আজকাল ওয়েবডেস্ক: দীর্ঘ পথ ভ্রমণের সময় প্রায়শই বেশিরভাগ মানুষই তাদের গাড়ির ট্যাঙ্ক ভরতে ভুলে যায়। শহরে রাস্তায় এটা তেমন কোনও বড় সমস্য়া নয়। কিন্তু হাইওয়ে বা এক্সপ্রেসওয়েতে এই সমস্যাই রীতিমত বেগ দেয়। শুরু হয় ঝামেলা। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ বুঝতে পারে না তাদের কী করতে হবে।

হাইওয়ে বা এক্সপ্রেসওয়েতে হঠাৎ করে গাড়ির পেট্রোল শেষ হয়ে গেলে, এমন পরিস্থিতিতে কেউ কী করতে পারে? এইসব রাস্তায় সাধারণত কম দূরত্বে, কাছাকাছি কোনও পেট্রোল পাম্প থাকে না। এমন কোনও পরিচিত ব্যক্তিও থাকে না যে, তিনি পেট্রোল আনতে ফোন করতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে বেশিরভাগই সাহায্যের জন্য অপরিচিত ব্যক্তির উপর নির্ভর করেন অথবা যানবাহন ছেড়ে পায়ে হেঁটে পেট্রোল খুঁজতে বেরিয়ে পড়েন। কিন্তু এটা নিরাপদ বা প্রয়োজনীয় নয়। সময় বদলেছে। ফলে হাইওয়েতে আটকে থাকা যানবাহনের জন্য পেট্রোল বা ডিজেল পাওয়া আগের চেয়ে সহজ হয়ে গিয়েছে।

সরকার এবং পেট্রোল পাম্প কোম্পানিগুলি যৌথভাবে এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করেছে যে, হাইওয়ে বা এক্সপ্রেসওয়েতে- যেখানেই গাড়ি প্রেটোলের অবাবে আটকে থাকবে সেখানেই তেল এসে হাজির হবে! অর্থাৎ সরাসরি গাড়ির অবস্থানে পেট্রোল চলে আসবে। ওই দিশাহারা পরিস্থিতিতে গাড়ির মালিক বা চালককে অন্য কোরোর থেকে সাহায্য চাইতে যেতে হবে না। বরং, সাহায্য নিজেই কাছে এসে ধরা দেবে। 
আপনাদের জানিয়ে রাখি যে, ভারতের জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষ টোল প্লাজা এবং এক্সপ্রেসওয়েতে জরুরি হেল্পলাইন নম্বর জারি করেছে। এছাড়াও, ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের মতো কোম্পানিগুলির জ্বালানি সরবরাহ পরিষেবাও এখন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে।

আপনি ১০৩৩ নম্বরে কল করে জাতীয় মহাসড়ক হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে পারেন। এই নম্বরটি সড়ক দুর্ঘটনা, চিকিৎসা সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা বা জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক সাহায্য করে থাকে। কল করার সময়, শুধু গাড়ির নম্বর প্লেট এবং সঠিক অবস্থান উল্লেখ করতে হবে। যাতে সাহায্যকারী দলটি দ্রুত পৌঁছাতে পারে। 

এছাড়াও, আপনি পেট্রোল হেল্পলাইন নম্বর ৮৫৭৭০৫১০০০, ৭২৩৭৯৯৯৯৪৪-এ কল করেও পেট্রোল অর্ডার করা যেতে পারে। অতএব, এমন পরিস্থিতিতে আটকে গেলে ঝামেলা এড়াতে, নম্বরগুলি আগে থেকেই আপনার মোবাইলে সংরক্ষণ করুন।

আরও পড়ুন-  রাতের অন্ধকারে ব্যান্ডেল স্টেশন এলাকার দোকানপাট ভাঙল রেল, রুটিরুজি হারিয়ে হাহাকার ব্যবসায়ীদের

হাইওয়ে বা এক্সপ্রেসওয়েতে টোল ব্যবস্থা:
গত ১লা মে থেকে ভ্রমণ আরও সহজ হয়েছে। কারণ কেন্দ্রীয় সরকার একটি নতুন জিপিএস-ভিত্তিক টোল সংগ্রহ ব্যবস্থা চালু করেছে। ভারতের জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ (NHAI) ফাস্ট্যাগের বদলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টোল সংগ্রহ করছে। ফলে চালু হতে হয়েছে আরও উন্নত স্যাটেলাইট ভিত্তিক জিএনএসএস সিস্টেম বা গ্লোবাল নেভিগেশন স্যাটেলাইট সিস্টেম। জাতীয় সড়কে যানবাহন কতদূর চলছে তার উপর ভিত্তি গণনা করা হবে টোল।

জিপিএস ভিত্তিক জিএনএসএস সিস্টেম কীভাবে টোল সংগ্রহ হয়?
ফাস্ট্যাগের মাধ্যমে টোল লেনদেনের গতি বাড়ানো হলেও, টোল প্লাজায় প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে বিলম্ব এবং দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়। তাই গতবছরই রাজ্যসভায় তথ্য দেওয়ার সময় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী নীতীন গডকড়ী জানিয়েছিলেন যে, ভারতের কিছু নির্বাচিত জাতীয় সড়কে স্যাটেলাইট ভিত্তিক টোল সংগ্রহের প্রক্রিয়া চালু করা হবে। 

এই সিস্টেম সরাসরি স্যাটেলাইটের সঙ্গে সংযুক্ত। এর জন্য আলাদা টোল বুথ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে মহাসড়কে চলাচলকারী সব যানবাহনের তথ্য আগে থেকেই সংগ্রহ করা হয়। কোন যানবাহন কত পথ চলেছে তার তথ্যও সংগ্রহ করবে এই স্যাটেলাইট। জিএনএসএস সিস্টেমের মাধ্যমে অনলাইনে টোল সংগ্রহ করা হচ্ছে।