আজকাল ওয়েবডেস্ক: পৃথিবীতে বিবর্তনের রাজত্ব চলছে। সেখান থেকে দেখতে হলে এমন প্রচুর প্রাণী রয়েছে যারা কোনও এক সময় পৃথিবী থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। তবে ফের দেখা গিয়েছে কোনও না কোনও সময়ের ফাঁকে তারা ফের একবার ফিরে এসেছে।
প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ বহু বছরের। সেখান থেকে মানুষের যেমন বিবর্তন হয়েছে সেদিক থেকে দেখতে হলে প্রকৃতি বাকি প্রাণীদের ক্ষেত্রেও একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এমনই এক বিরল প্রাণী যা ৩০ বছর আগে হারিয়ে গিয়েছিল তাকে ফের একবার দেখা গিয়েছে। এটিকে বলা হয় ছোটো এক ধরণের ইঁদুর যাকে দেখতে একেবারে হরিণের শাবকের মতো। তবে যারা একে হরিণের শাবক বলে ধরতে যাবেন তাদের কপালে দুঃখ আছে। হঠাৎই লাফ দিয়ে আপনাকে কামড়ে দিতে পটু এই ইঁদুর।
একে হঠাৎ করে দেখতে অনেকটা ছোটো একটি খরগোশের মতো। অতি দ্রুত এটি চলাচল করতে পারে। এর ছোটো ছোটো পা দিয়ে এটি দ্রুতগতিতে চলতে পারে। সেদিক থেকে দেখতে হলে বাকি প্রাণীদের তুলনায় এর গতি অতি বেশি। তবে কীভাবে এতগুলি বছর ধরে এই প্রাণীটি দেখা যায়নি এবং কীভাবে ফের এদের দেখা গেল তা নিয়ে বিরাট চিন্তায় পড়েছেন পরিবেবিশবিদ থেকে শুরু করে বিজ্ঞানী সকলেই।
This is how the #species, silver-backed chevrotain, which was not seen in last three decades was observed once again. This technology is a star. Courtesy; Global Wildlife Conservation https://t.co/xAOgwco5qq pic.twitter.com/2XDAimRBrd
— Parveen Kaswan, IFS (@ParveenKaswan)Tweet by @ParveenKaswan
ভিয়েতনাম থেকে পাওয়া এই প্রাণীটি গভীর জঙ্গলে বাস করে। একে সহজে দেখাও যায় না। জঙ্গলের মধ্যে ক্যামেরা ফিট করে তবে সেখান থেকে একে দেখা গিয়েছে। আর ছবি সামনে আসার পরই সেখান থেকে তৈরি হয়েছে নতুন জল্পনা।
পৃথিবীতে বিবর্তনের ইতিহাস একটি দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়া, যা কয়েক বিলিয়ন বছর ধরে চলেছে। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সময়ের সঙ্গে পৃথিবীর জীবন্ত জিনিসগুলির পরিবর্তন ও বিকাশ ঘটে। বিবর্তনের মূল ধারণাটি হল, বর্তমানের সকল জীব, তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সহ, একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে এবং প্রাকৃতিক নির্বাচন ও অভিযোজনের মাধ্যমে সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তিত হয়েছে।
পৃথিবীর উৎপত্তি এবং আদি জীবন: প্রায় ৪.৫ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী গঠিত হয়েছিল এবং ধীরে ধীরে শীতল হওয়ার পরে, প্রায় ৩.৭ বিলিয়ন বছর আগে, আদিম জীবন (যেমন - ব্যাকটেরিয়ার মতো এককোষী জীব) তৈরি হতে শুরু করে। এই সময়ের মধ্যে, সালোকসংশ্লেষণ (photosynthesis) প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছিল, যা বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন যুক্ত করতে সাহায্য করে
প্রোক্যারিওট থেকে ইউক্যারিওট: প্রথম দিকের জীবগুলি ছিল প্রোক্যারিওট (যেমন - ব্যাকটেরিয়া), যাদের মধ্যে নিউক্লিয়াস (পরিপূর্ণ কোরক) ছিল না। এরপর ইউক্যারিওট (যেসব জীবের কোষে নিউক্লিয়াস আছে) তৈরি হয় এবং এদের থেকেই বহুকোষী জীব সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: লাগামহীন হবে সোনার দাম! রিপোর্ট থেকে উঠে এল কোন তথ্য
বহুকোষী জীবের বিবর্তন: প্রায় ৬০০ মিলিয়ন বছর আগে, বহুকোষী জীবগুলির দ্রুত বিবর্তন ঘটে। এই সময়ে বিভিন্ন ধরণের সামুদ্রিক প্রাণী, মাছ, উভচর প্রাণী এবং সরীসৃপ তৈরি হয়েছিল।
বিবর্তনের এই দীর্ঘ যাত্রায়, প্রাকৃতিক নির্বাচন এবং অভিযোজন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রাকৃতিক নির্বাচন হল সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে পরিবেশের সঙ্গে সবচেয়ে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে পারা জীবেরা টিকে থাকে এবং তাদের বৈশিষ্ট্যগুলি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সঞ্চারিত হয়।
চার্লস ডারউইন বিবর্তন তত্ত্বের একজন প্রভাবশালী বিজ্ঞানী ছিলেন এবং তাঁর কাজ "On the Origin of Species" বিবর্তন সম্পর্কে আমাদের আধুনিক ধারণার ভিত্তি স্থাপন করেছে। ডারউইনের একটি নোটবুকে জীবনের এই বৃক্ষটি দেখায় যে পৃথিবীর সমস্ত প্রজাতি একটি সাধারণ পূর্বপুরুষ থেকে এসেছে। আজকের পৃথিবীতে, আমরা যে জীববৈচিত্র্য দেখতে পাই, তা বিবর্তনের এই দীর্ঘ এবং জটিল প্রক্রিয়ার ফল।
