অনেকেই বাজার থেকে কাঁচা মাংস কিনে ফ্রিজে রেখে কয়েকদিন ধরে ব্যবহার করেন। কিন্তু কাঁচা মুরগির মাংস কতদিন পর্যন্ত ফ্রিজে টাটকা থাকে, আর কখন তা নষ্ট হতে শুরু করে-এ নিয়ে নতুন একটি গবেষণায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। ফুড সেফটির দিক থেকে বিষয়টি খুবই জরুরি, কারণ ভুলভাবে সংরক্ষণ করা হলে খাদ্য বিষক্রিয়া বা পেটের সমস্যা হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফ্রিজে রাখলে মুরগির সতেজতা কিছুটা সময় ধরে রাখা যায় ঠিকই, কিন্তু ফ্রিজ ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি পুরোপুরি থামাতে পারে না। বরং ব্যাকটেরিয়া খুব ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের বেশি মাংস ফ্রিজে রাখলে তা খাওয়ার অনুপযোগী হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, যদি ফ্রিজের তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার নিচে থাকে, তাহলে কাঁচা মুরগি সর্বোচ্চ ১ থেকে ২ দিন নিরাপদ থাকে। অনেকেই ভাবেন মুরগি ৩–৪ দিনও ফ্রিজে ভাল থাকে, কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, এই ভুল ধারণা।
ফ্রিজের তাপমাত্রা সবসময় এক থাকে না। ঘন ঘন ফ্রিজ খোলা-বন্ধ করা, বেশি খাবার ভর্তি থাকা, বা বিদ্যুৎ চলে যাওয়া-এসব কারণে তাপমাত্রা পরিবর্তন হলে মুরগির সতেজতা আরও দ্রুত নষ্ট হয়। গবেষণায় দেখা যায়, তাপমাত্রা ওঠানামা করলে ব্যাকটেরিয়া বাড়ার গতি দ্বিগুণ পর্যন্ত হয়ে যায়।
এয়ারটাইট বা ভ্যাকুয়াম-সিল প্যাকেটে মুরগি রাখলে সাধারণ প্যাকেটের তুলনায় কিছুটা বেশি সময় তাজা থাকতে পারে। কারণ বাতাস কম থাকলে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধিও তুলনামূলকভাবে কম হয়। তবে এটাও সত্যি যে, এমনকী সিল করা থাকলেও ১–২ দিনের বেশি কাঁচা মুরগির মাংস ফ্রিজে রাখা নিরাপদ নয়।
মাংস নষ্ট হয়েছে কিনা বোঝার কিছু সহজ উপায় রয়েছে। যেমন—মুরগি থেকে যদি টক, দুর্গন্ধ বা অস্বাভাবিক গন্ধ আসে, তবে তা নিশ্চয়ই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে ধরে নিতে হবে। মাংসের গায়ে চটচটে ভাব বা স্লিমি টেক্সচার তৈরি হলে সেটিও নষ্ট হওয়ার লক্ষণ। স্বাভাবিক গোলাপি রং বদলে যদি ধূসর, সবুজাভ বা ফ্যাকাশে দেখায়, তাহলে সেটি খাওয়ার উপযোগী নয়।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, মুরগি কেনার সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজে রাখুন। কখনওই ঘরের তাপমাত্রায় বেশি সময় ফেলে রাখবেন না। এয়ারটাইট প্যাকেটে সংরক্ষণ করুন। ফ্রিজকে সবসময় চার ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখুন এবং সবচেয়ে জরুরি ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবহার করুন।
