আজকাল ওয়েবডেস্ক: চলতি বছরে সোনার দামে যেন কিছুতেই লাগাম পরানো যাচ্ছে না। জুলাই মাস পর্যন্ত সোনার দাম যে উচ্চতায় গিয়েছে সেখান থেকে এবার আগস্টে সোনার দাম ফের একবার বাড়তি উচ্চতা লাভ করবে সেটা একবারে বলে দেওয়া যায়।
বিগত সপ্তাহেই যেখানে ১০ গ্রাম সোনার দাম ১ লাখ ৫৫৫ হয়েছে। সেখান থেকে দেখতে হলে এবার আগস্টে সোনার দাম আরও বাড়বে। সেখানে ভারত এবং চিনের মতো দেশগুলি সোনার দাম নিয়ে বাড়তি সতর্ক রয়েছে। যদি সোনার দাম এই হারে বাড়তে শুরু করে তাহলে চলতি বছরের শেষে সোনার দাম প্রায় দেড় লক্ষের কাছেও চলে যেতে পারে।
ভারতের সোনার বাজার বর্তমানে ভাল পরিস্থিতিতে রয়েছে। সেখানে ভারত সোনা কেনার দিকে বাড়তি জোর দিয়েছে। যদি সেদিক থেকে দেখতে হয় তাহলে সোনাকে মজুত করার দিকে ভারত আরও এগিয়ে যাবে। প্রতিদিন যে হারে সোনার দাম বাড়ছে তাতে ভারতীয় অর্থনীতির একটি বিশেষ দিক হিসেবে উঠে আসতে পারে সোনা।

বিগত কয়েক বছরের মার্কিন ডলারের তুলনায় ভারতীয় টাকার দাম অনেকটা কমেছে। ফলে সেখান থেকো সোনার দাম অনেকটা বেড়েছে। তবে যেদিক থেকে ভারত সোনা মজুত করতে শুরু করেছে সেদিন থেকে সোনা নিয়ে খানিকটা হলেও স্বস্তি রয়েছে ভারত। করোনাকালের পর চিন এবং ভারতের মতো জনবহুল দেশে সোনার চাহিদা বেড়েছে। বিশেষত ভারতের মতো দেশে যেখানে সোনাকে একটি বিশেষ সম্পদ হিসেবে দেখা হয়।
বিশ্বের প্রতিটি মানুষ এখন সোনার দিকে ঝুঁকেছেন। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের পর সোনার চাহিদা আরও বেড়েছে। অন্যদিকে মধ্যপ্রাচ্যের বেশ কয়েকটি দেশের মধ্যে বেড়ে চলা টেনশনের জেরে এই হলুদ ধাতু আরও বেশি করে সকলের নজর কেড়েছে।
সোনার দাম প্রতিদিন বাড়ছে। সেখানে ধীরে ধীরে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে সোনার দাম। এরই মধ্যে আমেরিকার একটি প্রতিষ্ঠান জানিয়ে দিলেন ২০২৬ সালে সোনার দাম নাকি ৩ লাখ টাকা পার করবে।
আমেরিকার প্রতিষ্ঠান জে পি মর্গান মনে করছেন ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে সোনার দাম ৪ হাজার মার্কিন ডলারের কাছে চলে যাবে। মার্কিন শুল্ক নীতি, মার্কিন দেশের সঙ্গে চিনের সম্পর্কের অবনতি হলুদ ধাতুর বাজার দরে বিরাট প্রভাব ফেলবে।

চলতি বছরেই সোনার দাম ধীরে ধীরে লাখ টাকার কাছে চলে গিয়েছে। এই দাম বছরের শেষদিকে আরও বাড়বে। ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে দাম প্রায় ৪ হাজার মার্কিন ডলারের কাছে থাকবে। ভারতীয় মুদ্রায় এর দাম হতে পারে প্রায় ৩ লাখ ৪১ হাজার ৫৫৮ টাকার সমান।
জে পি মর্গান জানিয়েছে, আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে শুল্কযুদ্ধ যে আকার ধারণ করেছে, তাতে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে। অর্থনৈতিক মন্দার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না তারা। তারা আরও জানিয়েছে, প্রত্যাশার তুলনায় চাহিদা বেড়ে গেলে, চলতি বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকেই সোনার দাম আউন্স প্রতি ৩৬৭৫ ডলারে পৌঁছে যেতে পারে, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩ লক্ষ ১৪ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: ২ বছরের ফিক্সড ডিপোজিটে সুদ পাবেন ৭ শতাংশের বেশি, কোন কোন ব্যাঙ্ক এই অফার দিচ্ছে দেখে নিন এখনই
২২ এপ্রিল সর্বপ্রথম সোনার দাম প্রতি আউন্সে ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩৫০০ ডলার ছোঁয়, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ২ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা। ভারতে সোনার দাম ইতিমধ্যেই প্রতি ১০ গ্রামে ১ লক্ষের কোটা পেরিয়ে গিয়েছে। যদি দাম আরও বাড়ে তাহলে সোনায় হাত ছোঁয়ানো অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে ভারতীয়দেরও। জে পি মর্গানের-এর পূর্বাভাস বলছে, ২০২৫ সাল শেষ হতে হতেই সোনার দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাবে।
কেন সোনার দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেতে পারে, তার কারণও খোলসা করেছে জে পি মর্গান। তাদের দাবি, সোনায় বিনিয়োগ বাড়ছে যেমন, বাড়ছে সোনার চাহিদাও। আমেরিকার সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কে ইতিমধ্যেই সোনার চাহিদা বেড়ে প্রতি ত্রৈমাসিকে গড়ে ৭১০ টন হয়ে গিয়েছে। তবে যদি চাহিদা হ্রাস পায়, শুল্কনীতি নিয়ে ট্রাম্প যদি একরোখা ভাব ছেড়ে নমনীয় হন, সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে পারে বলে দাবি করা হয়েছে।
