বিশ্ববাজারে চাপের মধ্যে রয়েছে মূল্যবান ধাতুর বাণিজ্য। মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর এমসিএক্স-এ ডিসেম্বর ডেলিভারির জন্য গোল্ড ফিউচারস প্রতি ১০ গ্রাম ১,৮১২ বা ১.৪৭% কমে দাঁড়ায় ১,২১,১১৫-এ। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের আসন্ন মাসে সুদহার কমানোর সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়ায় এবং ফেড কর্মকর্তাদের ধারাবাহিক কড়া বক্তব্যের ফলে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব দুর্বল হয়েছে।
2
9
একইভাবে, ফেব্রুয়ারি ২০২৬ মেয়াদের সোনার চুক্তি প্রায় ১০টা ২১ মিনিট নাগাদ ১,৮৫৪ বা ১.৪৯% কমে প্রতি ১০ গ্রাম ১,২২,৮২০-এ নেমে আসে। গত সপ্তাহে নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে পরিচিত এই ধাতুর দাম উল্টো ২,৪৯৪ বা ২.০৬% বেড়েছিল।
3
9
রুপোর বাজারও ছিল নিম্নমুখী। এমসিএক্স-এ ডিসেম্বর ডেলিভারির সিলভার ফিউচারস প্রতি কেজি ৩,৭৪১ বা ২.৪১% কমে ১,৫১,৫৭১-এ লেনদেন হয়। মার্চ ২০২৬ মেয়াদি রুপোর চুক্তিও ৩,৩৮৫ বা ২.১৪% কমে প্রতি কেজি ১,৫৪,৫৪০-এ নেমে যায়। যদিও গত সপ্তাহে রুপোর দাম বিপরীতভাবে ৮,২৯০ বা ৫.৬১% বেড়ে গিয়েছিল।
4
9
আন্তর্জাতিক বাজারেও একই প্রবণতা দেখা যায়। কমেক্সে ডিসেম্বর ডেলিভারির গোল্ড ফিউচারস ১.৫৬% কমে প্রতি আউন্স ৪,০১১.১০-এ নেমে আসে। কমেক্স সিলভারও ২.৫৭% কমে প্রতি ট্রয় আউন্স ৪৯.৪১-এ ট্রেড হয়। বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিলম্বিত অর্থনৈতিক ডেটা সামনে রেখে বিনিয়োগকারীরা সতর্ক অবস্থানে চলে যাওয়ায় ফিউচার মার্কেটে চাহিদা নরম হয়েছে।
5
9
বাজার এখন তাকিয়ে আছে এই সপ্তাহের গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন চাকরি সংক্রান্ত তথ্য—নন-ফার্ম পেরোলস রিপোর্টের দিকে, যা ফেডের পরবর্তী নীতিগত সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত সপ্তাহে ফেড কর্মকর্তাদের ধারাবাহিক হকিশ মন্তব্যের কারণে ডিসেম্বরের সুদহার কমানোর সম্ভাবনা ৫০% থেকে নেমে ৪৬%-এ এসেছে।
6
9
এদিকে, সোমবার প্রকাশিত সরকারি তথ্য বলছে, অক্টোবর মাসে ভারতের রপ্তানি ১১.৮% কমে ৩৪.৩৮ বিলিয়ন হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্ক আরোপের প্রভাবে রপ্তানি খাতে ধাক্কা লাগে। বিপরীতে, আমদানি ১৬.৬৩% বেড়ে ৭৬.০৬ বিলিয়ন হওয়ায় বাণিজ্য ঘাটতি রেকর্ড উচ্চতা ৪১.৬৮ বিলিয়নে পৌঁছেছে।
7
9
এই বৃদ্ধি মূলত সোনা, রুপো, তুলার বর্জ্য, সারের কাঁচামাল এবং সালফারের আমদানি বাড়ার কারণে হয়েছে। অক্টোবর মাসে সোনার আমদানি বছরে প্রায় ২০০% বেড়ে ১৪.৭২ বিলিয়নে পৌঁছেছে। রুপোর আমদানি আরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে—৫২৮.৭১% লাফিয়ে ২.৭১ বিলিয়ন।
8
9
এদিকে ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির প্রথম ধাপ "প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে" রয়েছে বলে সরকারি সূত্র জানিয়েছে। এই ধাপ সম্পূর্ণ হলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন আরোপিত ৫০% ভারী শুল্কের একটি বড় অংশ সমাধান হতে পারে এবং মার্কিন বাজারে ভারতের প্রবেশাধিকারের সমস্যাও মিটতে পারে।
9
9
কমোডিটি বিশেষজ্ঞদের মতে, এখন বাজারের দৃষ্টি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাকরির রিপোর্ট, ফেডের মিটিং মিনিটস এবং সপ্তাহজুড়ে ফেড কর্মকর্তাদের মন্তব্যের ওপর থাকবে। বিশেষ করে বুধবার ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েলের বক্তব্য বাজারে বড় প্রভাব ফেলতে পারে। তাদের মতে, এই সমস্ত উপাদানই সোনা-রুপোর দামের পরবর্তী দিশা নির্ধারণ করবে।