চুলে রং করা এখন অনেকের দৈনন্দিন সাজের অংশ। বিশেষ করে পুজোর আগে হেয়ার কালার করানোর ঝোঁক দেখা যায় বাঙালিদের মধ্যে। কিন্তু মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রং ফিকে হয়ে গেলে মন খারাপ হয়ে যায় বই কী! বিশেষজ্ঞদের মতে, একটু সচেতনতা ও যত্ন নিলেই প্রাকৃতিকভাবে চুলের রং অনেকদিন উজ্জ্বল ও টেকসই রাখা যায়। হঠাৎ রাসায়নিক ভরসায় না গিয়ে নিয়মিত ঘরোয়া উপায় ব্যবহার করলে অনেকদিন থাকবে হেয়ার কালার, সঙ্গে চুলও হবে সুন্দর ও প্রাণবন্ত। কোন কৌশল উপায় মেনে চললেই চুলের রং দীর্ঘস্থায়ী রাখা সম্ভব? জেনে নিন-
১. গরম নয়, ঈষদুষ্ণ বা ঠাণ্ডা জলে চুল ধুয়ে নিনঃ চুল ধোওয়ার সময় গরম জল ব্যবহার করলে চুলের বাইরের স্তর বা কিউটিকল নষ্ট হয়ে যায়। ফলে রং সহজেই ধুয়ে যায় এবং চুলের উজ্জ্বলতা কমে যায়। বদলে ঈষদুষ্ণ বা ঠাণ্ডা জল ব্যবহার করলে কিউটিকল বন্ধ থাকে, রং দীর্ঘদিন টিকে যায় এবং চুল থাকে মসৃণ ও চকচকে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, গরম জল দিয়ে চুল ধুলে ত্বক থেকেও প্রাকৃতিক তেল হারিয়ে যায়, যা চুলকে আরও শুষ্ক করে তোলে।
আরও পড়ুনঃ পুজোয় জমিয়ে খাওয়াদাওয়ায় বেড়েছে ওজন? রোজ সকালে এই পানীয়তে চুমুক দিলেই চটজলদি ঝরবে বাড়তি মেদ
২. নিয়মিত ডিপ কন্ডিশনিং করুনঃ চুল রং করার ফলে সেটি কিছুটা শুষ্ক ও দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই সপ্তাহে অন্তত একবার ডিপ কন্ডিশনিং ট্রিটমেন্ট বা হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। এতে চুলের ভেতর আর্দ্রতা ফিরে আসে এবং রংও দীর্ঘদিন টিকে থাকে। প্রাকৃতিক উপাদান যেমন নারকেল তেল, শিয়া বাটার, আরগান অয়েল বা কেরাটিন সমৃদ্ধ কন্ডিশনার চুলের গঠন মজবুত করে ও রঙের দীপ্তি বাড়ায়।
৩. হিট বা তাপজনিত স্টাইলিং কমানঃ স্ট্রেটনার, ব্লো ড্রায়ার বা কার্লার চুলের আর্দ্রতা শুষে নেয় এবং রং দ্রুত ফিকে করে দেয়। তাই যতটা সম্ভব প্রাকৃতিকভাবে চুল শুকানো বা লো হিট সেটিং ব্যবহার করাই ভাল। যদি হিট টুল ব্যবহার করতেই হয়, তবে অবশ্যই হিট প্রোটেক্ট্যান্ট স্প্রে ব্যবহার করুন। এটি চুলের রং ও প্রোটিন স্তরকে রক্ষা করে।

৪. ক্লোরিনযুক্ত জল থেকে দূরে থাকুনঃ সুইমিং পুলের ক্লোরিন চুলের রং নষ্ট করার অন্যতম বড় কারণ। ক্লোরিন রঙকে ফিকে করে দেয়, এমনকি হালকা সবুজ আভাও এনে দিতে পারে। সাঁতার কাটার আগে চুলে তেল বা লিভ-ইন কন্ডিশনার লাগানো উচিত, যা চুলে এক ধরনের প্রতিরক্ষামূলক স্তর তৈরি করে। আর নিয়মিত সাঁতারুদের জন্য সুইমিং ক্যাপ ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক হওয়া উচিত বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
৫. চুল ধোওয়া কমানঃ প্রতিবার শ্যাম্পু করার সঙ্গে চুলের রঙের কিছু অংশ ধুয়ে যায়। তাই রং করা চুল প্রতিদিন ধোওয়া উচিত নয়। সপ্তাহে ২–৩ বার যথেষ্ট। এর মাঝে ড্রাই শ্যাম্পু ব্যবহার করলে তেলাভাবও কমে এবং রংও টিকে থাকে। শ্যাম্পু বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও সাবধান হতে হবে। সালফেটমুক্ত, মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার করা শ্রেয়। কারণ তাতে রঙ দ্রুত মুছে যায় না।
এছাড়াও সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিও চুলের রং নষ্ট করে। তাই বাইরে বেরলে স্কার্ফ বা টুপি ব্যবহার করুন। রং করার পর চুলের গভীরে সেট হওয়ার জন্য অন্তত ৩ দিন চুল না ধোওয়া উচিত।
