আজকাল ওয়েবডেস্ক: সুপ্রিম কোর্ট গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে, ২০২৫ সালের ২২ মার্চ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাইকোর্টে মোট ৭,২৪,১৯২টি অপরাধমূলক আপিল বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে। এই আপিলগুলির মধ্যে রয়েছে দণ্ডাদেশ ও খালাসের বিরুদ্ধে করা আবেদন। আদালত জানিয়েছে, এই বিপুল সংখ্যক বিচারাধীন মামলার ফলে দেশের বিচারব্যবস্থা চরম চাপের মুখে পড়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অভয় এস. ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঁইয়ার একটি বেঞ্চ এক সুয়োমোটো (স্বপ্রণোদিত) মামলায় এই তথ্য প্রকাশ করেন। মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা অপরাধমূলক আপিলের ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের জামিন দেওয়ার নীতিগত দিক নিয়ে আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত হস্তক্ষেপের অংশ ছিল।

কোন হাইকোর্টে কত মামলা?

এলাহাবাদ হাইকোর্ট: সর্বাধিক ২.৭৭ লক্ষ মামলা বিচারাধীন।

মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট: ১.১৫ লক্ষ মামলা।

পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট: ৭৯,৩২৬টি মামলা।

রাজস্থান হাইকোর্ট: ৫৬,৪৫৫টি মামলা।

বম্বে হাইকোর্ট: ২৮,২৫৭টি মামলা।

পটনা হাইকোর্ট: ৪৪,৬৬৪টি মামলা।

ছত্তিশগড় হাইকোর্ট: ১৮,০০০-রও বেশি মামলা।


সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাব ও নির্দেশিকা:

সুপ্রিম কোর্ট বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবের প্রশংসা করে এবং হাইকোর্টগুলিকে তা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানায়:

মামলার কেস রেকর্ড ডিজিটালাইজেশন করা।

ট্রায়াল কোর্টের নথিপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে তলব করার জন্য নিয়ম সংশোধন।

SUAS নামক AI অনুবাদ টুল ব্যবহার করে আদালতের নথি অনুবাদ।

প্রতিটি হাইকোর্টে রেজিস্ট্রার (কোর্ট অ্যান্ড কেস ম্যানেজমেন্ট) পদ সৃষ্টি।

একাধিক বেঞ্চবিশিষ্ট হাইকোর্টে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে কম মামলাযুক্ত বেঞ্চগুলিকে অতিরিক্ত মামলাযুক্ত বেঞ্চকে সাহায্য করতে বলা হয়েছে।


উপস্থাপিত পরামর্শদাতারা:

সিনিয়র অ্যাডভোকেট লিজ ম্যাথিউ ও গৌরব আগারওয়াল, যাঁরা এই মামলার অ্যামিকাস কিউরি, এবং Supreme Court Committee for Model Case Flow Management Rules-এর দেওয়া সুপারিশগুলিও আদালত গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট আশা করছে যে, বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও গতি ফিরিয়ে আনা যাবে এবং বছরের পর বছর ধরে ঝুলে থাকা হাজার হাজার অপরাধমূলক আপিল দ্রুত নিষ্পত্তির পথে এগোবে।