আজকাল ওয়েবডেস্ক: বয়স পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই, তবুও মালাইকা অরোরার জেল্লা এবং ছিপছিপে গড়ন দেখে ঈর্ষা করেন অনেকেই। নিয়মিত যোগাভ্যাস এবং কঠোর অনুশাসন তো রয়েছেই, কিন্তু তাঁর এই চিরসবুজ লুকের নেপথ্যে আর কোন রহস্য লুকিয়ে আছে? সম্প্রতি সেই রহস্যের পর্দা ফাঁস করেছেন অভিনেত্রী নিজেই। জানিয়েছেন, প্রতিদিন সকালে তাঁর দিন শুরু হয় এক বিশেষ পানীয় দিয়ে, যার নাম তিনি দিয়েছেন ‘রেটিনল জুস’। নামের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে এর গুণের ইঙ্গিত। ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে রেটিনলের ভূমিকা সর্বজনবিদিত। কিন্তু খাবারের মাধ্যমে কীভাবে সেই উপকার পাওয়া সম্ভব, তা নিয়েই শুরু হয়েছে জোর চর্চা।

‘রেটিনল জুস’ আসলে কী?
নামে ‘রেটিনল’ থাকলেও এতে কিন্তু সরাসরি ত্বকে মাখার রেটিনল মেশানো থাকে না। এই নামের নেপথ্যে রয়েছে এক সহজ বিজ্ঞান। এই জুস তৈরি হয় এমন সব প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে, যা বিটা-ক্যারোটিন এবং ভিটামিন এ-তে ভরপুর। আমাদের শরীর এই বিটা-ক্যারোটিনকে রেটিনলে রূপান্তরিত করে, যা ত্বকের কোষকে ভিতর থেকে পুষ্টি জোগায়। অর্থাৎ, ক্রিম বা সিরামের মতো বাইরে থেকে নয়, এই পানীয় ত্বককে ভিতর থেকে মেরামত করে জেল্লা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।

উপকারিতা কী কী?
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রাকৃতিক জুসের উপকারিতা বহুমুখী।
ত্বকের যৌবন ধরে রাখে: এই জুসের প্রধান উপাদান গাজর, যা বিটা-ক্যারোটিনের সবচেয়ে বড় উৎস। এই উপাদানটি শরীরে গিয়ে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়, যা ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। ফলে ত্বকের বলিরেখা কমে এবং চামড়া টানটান থাকে।
প্রাকৃতিক জেল্লা বাড়ায়: এতে থাকা কাঁচা হলুদ এবং আদা অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদানে ভরপুর। এগুলি ত্বকের দাগছোপ, ব্রণর সমস্যা কমায় এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে ত্বকে একটি স্বাভাবিক গোলাপি আভা এনে দেয়।
শরীরকে দূষণমুক্ত করে: এই পানীয় একটি চমৎকার ডিটক্স ড্রিংক হিসেবে কাজ করে। এটি শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বার করে দেয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে ত্বকের উপর। শরীর ভিতর থেকে পরিষ্কার থাকলে ত্বকও উজ্জ্বল দেখায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: ভিটামিন এ এবং সি-তে ভরপুর হওয়ায় এই জুস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। ফলে সাধারণ সর্দি-কাশি বা মরশুমি সংক্রমণের আশঙ্কা কমে।
আরও পড়ুন: পর্ন দেখলে লিঙ্গ শিথিলতার আশঙ্কা বাড়ে? বিস্ফোরক তথ্যে চিন্তা বাড়ালেন গবেষকরা

কীভাবে বানাবেন ও খাবেন?
মালাইকার এই বিশেষ জুস বাড়িতে বানানো অত্যন্ত সহজ।

উপকরণ
গাজর: ২ টি (মাঝারি মাপের)
আপেল: অর্ধেক
আদা: আধ ইঞ্চি
কাঁচা হলুদ: আধ ইঞ্চি
সেলেরি: ১টি ডাঁটি (ইচ্ছে হলে)
গোলমরিচ গুঁড়ো: এক চিমটে (হলুদের কার্যকারিতা বাড়াতে)

প্রণালী
সমস্ত উপকরণ ভাল করে ধুয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। এরপর একটি জুসার বা মিক্সার গ্রাইন্ডারে দিয়ে ভাল করে ব্লেন্ড করে নিন। প্রয়োজন হলে সামান্য জল মেশাতে পারেন। এরপর একটি ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিলেই তৈরি আপনার ‘রেটিনল জুস’।
পুষ্টিবিদদের মতে, এই জুসের সম্পূর্ণ উপকার পেতে গেলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খাওয়া সবচেয়ে ভাল। এতে এর সমস্ত পুষ্টিগুণ শরীরে দ্রুত শোষিত হয়। তবে মনে রাখবেন, শুধু এক গ্লাস জুসেই কিন্তু বাজিমাত হবে না। এর সঙ্গে প্রয়োজন সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও নিয়মিত শরীরচর্চা। তবেই এই পানীয় হতে পারে আপনার সুস্থ জীবনযাত্রার এক বিশ্বস্ত সঙ্গী।