সারা বছর তো বটেই, বিশেষ করে শীতকালে অনেকেরই কফি খেয়ে দিন শুরু হয়। যতই বাঙালির চা-এর প্রতি প্রেম থাকুক, ঠান্ডায় কফির চাহিদা তুঙ্গে। দিনের শুরুতে ধোঁয়া ওঠা কাপে কফিতে চুমুক দেওয়ার অভ্যাস রয়েছে বিভিন্ন বয়সের মানুষের। ঠান্ডার সকালে শরীরকে চাঙ্গা করতে কফির জুড়ি নেই। কফির স্বাস্থ্যগুণও কম নয়। আর এই কফির সঙ্গে একটি জিনিস মিশিয়ে নিলেই আরও কয়েকগুণ বেশি উপকার পাওয়া যায়।
সম্প্রতি একটি নতুন অভ্যাস বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তা হল সকালের কফিতে এক চামচ ঘি মেশানো। শুনতে একটু অদ্ভুত লাগলেও, এই ঘি-কফির রয়েছে বেশ কিছু উপকারিতা, বিশেষ করে শীতকালে এটি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
ঘি কফি শরীরে দীর্ঘক্ষণ শক্তি জোগায়। সাধারণ কফি খেলে কিছুক্ষণের মধ্যেই এনার্জি কমে যায়। কিন্তু ঘি-র মধ্যে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ধীরে ধীরে শরীরে শক্তি বাড়ায়। ফলে সকালে ঘি কফি খেলে দীর্ঘ সময় ক্লান্তি কম লাগে এবং কাজের সময় মনোযোগও ভাল থাকে।
অনেকেরই খালি পেটে কফি খেলে গ্যাস, অম্বল বা পেটের অস্বস্তি হয়। ঘি পেটের ভেতরের আস্তরণকে রক্ষা করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। তাই শীতের সকালে যারা কফি খেয়ে পেটের সমস্যা অনুভব করেন, তাঁদের জন্য ঘি কফি তুলনামূলক আরামদায়ক হতে পারে।
ঠান্ডায় শরীর গরম রাখতে সাহায্য করে ঘি। আয়ুর্বেদ অনুযায়ী, ঘি শরীরের ভেতরের তাপ ধরে রাখতে পারে। শীতকালে যখন হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যায়, তখন ঘি কফি শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখতে সহায়তা করতে পারে।
মস্তিষ্কের জন্যও ঘি ভাল। ঘি-তে থাকা ভাল ফ্যাট মস্তিষ্কে শক্তি জোগায়। সকালে ঘি কফি খেলে অনেকেই বলেন, মাথা বেশি পরিষ্কার থাকে, কাজে মনঃসংযোগ বাড়ে এবং ঝিমুনি কম লাগে।
ঘি শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। ঘি-তে ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে থাকে, যা শরীরকে সুস্থ রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। শীতকালে সর্দি-কাশি বা দুর্বলতা কমাতে এই পুষ্টিগুণ কাজে আসে।
কীভাবে বানাবেন ঘি কফি? এক কাপ গরম কফিতে এক চা চামচ খাঁটি দেশি ঘি দিন। ভাল করে নেড়ে নিন। চাইলে সামান্য দারচিনি যোগ করতে পারেন স্বাদ বাড়ানোর জন্য।
ঘি কফি উপকারী হলেও অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। যাঁদের কোলেস্টেরল বেশি, হৃদরোগ বা ওজন সংক্রান্ত সমস্যা আছে, তাঁদের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিজের শরীরের প্রয়োজন বুঝে এই অভ্যাস বজায় রাখা সবচেয়ে ভাল।
