আজকাল ওয়েবডেস্ক: ত্রিপুরা রাজ্য সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে একাধিক যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আগরতলার ওমেন্স কলেজকে একটি পূর্ণাঙ্গ ওমেন্স ইউনিভার্সিটি হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) এর ব্যবহার শুরু হয়েছে, যা ডিজিটাল যুগে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

রাজ্যে বর্তমানে ৩০টি স্কুলে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ২৬৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪৪টি স্কুলে নতুন ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৫৩ কোটি টাকা। পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষার মানোন্নয়নে রাজ্য সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ মানিক সাহা।

তিনি জানান, এবছর মাধ্যমিকে ৩৪৫টি স্কুলে ১০০% পাশ করেছে, যেখানে মোট পাশের হার ৮৬.৫৩%। উচ্চমাধ্যমিকে ৩৯টি স্কুলে ১০০% পাশ, এবং মোট পাশের হার ৭৯.২৯%। রাজ্যের স্কুলগুলিতে ইতিমধ্যে চালু হয়েছে স্মার্ট ক্লাস, থিঙ্কারিং ল্যাব ও এনসিটি ল্যাব। শিক্ষার্থীদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে যোগ চর্চার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী, বলেন—"যোগার মাধ্যমে নিজেকে চেনা যায়, জানা যায়।"

ছাত্রীদের শিক্ষা-সুবিধা নিশ্চিত করতে নবম শ্রেণীর ছাত্রীদের বিনামূল্যে সাইকেল এবং কলেজে ছাত্রীদের জন্য সমস্ত ফি মকুব করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মেধা পুরস্কার, সুপার ৩০ প্রকল্প, ও অভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রশ্নপত্র চালুর মাধ্যমে শিক্ষার মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

সুপার ৩০ প্রকল্পের অধীনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১ জন শিক্ষার্থী আইআইটি, ৩ জন এনআইটি, এবং ৩ জন এমবিবিএস কোর্সে সুযোগ পেয়েছে। এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম চালু করা হয়েছে এবং বিভিন্ন স্কুলকে ইংলিশ মিডিয়ামে রূপান্তর করা হয়েছে।

রবিবার রামনগর মন্ডলের উদ্যোগে আয়োজিত মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক কৃতি ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন— "আজকের ছাত্রছাত্রীরাই আগামীদিনে রাজ্য ও দেশের ভবিষ্যত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ কর্মসূচি ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার চাপ কমাতে সহায়তা করছে। তাঁর নেতৃত্বে দেশ যেভাবে অগ্রসর হচ্ছে, তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।"

ত্রিপুরার শিক্ষা ব্যবস্থায় এই আমূল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে রাজ্য সরকার এক নতুন দিগন্তের দিকে এগিয়ে চলেছে—যেখানে প্রযুক্তি, পরিকাঠামো ও মানসম্পন্ন শিক্ষা একসাথে অগ্রাধিকার পাচ্ছে।