আজকাল ওয়েবডেস্ক: টেলিগ্রামে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নানা পোস্টকে ঘিরে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ভিডিওটিতে দাবি করা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জেড আই খান পান্না একটি আধা-সামরিক মহড়ায় কামান তাক করে পাকিস্তানের দিকে প্রতীকী বার্তা দিচ্ছেন, সাথে উচ্চারণ করছেন “জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু”। ভিডিওটিকে ঘিরে বিভিন্ন মহল থেকে মন্তব্য আসছে, কেউ একে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতীকী প্রকাশ হিসেবে দেখছেন, আবার কেউ প্রশ্ন তুলছেন এর প্রেক্ষাপট ও উদ্দেশ্য নিয়ে।
এ ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে আরও একটি দাবি—১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে ‘৭১ মঞ্চ’-এর ব্যানারে জেড আই খান পান্না এবং বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের উদ্দেশ্যে শোক মিছিল করবেন। এই দাবিটি প্রথমে লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক পোস্ট থেকে আলোচনায় আসে, যেখানে তিনি ড. কামাল হোসেন ও জেড আই খান পান্নার একটি ছবি দিয়ে ক্যাপশনে লিখেছিলেন—"ড. কামাল হোসেন ও মুক্তিযোদ্ধা জেড আই খান পান্নার নেতৃত্বে ৩২ নম্বরে শোক মিছিল যাবে, স্বাধীনতার পক্ষে সবাই প্রস্তুত থাকুন।"
আরও পড়ুন: রাহুলের বিস্ফোরক অভিযোগে আক্রমণ কমিশনের: 'হুমকি না দিয়ে ডিজিটাল ভোটার লিস্ট দিন', পালটা রাহুল
তবে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে জেড আই খান পান্না এই দাবিকে “ভিত্তিহীন” বলে প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় লিখেছেন— "এটি ঠিক নয় যে ড. কামাল হোসেন ও আমি ‘৭১ মঞ্চ’-এর নামে ১৫ আগস্ট ৩২ নম্বরে যাবো।” জেড আই খান পান্না এই গুজবকে উদ্দেশ্যমূলক চরিত্রহননের অংশ হিসেবে আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানান। তাঁর মতে, মুক্তিযোদ্ধা ও জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নাম ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়ানো Liberation War-এর ইতিহাস বিকৃত করার একটি অপচেষ্টা।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট ‘৭১ মঞ্চ’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম আত্মপ্রকাশ করে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা রক্ষার লক্ষ্য নিয়ে গঠিত এই মঞ্চের সমন্বয়ক হিসেবে রয়েছেন বীর প্রতীক অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না। সংগঠনে মুক্তিযোদ্ধা, নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি এবং শিক্ষার্থীরা যুক্ত হয়েছেন।
মঞ্চের ঘোষণাপত্রে বলা হয়, স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও মূল্যবোধ রক্ষায় তারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে। তবে ১৫ আগস্টের কোনো কর্মসূচি সম্পর্কে ঘোষণাপত্রে বা পরবর্তী কোনো বিবৃতিতে উল্লেখ ছিল না। এই ঘটনায় রাজনৈতিক মহল ও সামাজিক মাধ্যম দুই জায়গাতেই নতুন করে আলোচনার ঝড় উঠেছে। কেউ কেউ মনে করছেন, জাতীয় শোক দিবসকে ঘিরে রাজনৈতিক বিভাজন ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই এই ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছে।
