আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফের আক্রান্ত জাফর এক্সপ্রেস। পাকিস্তানের বালোচিস্তানে প্রদেশে জাফর এক্সপ্রেসে বোমা হামলা। এই ঘটনায় বেশ কয়েক জন যাত্রী আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার পাকিস্তানের সিন্ধু-বালোচিস্তান সীমান্তের কাছে সুলতানকোট এলাকার কাছে কোয়েটাগামী জাফর এক্সপ্রেসকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। এই বছরের মার্চ মাস থেকে এই ট্রেনটিকে লক্ষ্য করে বার বার হামলা চালানো হয়েছে। রেললাইনে পুঁতে রাখা একটি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) দ্বারা এই বিস্ফোরণটি ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। এই বিস্ফোরণের ফলে কোয়েটাগামী যাত্রীবাহী ট্রেনের কমপক্ষে ছ’টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

বালোচ বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং বালোচ রিপাবলিক গার্ডস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। তাদের দাবি, ট্রেনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যরা ভ্রমণ করছিলেন বলেই সেটিকে নিশানা করা হয়েছিল। বালোচ রিপাবলিকান গার্ডস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ট্রেনটিতে এমন এক সময়ে হামলা চালানো হয় যখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্যরা ট্রেনে ভ্রমণ করছিলেন। বিস্ফোরণের ফলে বেশ কয়েকজন সৈন্য নিহত ও আহত হয়েছেন এবং ট্রেনের ছয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “বিআরজি এই হামলার দায় স্বীকার করে এবং ঘোষণা করে যে বালোচিস্তানের স্বাধীনতা না আসা পর্যন্ত এই ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

আরও পড়ুন: অট্টালিকার অন্দরে যৌনতার 'আস্তানা'! সাউন্ডপ্রুফ ঘরেই চলত নৃশংস 'খেলা'!

উদ্ধারকারী দল এবং নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে এবং উদ্ধার অভিযান চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা বিস্ফোরণস্থলের ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে যে এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

কোয়েটা এবং পেশোয়ারের মধ্যে চলাচলকারী জাফর এক্সপ্রেসকে গত কয়েক মাসে বারবার নিশানা করা হয়েছে। যার মধ্যে মার্চ মাসে হওয়া হামলাটি ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। ১১ মার্চ, বোলান এলাকায় কোয়েটা থেকে পেশোয়ার যাওয়ার সময় জাফর এক্সপ্রেসটি ছিনতাই করা হয়। এই ঘটনায় ২১ জন যাত্রী এবং চারজন নিরাপত্তাকর্মী নিহত হন। নিরাপত্তা বাহিনী ট্রেনে হামলায় জড়িত ৩৩ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে।

এছাড়াও, ২৪ সেপ্টেম্বর বালোচিস্তানের মাস্তুংয়ের স্পিজেন্ড এলাকায় একই ট্রেনে বোমা হামলায় নারী ও শিশুসহ কমপক্ষে এক ডজন মানুষ আহত হন। ১০ আগস্ট মাস্তুং জেলায় পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেসের ছয়টি কোচ একটি ইম্প্রোভাইজড বিস্ফোরক ডিভাইস লাইনচ্যুত করলে চারজন আহত হন। ৭ আগস্ট বালোচিস্তানের সিবি রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ট্রেনটি একটি দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পায়, যেখানে যাত্রীবাহী ট্রেনটি চলে যাওয়ার ঠিক পরেই ট্র্যাকের কাছে পুঁতে রাখা একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। 

অপর একটি ঘটনায়, ৪ আগস্ট, কোলপুরের কাছে বন্দুকধারীরা পাইলট ইঞ্জিনে পাঁচটি গুলি ছোড়ে। বিচ্ছিন্নতাবাদী বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) পরবর্তীতে হামলার দায় স্বীকার করে। ২৮শে জুলাই সিন্ধু প্রদেশের সুক্কুরে একই ট্রেনের লাইনচ্যুতির ঘটনাটি প্রাথমিকভাবে একটি বিস্ফোরণের কারণে ঘটেছিল বলে মনে করা হলেও পরে রেলপথ মন্ত্রক জানিয়েছে যে এটি একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে ঘটেছে।

জুন মাসে, রেললাইনে লাগানো একটি দূর থেকে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরক যন্ত্র বিস্ফোরিত হয়। যার ফলে জ্যাকোবাবাদে জাফর এক্সপ্রেসের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ধারণা করা হয় যে বালোচ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলি এই ধরনের হামলা চালিয়েছিল।