আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন তেলেঙ্গানা। জেলায় জেলায় জল জমে বিধ্বস্ত। এই পরিস্থিতিতে উচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে রাজ্য জুড়ে। বুধবার তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি সরকারি সংস্থার কর্মী ও তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের উদ্দেশে নির্দেশ দিলেন, 'সকলেই বাড়ি থেকে কাজ করুন।'

জানা গেছে, তেলেঙ্গানায় অতি প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। ৭২ ঘণ্টা রাজ্য জুড়ে চরম সতর্কতা জারি হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে দুর্ঘটনায় যাতে কারও বিপত্তি না ঘটে, সেই কারণেই উদ্ধারকারী দল ও প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি।

আরও পড়ুন: ৩০ বছরের বন্ধুত্ব, একরাতেই শেষ! যৌনতার টানে নৃশংস হত্যাকাণ্ড, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ঘিরে রক্তারক্তি কাণ্ড এই রাজ্যে

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতেই কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি নির্দেশ দিয়েছেন, দ্রুত নিচু এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে হবে‌। অতি প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন হতে পারে নিচু এলাকাগুলি।‌ পাশাপাশি বন্যার আশঙ্কাও রয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসন ও উদ্ধারকারী দলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। 

মৌসম ভবন সূত্রে খবর, আজ, বুধবার ১৩ আগস্ট থেকে শুক্রবার ১৫ আগস্ট পর্যন্ত তেলেঙ্গানায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিশেষত হনুমানকুন্ড, জনগাঁও, মেদাক, ওয়ারেঙ্গল, সাঙ্গারেড্ডি ও ভিকারাবাদে অতি প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা বেশি রয়েছে। স্থানীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, মেডচল ও সাইবেরাবাদে আগামী ৭২ ঘণ্টায় ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভাসতে পারে শহরের সব রাস্তাঘাট। এই পরিস্থিতিতে যান চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। 

মুখ্যমন্ত্রী রেবন্ত রেড্ডি গতকাল বৈঠকের পর জানিয়েছেন, এই জরুরি পরিস্থিতিতে কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী তিন বৃষ্টি বিধ্বস্ত এলাকাগুলি সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধ রাখা হতে পারে। পাশাপাশি যানজটের সমস্যা এড়াতে হায়দরাবাদের সমস্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। 

ওই বৈঠকের পর আরও দুর্যোগের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। মেঘ ভাঙা বৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে। অতীতে খাম্মামে দুই ঘণ্টায় ৪২ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। সেই পরিস্থিতিতে মাথায় রেখেই আগাম সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। অস্থায়ী শিবির খোলার ব্যবস্থা করা হবে। বন্যা বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের প্রয়োজনীয় সামগ্রী, ত্রাণ বিতরণ করার বিষয়েও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। 

গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ওয়ারেঙ্গলে। বন্যায় এই শহরে এক ৮০ বছরের বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। বন্যার জল আচমকা ডুকে গিয়েছিল বাড়িতে। সেই সময় বাড়ির মেঝেতে শুয়েছিলেন ওই বৃদ্ধা। জলমগ্ন পরিস্থিতিতে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। ভারী বৃষ্টির জেরেই ইতিমধ্যেই হায়দরাবাদের মুসি নদীর জলস্তর বেড়েছে। নদীর আশেপাশের এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ওয়ারেঙ্গলে ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।‌ জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নিচু এলাকাগুলি ইতিমধ্যেই জলমগ্ন। সাই গণেশ কলোনি, গিরি প্রসাদ কলোনি, লেনিন নগরে জল জমে ভোগান্তি আরও বাড়ছে। তড়িঘড়ি করে কমপক্ষে ছয়টি অস্থায়ী শিবির খোলা হয়েছে। মঙ্গলবার সেখানে বহু পরিবারকে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।