিয়ে সোনাকে কেন্দ্র করে নিজেদের আর্থিক শক্তি পুনর্গঠন করছে ব্রিকস জোট। ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চিন ও দক্ষিণ আফ্রিকা এখন সেই কাজেই মগ্ন।
2
9
অর্থনীতির এই শক্তিশালী জোট বর্তমানে বিশ্ব সোনার ভান্ডারে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে রয়েছে। সরকারি হিসেব অনুযায়ী, ব্রিকস দেশগুলির হাতে রয়েছে বিশ্বের মোট সোনার মজুতের প্রায় ২০ শতাংশ। তবে কৌশলগতভাবে ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশগুলিকে ধরলে, এই গোষ্ঠী এখন বিশ্বের প্রায় ৫০ শতাংশ সোনা উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করছে।
3
9
এই কাজে সবার আগে রয়েছে চিন ও রাশিয়া। ২০২৪ সালে চিনে উৎপাদিত হয়েছে প্রায় ৩৮০ টন সোনা, অন্যদিকে রাশিয়ার উৎপাদন ছিল প্রায় ৩৪০ টন। শুধু উৎপাদন নয়, আন্তর্জাতিক বাজার থেকেও সোনা কেনার প্রবণতা বাড়াচ্ছে ব্রিকস দেশগুলি। ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ব্রাজিল ১৬ টন সোনা কিনেছে। ২০২১ সালের পর এটি তাদের প্রথম বৃহৎ সোনা ক্রয়।
4
9
এই ‘দ্বিমুখী কৌশল’ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রিকস দেশগুলি একদিকে বেশি সোনা উৎপাদন করছে। অন্যদিকে নিজেদের সোনা বিক্রি কমাচ্ছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজার থেকেও তারা নিয়মিত সোনা কিনছে।
5
9
২০২০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ব্রিকস কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি বিশ্বের মোট সোনা কেনার ৫০ শতাংশেরও বেশি কিনেছে। এটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পছন্দ নয়।
6
9
এই প্রবণতা মার্কিন ডলার নির্ভর বিশ্বের আর্থিক ব্যবস্থার উপর বাড়তে থাকা চাপের স্পষ্ট ইঙ্গিত। মার্কিন ডলার এখনও বিশ্বের প্রধান রিজার্ভ কারেন্সি। তবে এই হারে চলতে থাকলে এই আধিপত্য ধীরে ধীরে প্রশ্নের মুখে পড়বে।
7
9
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের পর পশ্চিমি দেশগুলির দ্বারা রাশিয়ার বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ করার ঘটনাই এই মানসিক পরিবর্তনের মূল কারণ। এতে স্পষ্ট হয়েছে মার্কিন ডলার আগামীদিনে বিরাট সমস্যার মুখে পড়তে পারে।
8
9
ফলে ব্রিকস দেশগুলি এখন এমন সম্পদের দিকে ঝুঁকছে যা রাজনৈতিকভাবে নিরপেক্ষ। সোনাকে সম্পদ হিসেবে নিজেদের দখলে রাখা যায় এবং এটি প্রতিটি দেশের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকবে।
9
9
বর্তমানে বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ৩০ শতাংশ আসে ব্রিকস অর্থনীতি থেকে। এর ফলে তাদের আর্থিক সিদ্ধান্তের প্রভাব ক্রমশ বাড়ছে। স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্য, ডলার এড়িয়ে লেনদেন এবং সোনার ভান্ডার বৃদ্ধি। সব মিলিয়ে ব্রিকসের এই কৌশল বিশ্বের আর্থিক ব্যবস্থায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করছে।