সাধারণত হাই তোলা মানে আমরা ঘুম পেয়েছে বা শরীর ক্লান্ত বলে মনে করি । কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, হাই তোলা সবসময় ঘুম বা ক্লান্তির ইঙ্গিত নয়। অনেক সময় এটি হতে পারে হৃদরোগের প্রাথমিক লক্ষণ। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, শরীরে অক্সিজেনের অভাব বা রক্তচাপের ওঠানামা হলে মস্তিষ্ক থেকে ‘হাই’ রিফ্লেক্স সক্রিয় হতে পারে যা হৃদযন্ত্রের উপর বাড়তি চাপের ইঙ্গিত দেয়।

কীভাবে হাই হৃদরোগের সংকেত দেয়? মানুষের হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ ও শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্কের একটি অংশ হল ব্রেইনস্টেম। যখন হৃদপিণ্ড ঠিকমতো রক্ত পাম্প করতে পারে না বা রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি হয় তখন মস্তিষ্কে অস্থিরতা দেখা দেয়। মস্তিষ্ক তখন শরীরকে ঠান্ডা রাখার জন্য হাই তোলার সংকেত পাঠায়। এই কারণে অনেক সময় দেখা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঠিক আগে বা চলাকালীন রোগী অতিরিক্ত হাই তুলছেন।

আরও পড়ুনঃ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট খাচ্ছেন? জানেন এই ভিটামিন বেশি খেলে শরীরের কোন মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে?

কোন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন

বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি আপনি বারবার হাই তুলছেন কিন্তু ঘুম পাচ্ছে না, তার সঙ্গে নিচের উপসর্গগুলো রয়েছে তাহলে সতর্ক হওয়া জরুরি। যেমন-

*বুকে চাপ বা অস্বস্তি
*হালকা মাথা ঘোরা
*অতিরিক্ত ঘাম
*বমিভাব বা বমি
*চোয়াল, ঘাড় বা কাঁধে ব্যথা
*হঠাৎ নিঃশ্বাসে কষ্ট

এই লক্ষণগুলো একসঙ্গে দেখা দিলে তা হতে পারে হৃদযন্ত্রের রক্ত চলাচলে সমস্যা বা হার্ট অ্যাটাকের আগাম সতর্কতা।

চিকিৎসকদেরমতে, অতিরিক্ত বা অস্বাভাবিক হাই তোলা যদি দৈনন্দিন জীবনে বারবার ঘটে, তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। সঙ্গে ইসিজি, ইকোকার্ডিওগ্রাম বা ট্রেডমিল টেস্টের মতো পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও স্থূলতা থাকলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। ধূমপান ও অতিরিক্ত মানসিক চাপ এড়িয়ে চলতে চলুন। পর্যাপ্ত ঘুম ও নিয়মিত ব্যায়ামও হৃদয়কে সুস্থ রাখে।

মনে রাখবেন, সব হাই হৃদরোগের ইঙ্গিত নয়, অনেক সময় এটি নিছক ক্লান্তির প্রতিক্রিয়া। তবে হঠাৎ ঘন ঘন হাই, সঙ্গে বুকে বা শ্বাসে অস্বস্তি দেখা দিলে বিষয়টি হালকাভাবে না নেওয়াই ভাল। কারণ হৃদরোগের প্রাথমিক ইঙ্গিতগুলো সাধারণ মনে হলেও প্রাণঘাতী হতে পারে।