আজকাল ওয়েবডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। নতুন এই শুল্ক কার্যকর হবে ২৭ আগস্ট, মার্কিন সময় রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে। আমেরিকার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট এবং ইউএস কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশনের (CBP) জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গত ৬ আগস্ট স্বাক্ষর করা এক্সিকিউটিভ অর্ডার ১৪৩২৯ অনুযায়ী। ওই নির্দেশে বলা হয়েছিল, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখা দেশগুলোর ওপর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, আর সেই নীতির অংশ হিসেবেই ভারতকে নিশানা করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, এই অতিরিক্ত শুল্ক ভারতের একাধিক রপ্তানি পণ্যের ওপর বসানো হবে, যেগুলি মূলত বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে যুক্ত তালিকায় উল্লেখ রয়েছে। সময়সীমার পর যে কোনও ভারতীয় পণ্য আমেরিকায় পৌঁছালে কিংবা গুদাম থেকে ছাড়ালে তার ওপর নতুন শুল্ক প্রযোজ্য হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়া দেশগুলির ওপর তিনি আরও শুল্ক বা নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারেন। ‘খুব বড় পরিণতি’ আসতে চলেছে বলে তিনি সতর্ক করেছেন। জানিয়েছেন, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। তবে চিন সহ রাশিয়ার অন্য বৃহৎ ক্রেতাদের ওপর আপাতত এই ধরনের শুল্ক চাপায়নি ওয়াশিংটন। তবে আগস্টেই ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দেন।
ফলে মোট শুল্কের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৫০ শতাংশে। কারণ, হিসেবে দেখানো হয়, ভারত রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনা বন্ধ করেনি। ভারতের তরফে এই শুল্ককে ‘অন্যায়, অযৌক্তিক ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে সমালোচনা করা হয়েছে। নয়াদিল্লির দাবি, শান্তি আলোচনায় অগ্রগতি হলে এই শুল্ক প্রত্যাহার করা উচিত। উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ভারত কখনোই তার কৃষক এবং মৎস্যজীবীদের স্বার্থের সঙ্গে আপোস করবে না। আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, এই নীতির জন্য তাঁকে হয়তো ‘মূল্য চোকাতে হবে’, তবু তিনি কৃষকদের জন্য তা করতে প্রস্তুত।
দিল্লিতে এমএস স্বামীনাথন শতবার্ষিকী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের কাছে দেশের কৃষকদের স্বার্থই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায়। ভারত কখনও কৃষক, জেলে এবং দুগ্ধ চাষীদের স্বার্থের সঙ্গে আপোস করবে না। আমি জানি এর জন্য আমাদের অনেক মূল্য দিতে হবে এবং আমি এর জন্য প্রস্তুত। ভারত এর জন্য প্রস্তুত।’ প্রসঙ্গত, আমেরিকা চাইছে তাদের দুগ্ধজাত পণ্য ভারতের বাজারে কম দামে বিক্রি হোক। তবে মার্কিন দুগ্ধজাত পণ্য ‘আমিষ’ বলে দাবি করেছে ভারত। কারণ সেখানকার গবাদি পশুদের মাংস খাওয়ানো হয় উৎপাদন বৃদ্ধির জন্যে। তাই মার্কিন দুধ ভারতের বাজারে বিক্রি করতে দিতে রাজি নয় ভারত। এদিকে মার্কিন জেনেটিকালি মোডিফায়েড কৃষি পণ্যও ভারতে বিক্তি করতে দিতে রাজি নয় দিল্লি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আহমেদাবাদে এক জনসভায় বলেছিলেন, ‘যতই চাপ আসুক না কেন, ভারত তার শক্তি বাড়াতেই থাকবে। আজ আত্মনির্ভর ভারত অভিযানের শক্তি আসছে গুজরাত থেকে, আর এর পেছনে রয়েছে দুই দশকের কঠোর পরিশ্রম’।
