সাধারণত ঘামের কোনও গন্ধ হয় না। কিন্তু এই ঘামের সঙ্গে যখন ব্যাকটেরিয়া যুক্ত হয়, তখন দুর্গন্ধ তৈরি হয়। গায়ের দুর্গন্ধ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দেয়! যতই সাজ পোশাক ভাল করুন না কেন, গায়ের দুর্গন্ধ যে ব্যক্তিত্বের উপর প্রভাব ফেলে তা বলাই বাহুল্য! অনেকেই রোজকার জীবনে ঘামের দুর্গন্ধের সমস্যায় ভরসা রাখেন নামিদামি ব্র্যান্ডেড পারফিউমের উপর। কিন্ত তাতেও অনেক সময় সুরাহা মেলে না। যার জন্য কেন গায়ে দু্র্গন্ধ হচ্ছে তার কারণ জানা জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের কয়েকটি নির্দিষ্ট গন্ধ কোনও বিশেষ রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। যেমন- 

* মিষ্টি বা ফলের মতো গন্ধঃ ডায়াবেটিস বা রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে কিটোন জমে যায়। এতে ঘাম বা নিঃশ্বাসে মিষ্টি কিংবা ফলজাতীয় গন্ধ পাওয়া বেরতে দেখা যায়।

* অ্যামোনিয়ার মতো গন্ধঃ কিডনির সমস্যায় শরীর থেকে বর্জ্য সঠিকভাবে বের হতে না পারলে ঘামে অ্যামোনিয়ার মতো গন্ধ হতে পারে।

আরও পড়ুনঃ পুজোর আগে ছিপছিপে চেহারা, জেল্লাদার ত্বক-চুল চান? সহজ কটি নিয়ম মানলেই হয়ে উঠবেন নজরকাড়া

* তীব্র মাছের মতো গন্ধঃ  ট্রাইমেথিলামিনুরিয়া নামে বিরল এক মেটাবলিক সমস্যায় শরীর থেকে মাছের মতো গন্ধ বের হয়। এটি জিনগত রোগও হতে পারে।

* অ্যালকোহল বা টক ধরনের গন্ধঃ যকৃতের সমস্যা বা লিভার ফেইলিওরের ক্ষেত্রে শরীরে টক বা অ্যালকোহলজাতীয় গন্ধ তৈরি হতে পারে।

* পচা ডিম বা সালফারের মতো গন্ধঃ হজমে সমস্যা বা কিছু ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের কারণে এ ধরনের গন্ধ হয়।

* অতিরিক্ত তীব্র ঘামের গন্ধঃ থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতায় এই ধরনের গন্ধ হতে পারে। 

এছাড়াও বেশ কিছু কারণে হয় দুর্গন্ধ হতে পারে। যেমন- 

* অপর্যাপ্ত পরিচ্ছন্নতা : নিয়মিত স্নান না করলে বা পোশাক পরিষ্কার না রাখলে ঘামের সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া বেড়ে দুর্গন্ধ হয়।

* খাবারের প্রভাব : রসুন, পেঁয়াজ, ঝাল-মশলা বা অ্যালকোহল শরীরের গন্ধ বাড়াতে পারে।

* হরমোন ও মানসিক চাপ : হরমোনের মাত্রার ওঠানামা কিংবা স্ট্রেস শরীরের ঘাম ও গন্ধ দুটোই বাড়ায়।

* স্বাস্থ্য সমস্যা : লিভারের অসুখ, কিংবা কিছু মেটাবলিক রোগে হঠাৎ অস্বাভাবিক গন্ধ তৈরি হতে পারে।

কেন সতর্ক হওয়া জরুরি

চিকিৎসকদের মতে, হঠাৎ তীব্র বা অস্বাভাবিক শরীরের গন্ধ হলে অবহেলা করা উচিত নয়। এটি শরীরের ভেতরের কোনও গুরুতর অসুস্থতার প্রাথমিক সংকেত হতে পারে।

দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণের উপায়

* নিয়মিত স্নান ও পরিষ্কার পোশাক ব্যবহার করুন।
* কটন বা হালকা বায়ু চলাচল করে এমন পোশাক পরুন।
* ঝাল-মশলা ও দুর্গন্ধ সৃষ্টিকারী খাবার কম খান।
* প্রচুর জল পান করুন।

যদি হঠাৎ গন্ধের পরিবর্তন হয় বা তীব্রতা বাড়ে, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।