আজকাল ওয়েবডেস্ক:  অতিরিক্ত গরম বার্ধক্যের সরাসরি কারণ না হলেও, এটি অকাল বার্ধক্যের দিকে পরিচালিত করতে পারে। অতিরিক্ত গরম, বিশেষ করে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির সংস্পর্শে আসলে, ত্বকের ক্ষতি করতে পারে এবং বলিরেখা, বয়সের দাগ, শুষ্কতা, এবং ত্বকের স্বর কমে যাওয়ার মতো বার্ধক্যের লক্ষণগুলি দ্রুত প্রকাশ করতে পারে। 


শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে হাইপারথার্মিয়া বা তাপমাত্রাজনিত অসুস্থতা হতে পারে, যা হিটস্ট্রোকের মতো মারাত্মক হতে পারে। হিটস্ট্রোক হলে শরীরের তাপমাত্রা 40 ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়ে যায় এবং এটি একটি জরুরি অবস্থা। এটি ত্বকের ক্ষতি করে এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গেরও ক্ষতি করতে পারে।


ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ২০২৩ সালে অতিরিক্ত গরমে ৪৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। মহাদেশটির দক্ষিণ অঞ্চলের দেশগুলোতে মৃত্যুহার বেশি ছিল। স্পেনের বার্সেলোনা ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল হেলথ এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।


২০২৪ সাল ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বে অব্যাহতভাবে উষ্ণতা বাড়ছে। ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে উষ্ণতা বাড়ছে দ্রুত। এতে করে মহাদেশটিতে গরম–সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকিও বাড়ছে।


আইএসগ্লোবালের তথ্য মতে, ২০২২ সালে ইউরোপে অতিরিক্ত গরমের কারণে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিলেন। সেই তুলনায় ২০২৩ সালে গরমে কম মানুষ মারা গেছেন। গত ২০ বছরে উষ্ণতা মোকাবিলায় ইউরোপে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ২০২৩ সালে মহাদেশটিতে গরমে আরও ৮০ শতাংশ বেশি মানুষ মারা যেতেন। গত দুই দশকে ইউরোপে উষ্ণতার পূর্বাভাস ও উষ্ণতা–সম্পর্কিত স্বাস্থ্যব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।


আইএসগ্লোবালের প্রধান গবেষক এলিসা গ্যালো বলেন, ‘চলতি শতাব্দীতে উচ্চ তাপমাত্রা মোকাবিলায় আমাদের সমাজে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে গত কয়েক গ্রীষ্মে গরম–সম্পর্কিত স্বাস্থ্যঝুঁকি ও মৃত্যুর হার কমেছে। এসব পদক্ষেপের কারণে বয়স্ক মানুষেরা বেশি উপকৃত হয়েছেন।’
আইএসগ্লোবালের গবেষণায় ইউরোপের ৩৫টি দেশের তথ্য ব্যবহার করা হয়েছে। এসব দেশের মধ্যে গ্রিস, বুলগেরিয়া, ইতালি ও স্পেনে গরম–সংশ্লিষ্ট মৃত্যুর ঘটনা বেশি।

আরও পড়ুন: গুগল ম্যাপ থেকে সরছে এই ফিচার, কতটা ভোগান্তি হবে সকলের


আমরা যেখানেই থাকি না কেন তুষার-ঝড়ই হোক কিংবা প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যেই হোক আমাদের শরীর সবসময়ই তার তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে রাখতে চেষ্টা করে। কারণ এই তাপমাত্রার মধ্যেই আমাদের দেহ ঠিকমত কাজ করতে পারে। কিন্তু আবহাওয়া যখন গরম হয়ে যায়, তখন দেহের ভেতরের তাপমাত্রা কমিয়ে রাখার জন্য আমাদের শরীরকে অনেক কাজ করতে হয়। শরীর থেকে তাপ ছেড়ে দেওয়ার জন্য চামড়ার কাছাকাছি যেসব রক্তনালী আছে সেগুলো খুলে যায় এবং দেহে ঘাম হতে শুরু করে। ওই ঘাম যখন জলীয়বাষ্প হয়ে উড়ে যায়, তখন নাটকীয়ভাবে আশপাশের তাপমাত্রা আরো বেড়ে যায়, কিন্তু এর ফলে ত্বক ঠাণ্ডা হয়ে আসে।


তবে দেহ যদি অতিরিক্ত তাপ পায় তখন তার মধ্যে সমস্ত এনার্জি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। ফলে সেখান থেকে দ্রুত বার্ধক্য চলে আসে। দেহের মধ্যে নানা ধরণের সমস্যা তৈরি হতে শুরু করে। ফলে সেদিক থেকে দেখতে হলে গরমকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলাই ভাল। এই কারণে যারা শীতপ্রধান দেশে থাকেন তারা অনেক বেশি বয়সেও সতেজ থাকেন কারণ তাদের দেহের এনার্জি সঠিক থাকে সেটি সহজে নষ্ট হয় না।