আজকাল ওয়েবডেস্ক: জাতিসংঘ জানিয়েছে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে লা নিনা নামের শীতল আবহাওয়া আবারও ফিরে আসতে পারে। তবে তা হলেও বিশ্বের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।


লা নিনা কী?
লা নিনা হলো প্রশান্ত মহাসাগরের বিষুবীয় মধ্য ও পূর্বাঞ্চলের পৃষ্ঠের জল ঠান্ডা করে দেওয়া একটি প্রাকৃতিক জলবায়ুগত অবস্থা। এটি বাতাসের গতি, চাপ ও বৃষ্টিপাতের ধরণে পরিবর্তন আনে। এটি সাধারণত এর বিপরীত দিক এল নিনো এবং নিরপেক্ষ পরিস্থিতির সাথে পালাবদল করে ঘটে।


জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) জানিয়েছে, মার্চ মাস থেকে এখন পর্যন্ত নিরপেক্ষ পরিস্থিতি বিরাজ করছে, এর আগে কিছু সময়ের জন্য দুর্বল লা নিনা দেখা গিয়েছিল। সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা লা নিনা স্তরে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা ৫৫%। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর সময়কালে এই সম্ভাবনা সামান্য বেড়ে ৬০% হতে পারে। এই সময়ে এল নিনো গঠনের সম্ভাবনা খুবই কম।

আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে মহাকাশের ঝড়, কোন প্রভাব ফেলবে আমাদের গ্রহে জেনেই চিন্তায় গবেষকরা


লা নিনা সাধারণত এল নিনোর বিপরীত জলবায়ু প্রভাব তৈরি করে। এল নিনো মহাসাগরের পৃষ্ঠকে উষ্ণ করে তোলে, ফলে কিছু অঞ্চলে খরা দেখা দেয় এবং অন্যত্র ভারী বৃষ্টিপাত হয়। অন্যদিকে, লা নিনা অনেক স্থানে ভিন্ন ধরণের আবহাওয়া পরিস্থিতি সৃষ্টি করে, বিশেষত উষ্ণমণ্ডলীয় অঞ্চলে।
২০২০-২০২৩ সালের দীর্ঘস্থায়ী লা নিনা ছিল ২১শ শতাব্দীর প্রথম “ট্রিপল-ডিপ” লা নিনা (টানা তিন বছর স্থায়ী) এবং ১৯৫০ সালের পর তৃতীয়। এটি খরা ও বন্যা উভয়কেই তীব্র করেছিল।


তবে, লা নিনার শীতল প্রভাব থাকা সত্ত্বেও তা অস্বাভাবিক উষ্ণ বছরগুলোর ধারা ভাঙতে পারেনি। গত ১০টি বছরই রেকর্ড করা সবচেয়ে উষ্ণ বছরগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এমনকি গত বছর এল নিনো মিলিয়ে যাওয়ার পরও তাপমাত্রা রেকর্ডের কাছাকাছি ছিল। ২০২৪ সাল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উষ্ণ বছর হিসেবে রেকর্ড হয়েছে।


জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপট
WMO জোর দিয়ে বলেছে, লা নিনা ও এল নিনোর মতো প্রাকৃতিক জলবায়ুগত প্রপঞ্চগুলো ঘটলেও সেগুলো আসলে ঘটছে মানুষের সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে। এর ফলে বিশ্বের তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। চরম আবহাওয়া আরও ঘন ঘন ঘটছে। মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও তাপমাত্রার ধরণ বদলে যাচ্ছে।


সর্বশেষ আপডেটে সংস্থাটি জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বরের মধ্যে উত্তর গোলার্ধের বেশিরভাগ এলাকা এবং দক্ষিণ গোলার্ধের বড় অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।


তবে যদি এটি স্থির থাকে তাহলে সেখান থেকে এবারের শীতে এর বিরাট প্রভাব থাকবে। শীত দীর্ঘস্থায়ী থাকার পাশাপাশি এবার শীত আসতে পারে অনেক দ্রুত। পাশাপাশি চলতি বছরে যে হারে বৃষ্টি হচ্ছে তাতে সেখান থেকে এর একটি বিরাট প্রভাব থাকবে।