বর্ষীয়ান বলি অভিনেতা ধর্মেন্দ্রের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা চলচ্চিত্র জগৎ। ৮৯ বছর বয়সে তাঁর চলে যাওয়া শুধু একটি যুগের সমাপ্তি নয়, বহু সম্পর্ক, বহু অনুভূতিরও নীরব ইতি। ধর্মেন্দ্রের স্মৃতিতে মুম্বইয়ের একটি পাঁচ তারা হোটেলে বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করেন তাঁর বড় ছেলে সানি দেওল ও ছোট ছেলে ববি দেওল। ঠিক সেই দিনই, নিজের বাড়িতে গীতা পাঠের আয়োজন করেন হেমা মালিনী। তবে তিনি সানি-ববির হোটেলের প্রার্থনা সভায় উপস্থিত ছিলেন না। কয়েক দিন পর দিল্লিতে আলাদা করে একটি প্রার্থনা সভার আয়োজন করেন হেমা, সেখানে আবার সানি ও ববির অনুপস্থিতি চোখে পড়ে সবার।
এই পুরো বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি এক আলোচনায় মুখ খুলেছেন বিতর্কিত তথা জনপ্রিয় লেখিকা শোভা দে। তাঁর মতে, ধর্মেন্দ্রের প্রথম স্ত্রী প্রকাশ কৌরের পরিবারের তরফে হেমা মালিনীকে কার্যত ‘বাইরে’ রেখে দেওয়া হয়েছিল! শোভা দে-র কথায়, “এটা নিশ্চয়ই ভীষণ কঠিন ও যন্ত্রণাদায়ক সিদ্ধান্ত ছিল। যে পরিবারে তিনি নিজের জীবনের ৪৫ বছর কাটিয়েছেন, যাকে তিনি আগলে রেখেছেন, লালন করেছেন, সেই পরিবারের কোনও আনুষ্ঠানিকতায় তাঁকে একেবারে বাদ দেওয়া… এটা খুব গভীর আঘাতের।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এই সম্পর্ক থেকে তাঁর দুই মেয়ে রয়েছে। কষ্ট যে হয়েছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্তু সেই যন্ত্রণা তিনি নিজের ব্যক্তিগত পরিসরেই সামলে নিয়েছেন। আর যখন হেমা মালিনী প্রকাশ্যে কোনও অনুষ্ঠান করেছেন, সেটা করেছেন অসাধারণ মর্যাদার সঙ্গে। শুধু নিজের জন্য নয়, যাঁকে তিনি হারিয়েছেন, তাঁর সম্মান রক্ষার জন্যও।”
শোভা দে মনে করেন, হেমা চাইলে সহজেই কিন্তু ধর্মেন্দ্র সম্পর্কিত সেই আবেগঘন মুহূর্তগুলিকে নিজের দিকে টেনে নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি ‘এক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার’ প্রতিযোগিতার বদলে মর্যাদাকেই বেছে নিয়েছেন। শোভা বলেন, “হেমা নিজেই একজন বিশাল ব্যক্তিত্ব। তা সত্ত্বেও তিনি প্রকাশ্য প্রদর্শনের পথে না গিয়ে যে সংযম ও সম্মান দেখিয়েছেন, সেটাই তাঁর চরিত্রের প্রকৃত পরিচয়।”
তিনি আরও বলেন, “ধরমজি চলে যাওয়ার পর হেমা চাইলে সংবাদমাধ্যমকে দিয়ে প্রতিটি চোখের জল, প্রতিটি শ্বাসকষ্টের মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করাতে পারতেন। বলাই বাহুল্য, মিডিয়াও সেটাই চাইত। কিন্তু তাতে তাঁর ব্যক্তিগত মর্যাদা ভেঙে পড়ত, যেটা তাঁর কাছে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।” কথাশেষে শোভা দে বলেন, “ধর্মেন্দ্রের দু’টি সমান্তরাল পরিবার ছিল। একদিকে প্রথম পরিবার, অন্যদিকে হেমা। কিন্তু কোনও সময়েই তাঁরা দু'জনে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একে অপরকে প্রকাশ্যে অমর্যাদা করেননি। তাই আমার মনে হয়, এক্ষেত্রে হেমা নিজের পথ বেছে নিয়েছেন, ঠিক যেমন হেমা মালিনীই বেছে নেন।”
