আজকাল ওয়েবডেস্ক: রোজ রাতে ঘড়ির কাঁটা ধরে সাত বা আট ঘণ্টা বিছানায় থাকছেন। সকালে অ্যালার্মের শব্দে ঘুম ভাঙছে। আপাতদৃষ্টিতে সবই ঠিকঠাক। কিন্তু তার পরেও দিনভর শরীরজুড়ে ক্লান্তি, কাজে মন বসছে না, মেজাজ থাকছে খিটখিটে। আসলে আপনার ঘুম ‘হচ্ছে’ ঠিকই, কিন্তু তা ‘যথেষ্ট’ হচ্ছে না। বিষয়টি ঠিক কী? চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, শুধু ঘুমের পরিমাণ নয়, তার গুণমানও সমান গুরুত্বপূর্ণ। গভীর ঘুমকে চিকিৎসা শাস্ত্রের ভাষায় বলে রিস্টোরেটিভ স্লিপ। এই ঘুমের অভাবই এই সমস্যার মূল কারণ।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
কিন্তু কী করে বুঝবেন আপনার ঘুমের মান ভাল নয়? বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীর নিজেই কিছু সঙ্কেত পাঠায়। আসুন, চিনে নেওয়া যাক সেই লক্ষণগুলি।
১। দিনভর ঝিমুনি ও মনোযোগের অভাব: পর্যাপ্ত ঘুমের প্রধান লক্ষণ হল সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তরতাজা অনুভব করা। কিন্তু ঘুমিয়ে ওঠার পরেও যদি আপনার কফি বা চায়ের কাপে চুমুক না দেওয়া পর্যন্ত ঝিমুনি না কাটে, তবে বুঝতে হবে ঘুমের গভীরে কোনও না কোনও সমস্যা রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে বা পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে অসুবিধা হওয়া, ছোট ছোট বিষয় ভুলে যাওয়া এবং সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাগ্রস্ত হওয়া- এই সবই অপর্যাপ্ত ঘুমের ফলে হতে পারে।
২। অকারণ বিরক্তি ও মানসিক অস্থিরতা: ঘুম মস্তিষ্কের আবেগ নিয়ন্ত্রক কেন্দ্রকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। ঘুমের মান খারাপ হলে সামান্য কারণেই বিরক্ত লাগা, ধৈর্যচ্যুতি ঘটা বা অকারণ উদ্বেগ বাড়তে পারে। দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে এই সমস্যা মানসিক অবসাদের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে। মেজাজের এই আকস্মিক ওঠাপড়া ঘুমের ঘাটতির এক বড় সঙ্কেত।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র‍্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
৩. মিষ্টি বা ভাজাভুজি খাওয়ার প্রবণতা: অবাক হচ্ছেন? কিন্তু এটাই সত্যি। ঘুম কম হলে শরীরের দু’টি প্রধান হরমোন- ঘ্রেলিন (ক্ষুধা বাড়ায়) এবং লেপটিন (ক্ষুধা কমায়)-এর ভারসাম্য নষ্ট হয়। এর ফলে মস্তিষ্ক কার্বোহাইড্রেট ও শর্করা জাতীয় খাবারের জন্য আকুল হয়। যদি দেখেন আপনার অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আসক্তি বাড়ছে, তার নেপথ্যে ঘুমের অভাব একটি বড় কারণ হতে পারে।
৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া: ঘন ঘন সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছেন? বা কোনও ছোটখাটো ঘা শুকোতে অনেক বেশি সময় লাগছে? এর কারণ হতে পারে দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। গভীর ঘুমের সময়ে শরীর তার ক্ষয়ক্ষতি মেরামত করে এবং রোগ প্রতিরোধকারী কোষগুলিকে শক্তিশালী করে তোলে। সেই প্রক্রিয়ায় বাধা পড়লে শরীর সহজেই সংক্রমণের শিকার হয়।
কী করণীয়?
বিশেষজ্ঞদের মতে, শোয়ার আগে দীর্ঘক্ষণ মোবাইল বা ল্যাপটপের নীল আলো, মানসিক চাপ, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এবং শোয়ার ঘরের প্রতিকূল পরিবেশ ঘুমের মান নষ্ট করার জন্য দায়ী কারণগুলির মধ্যে প্রধান। অনেক সময়ে ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’-র মতো শারীরিক সমস্যার কারণেও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। সুতরাং, শরীর যখন সঙ্কেত দেয়, তাকে অবহেলা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। লক্ষণগুলি মিলে গেলে জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন আনুন এবং প্রয়োজনে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কারণ দিনেরবেলার কর্মক্ষমতা রাতের ঘুমের উপরেই নির্ভরশীল।