‘ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবিটিস ফেডারেশন’-এর ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে ভারতে ডায়াবিটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮ কোটির উপরে। পরিস্থিতি যে দ্রুত হারে বদলাচ্ছে তাতে ২০৫০-এ ১৫ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। আর ডায়াবেটিস একবার হানা দিলে জীবনভর বয়ে নিয়ে যেতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না রাখলে নানা জটিল রোগের ঝুঁকি বাড়তে থাকে। তাই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। আসলে এই রোগটি তখনই হানা দেয় যখন আমাদের শরীর কম ইনসুলিন তৈরি করতে শুরু করে অথবা সেই ইনসুলিন কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারে না। ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মাফিক ওষুধের সঙ্গে আরও বেশ কিছু বিষয়ে নজর রাখা জরুরি। যার মধ্যে খাদ্যভাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত কয়েকটি খাবার খেতে পারেন।
• ডাল ও শস্যজাতীয় খাবারঃ ছোলা, রাজমা, মসুর ডাল প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ। এগুলো ধীরে হজম হয়। ফলে খাওয়ার পর রক্তে শর্করা হঠাৎ বেড়ে যায় না।
• দারচিনিঃ গবেষণায় দেখা গেছে, দারচিনি ফাস্টিং ব্লাড সুগার কমাতে এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। ওটস, চা বা তরকারিতে মিশিয়ে দারচিনি খেতে পারেন। শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে দারুচিনি।
• দই ও ফারমেন্টেড খাবারঃ দই, বাটারমিল্ক, ইডলি বা ধোসার মতো খাবার অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখে এবং গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
• বেরি জাতীয় ফলঃ ব্লুবেরি, স্ট্রবেরির মতো ফল অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট ও ফাইবারে ভরপুর। এগুলো ইনসুলিন সংবেদনশীলতা উন্নত করে।
• শাকসবজিঃ ব্রকলি, ফুলকপি ও অন্যান্য সবুজ শাকসবজিতে কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে। ফলে রক্তে শর্করা ধীরে বাড়ে। বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাক সবজি মেদ ঝরাতে, হজম ক্ষমতা বাড়াতে এবং দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি রাখে।
• বাদাম ও বীজঃ কাজুবাদাম, কাঠবাদাম, চিয়া ও ফ্ল্যাক্স সিডের মতো বীজ ভাল ফ্যাট, প্রোটিন ও ফাইবার সরবরাহ করে যা রক্তে চিনি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
• গোটা শস্যঃ কিনোয়া, বার্লি বা ওটসের মতো শস্য ধীরে হজম হয়। ফলে গ্লুকোজ ধীরে ধীরে রক্তে মিশতে পারে। রক্তে শর্করার কোলেস্টরল নিয়ন্ত্রণে থাকে।

* সবুজ মুগঃ নিরামিষাশীদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারে সবুজ মুগ। এটির পেশি মজবুত রাখতে, কোষ গঠনে প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ভেজানো মুগে মেলে ভিটামিন বি, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম। দ্রুত শক্তি জোগাতে সাহায্য করে মুগ। শরীরচর্চার পর কিছুটা ভেজানো মুগ খেতে পারেন।
এছাড়াও ডায়াবেটিস প্রতিরোধে কার্বোহাইড্রেটের সঙ্গে সবসময় প্রোটিন ও ফাইবারযুক্ত খাবার খান। প্রচুর জল পান করাও জরুরি এবং খাওয়ার পর হালকা হাঁটাহাঁটি করুন। ডায়েট শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।
মনে রাখবেন, সকলের শারীরিক অবস্থা এক রকম নয়। তাই এই খাবারগুলো ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করার আগে চিকিৎসকের নির্দেশ মেনে চলা উচিত।
