দাঁত ব্রাশ করা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি সাধারণ কাজ। আর এই ছোট অভ্যাসের মধ্যেই লুকিয়ে থাকতে পারে মস্তিষ্ক সুস্থ রাখার চাবিকাঠি? শুনতে অবাক লাগলেও সাম্প্রতিক গবেষণায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। এক স্নায়ুবিজ্ঞানী জানিয়েছেন, দাঁত ব্রাশ করার সময় কিছু সহজ অভ্যাসের মাধ্যমে ডিমেনশিয়া বা স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকি কমানো যেতে পারে। 


দাঁত ব্রাশের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগের পেছনে রয়েছে বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি। বিজ্ঞান বলছে, আমাদের মস্তিষ্ক অনেক সময় দৈনন্দিন কাজগুলো ‘অটো-পাইলট’ মোডে করে। অর্থাৎ নতুন করে ভাবতে হয় না। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মস্তিষ্ককে নিয়মিত চ্যালেঞ্জ না দিলে স্মৃতিশক্তি ও চিন্তাশক্তি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। তাই খুব সাধারণ কাজের মধ্যেও যদি নতুন কিছু যোগ করা যায়, তাহলে মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে। তেমনই দাঁত মাজার সময়ে তিন অভ্যাস রপ্ত করলে প্রখর হতে পারে স্মৃতিশক্তি। 


১. উল্টো হাত দিয়ে দাঁত মাজুনঃ আমরা সাধারণত যে হাত দিয়ে কাজ করি সেটাই ব্যবহার করি ব্রাশ করার সময়। কিন্তু মাঝে মাঝে অন্য হাত দিয়ে ব্রাশ করার চেষ্টা করুন। এতে প্রথমে একটু অস্বস্তি হবে, কিন্তু এই অস্বস্তিই আসলে মস্তিষ্কের জন্য ভাল। কারণ এতে মস্তিষ্কের কম ব্যবহৃত অংশগুলো সক্রিয় হয়। নতুনভাবে ভাবতে ও নিয়ন্ত্রণ করতে হয় যা স্মৃতিশক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে।

২. এক পায়ে দাঁড়িয়ে ব্রাশ করার অভ্যাস করুনঃ দাঁত ব্রাশ করার সময় যদি এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, তাহলে শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে মস্তিষ্ককে বাড়তি কাজ করতে হয়। এতে শরীর ও মস্তিষ্কের মধ্যে সমন্বয় বাড়ে। গবেষকদের মতে, ব্যালেন্স ও কো-অর্ডিনেশন ভাল থাকলে বয়সজনিত স্মৃতিভ্রংশের ঝুঁকিও কমে।

৩. মাথার ভেতরে উল্টো করে ভাবুনঃ দাঁত মাজার সময় মনে মনে ইংরেজি বর্ণমালা জেড থেকে এ পর্যন্ত বলার চেষ্টা করুন। চাইলে সংখ্যাও উল্টো করে গুনতে পারেন। এই ধরনের মানসিক ব্যায়াম মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখে, মনোযোগ বাড়ায় এবং স্মৃতি ধরে রাখতে সাহায্য করে।

আসলে ডিমেনশিয়া এক দিনে হয় না, আবার এক দিনে ঠেকানোও যায় না। কিন্তু প্রতিদিনের ছোট ছোট অভ্যাসই ভবিষ্যতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। এই ছোট অভ্যাসগুলো দাঁত পরিষ্কারের পাশাপাশি মস্তিষ্ককে নতুন চ্যালেঞ্জ দেয়। স্মৃতিশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং বয়সজনিত মানসিক দুর্বলতা কমাতে সহায়ক হতে পারে।