আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইলন মাস্ক এবং তাঁর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংস্থা আবারও প্রযুক্তি দুনিয়ায় আলোড়ন তুলতে চলেছে। গ্রক ৪ ইতিমধ্যেই শীর্ষস্থানীয় লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এবার মাস্কের নজর পড়েছে নতুন এক উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনায়—‘ম্যাক্রোহার্ড’ । এই নতুন উদ্যোগটিকে একেবারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা চালিত সফটওয়্যার কোম্পানি হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে, যা সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে মাইক্রোসফটের সঙ্গে। সম্প্রতি জানা গেছে, এই স্পিন-অফ প্রকল্পের জন্য কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।


সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইউহুয়াই উ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম X-এ জানিয়েছেন, তাঁরা নতুন একটি দল গঠন করছেন, যারা “কম্পিউটার কন্ট্রোল এজেন্ট” তৈরি করবে। এই দলের প্রধান কাজ হবে শুধু গ্রক ৫-এর উন্নয়নই নয়, বরং ম্যাক্রোহার্ডকেও সামনে এগিয়ে নেওয়া। তাঁর দাবি, চলতি বছরের মধ্যেই প্রকল্প দুটির বড় অংশ শেষ হবে। শিগগিরই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলেও তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন।

আরও পড়ুন:  সোনার প্রতি ভারতের অটুট টান, উৎসবের সিজনেই হবে সোনায় শ্রীবৃদ্ধি


এর আগে ইলন মাস্ক ঘোষণা করেছিলেন, গ্রক ৫-এর ট্রেনিং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শুরু হবে এবং এটি ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ বাজারে আনা হবে। নতুন এটি রিপোস্ট করেন মাস্ক নিজেও। সেখানে তিনি প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের নতুন দলে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে লেখেন—“ম্যাক্রোহার্ড, এই এআই সফটওয়্যার কোম্পানি তৈরি করতে সাহায্য করুন!”


মাস্ক প্রায়ই তাঁর X অ্যাকাউন্টে নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্য শেয়ার করেন। ম্যাক্রোহার্ডের জন্য আলাদা দল গঠন ছাড়াও, xAI কাজ করছে এআই-নেটিভ নলেজ বেস ও সার্চ ইঞ্জিন তৈরির প্রকল্পেও। সব মিলিয়ে মাস্কের এআই সাম্রাজ্য দিন দিন আরও বিস্তৃত হচ্ছে।


ম্যাক্রোহার্ড মূলত মাইক্রোসফটকে কেন্দ্র করে এক প্রকার কৌতুক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রতীক। নামটিও রাখা হয়েছে মাইক্রোসফটকে ব্যঙ্গ করে—‘Micro’ বদলে ‘Macro’ এবং ‘soft’ বদলে ‘hard’। মাস্কের দাবি, ম্যাক্রোহার্ড হবে সম্পূর্ণরূপে এআই-নির্ভর সফটওয়্যার কোম্পানি। তাঁর মতে, মাইক্রোসফটের মতো সফটওয়্যার জায়ান্টকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে পুনর্গঠন করা সম্ভব, কারণ এসব প্রতিষ্ঠান কোনো ভৌত হার্ডওয়্যার তৈরি করে না।


প্রকল্পের মূল কাঠামোতে থাকবে একাধিক এআই এজেন্ট, যারা একসঙ্গে কাজ করে উৎপাদনশীলতা সর্বাধিক করবে। তবে মাস্কের জন্য মাইক্রোসফটের মতো প্রতিষ্ঠানের আধিপত্য ভাঙা সহজ হবে না। উইন্ডোজ ও অফিস স্যুট থেকে প্রতিবছর শত শত বিলিয়ন ডলার আয় করে রেডমন্ড-ভিত্তিক এই কোম্পানি।


অন্যদিকে, মাইক্রোসফটও বসে নেই। সম্প্রতি তারা ওপেনএআই-এর সঙ্গে তাদের অংশীদারিত্ব নতুনভাবে সাজিয়েছে এবং নিজস্ব এআই মডেল তৈরি করছে। পাশাপাশি, অফিস ৩৬৫ ব্যবহারকারীদের জন্য ‘কোপাইলট’ সুবিধাও আরও সম্প্রসারিত করেছে।
সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে, একদিকে ইলন মাস্ক তাঁর ম্যাক্রোহার্ডের মাধ্যমে সফটওয়্যার জগতে এআই-নির্ভর বিপ্লব ঘটাতে চাইছেন, অন্যদিকে মাইক্রোসফটও নিজেদের এআই শক্তিকে ক্রমাগত বৃদ্ধি করছে। ফলে আগামীর প্রযুক্তি দুনিয়া হয়ে উঠতে চলেছে এক রোমাঞ্চকর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মঞ্চ।