আজকাল ওয়েবডেস্ক: শনিবার সিমলার একটি বেসরকারি স্কুলের তিনজন পড়ুয়া নিখোঁজ হওয়ার পর রবিবার সিমলা জেলার কোটখাই এলাকায় অবশেষে তাঁদের সুস্থ অবস্থায় খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। খবর অনুযায়ী, ছাত্ররা সবাই ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া। স্কুলের রুটিন অনুযায়ী সপ্তাহান্তের ভ্রমণের সময় তাঁরা নিখোঁজ হয়েছিলেন। এই ঘটনার পর পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা মিলে ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালান।

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার দুপুর ১২টা ১০ মিনিট নাগাদ ছাত্ররা স্কুল ক্যাম্পাস থেকে একটি অফিসিয়াল গেট পাস নিয়ে মল রোডে ঘুরতে যান। জানা গিয়েছে এটি স্কুলেরই পূর্বনির্ধারিত পরিকল্পনার একটি অংশ ছিল। অন্যান্য ছাত্রদের সঙ্গে তাঁদেরও বিকেল ৫টার মধ্যে হোস্টেলে ফিরে আসার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে তাঁরা ফিরে না আসায় স্কুল কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেয়।

স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে নিউ সিমলা থানা একটি অপহরণের মামলা দায়ের করে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ তল্লাশি চালায়। বিভিন্ন এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে ছাত্রদের গতিবিধি জানার চেষ্টা করে। পরে জানা গিয়েছে, ছাত্ররা শহরের অদূরে কোটখাই এলাকায় পাওয়া গিয়েছে। এটি সিমলা শহর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি গ্রামীণ অঞ্চল। তবে কীভাবে তাঁরা সেখানে পৌঁছল, সে বিষয়ে এখনও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। এর পেছনের কারণ জানতে এখনও তদন্ত জারি রয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক অজ্ঞাত ব্যক্তি অনলাইন ট্রেডিংয়ে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে মানসিক চাপে ছিলেন। এই কারণেই তিনি এমন একটি অপরাধমূলক কাজ করে বসেন। জানা গিয়েছে ওই ব্যক্তি ওই একই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ছিলেন। তাই তিনি স্কুল ভ্রমণে গেছিলেন। স্কুল সংক্রান্ত অনেক কিছুই তাঁর জানা ছিল। তিনিই পড়ুয়াদের গাড়িতে তুলে নিয়ে যান। নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যবহার করেন এবং কোটখাই এলাকার দিকে নিয়ে যান। স্থানীয় পুলিশ সূত্রে খবর, শিশুদের কোনওরকম ক্ষতি হয়নি। বর্তমানে তাঁরা সকলেই নিরাপদে রয়েছেন। তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরও জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই শনিবার নিউ সিমলা থানায় ভারতীয় সংবিধানের নতুন দণ্ডবিধি (BNS)-এর ধারা ১৩৭বি অনুযায়ী (অপ্রাপ্তবয়স্ক অপহরণ) একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এহেন ঘটনার পেছনে অন্য কোনও কারণ ছিল কিনা তা পুঙ্খনুপুঙ্খ তদন্ত চলছে। 

প্রসঙ্গত, ভয়াবহ দুর্যোগ সিমলায়। সম্প্রতি সিমলায় সড়ক নির্মাণকাজ চলাকালীন একটি বুলডোজার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। সূত্রে জানা গিয়েছে, হিমাচল প্রদেশের জাতীয় সড়ক ৫-এর জাবলি এলাকায় পাহাড় কেটে রাস্তা খোলার কাজ চলছিল। এমন সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনাটির একটি ভিডিও প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায়, একটি জেসিবি মেশিন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড় থেকে নিচে গড়িয়ে পড়ছে। পাহাড়ের ওপর থেকে আচমকা পাথর গড়িয়ে পড়ায় ভারসাম্য হারিয়ে মেশিনটি প্রায় ৩০০ মিটার নিচে খাদে পড়ে যায়।

সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ঘটনার পরপরই এক ব্যক্তি পাহাড়ি ঢালে নামতে শুরু করেন। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে আটকে থাকা চালকের কাছে কোনওরকমে পৌঁছান তিনি। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন চালক। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে শেষমেশ বাঁচানো সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এমন সময় ঘটে, যখন হিমাচল প্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডে প্রবল বৃষ্টিপাতে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ 'এইটুকু অর্থে কী হবে?' উত্তরাখণ্ড সরকারের ভূমিকা নিয়ে পশ্ন, বিক্ষোভে ফুঁসে উঠলেন বাসিন্দারা

রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বন্যা, ভূমিধস এবং সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর ইতিমধ্যেই পাওয়া গিয়েছে। হিমাচল প্রদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (SDMA) জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ১৭৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১০১ জন প্রাণ হারিয়েছেন ভূমিধস, আকস্মিক বন্যা ও বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে, আর ৭৮ জনের মৃত্যু হয়েছে দুর্গম সড়কে দুর্ঘটনার কারণে।