আজকাল ওয়েবডেস্ক: রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ যদি ৭.০ mg/dL হয়, তাহলে তাকে এতদিন ‘স্বাভাবিক’ বলে মনে করা হত। কিন্তু সাম্প্রতিক গবেষণা চমকে দেওয়ার মতো তথ্য দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ৫.৫ mg/dL এর বেশি ইউরিক অ্যাসিড হৃদযন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে।
এতদিন ইউরিক অ্যাসিডকে মূলত আর্থ্রাইটিস বা গাঁটে ব্যথার মূল কারণ হিসেবে ধরা হত। কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে, এটি হার্ট অ্যাটাক, হঠাৎ কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট ও মেটাবলিক সিনড্রোমের নীরব কারণ হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে ধমনীতে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস ও ইনফ্লামেশন বেড়ে যায়। এতে ধমনীগুলো ধীরে ধীরে শক্ত হয়ে যায়, সংকুচিত হতে থাকে—যা সিটি স্ক্যানেও ধরা পড়ে না। এই অবস্থায় ধমনী ফেটে গিয়ে রক্ত জমাট বাঁধে এবং রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়—ফলে ঘটে হার্ট অ্যাটাক।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা ৫.৫ ছাড়িয়ে গেলেই তা রক্তনালীর ক্ষতি শুরু করে। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা দীর্ঘদিন চলে এবং যখন ধরা পড়ে, তখন অনেক দেরি হয়ে যায়।
আমাদের খাওয়ার প্রোটিন ভেঙে শরীরে পিউরিন তৈরি হয়। এই পিউরিন ভেঙে তৈরি হয় ইউরিক অ্যাসিড। সাধারণত কিডনি এই অ্যাসিড শরীর থেকে বের করে দেয়। কিন্তু মাত্রা বেশি হলে কিডনি তা সামাল দিতে পারে না এবং অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীরে জমা হতে থাকে।
এই অবস্থাকে বলা হয় হাইপারইউরিসেমিয়া, যার প্রভাবে দেখা দিতে পারে গাঁটে ব্যথা, কিডনি স্টোন ও এখন জানা যাচ্ছে, হৃদরোগও।
এর থেকে বাঁচতে হলে কী করা দরকার:
সকালে খালি পেটে এক গ্লাস সাধারণ জল পান করুন
লেবু ও আপেল সিডার ভিনিগার এড়িয়ে চলুন, এগুলো ইউরিক অ্যাসিড বাড়ায়
দিনে ৮–১০ গ্লাস জল পান করুন
খাবারের পরে হাঁটা অভ্যাস করুন
কুমড়োর বীজ, বাদাম খাদ্যতালিকায় রাখুন
লবণ কমান, পরিবর্তে নারকেল জল ও কলা খেতে পারেন
রাতে ঘুমানোর আগে ১০ মিনিট ধ্যান করুন
যদি আপনার রিপোর্টে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা ৫.৫ বা তার বেশি হয়, তবে ‘স্বাভাবিক’ মনে করে অবহেলা না করে ডাক্তার দেখানো জরুরি। কারণ এই মাত্রাও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে, বিশেষ করে যদি আগে থেকেই হৃদরোগ বা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি থাকে।
