বাসি ভাত গরম করে খাওয়া কোনও নতুন বিষয় নয়। দেখতে বা গন্ধে সমস্যা না থাকায় বেশিরভাগ মানুষেরই মনে হয়, এটি খাওয়া পুরোপুরি নিরাপদ। কিন্তু ভাত ঠিকভাবে সংরক্ষণ বা গরম না করলে খুব দ্রুত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার আঁতুড়ঘরে পরিণত হতে পারে।
ডাবল বোর্ড-সার্টিফায়েড চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদ ডা. এমি শাহ ভাত সংরক্ষণ ও গরম করার ক্ষেত্রে এই ঝুঁকির দিকটি বিশেষভাবে তুলে ধরেছেন। ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে তিনি সতর্ক করে জানান, ভাত গরম করার সময় একটি সাধারণ ভুলই ফুড পয়জনিং এবং অন্ত্রের সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে।
ভাত ফ্রিজে রাখা কি আদৌ ভাল?
ডা. শাহ প্রথমেই একটি প্রচলিত ভুল ধারণা ভাঙেন। তাঁর কথায়, “ভাত ফ্রিজে রাখা আসলে শরীরের জন্য ভাল। রান্নার পর দ্রুত ঠান্ডা করে ভাত ফ্রিজে রাখুন। পরের দিন খেলে ভাতের কিছু স্টার্চ বদলে যায় ‘রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ’-এ, যা অন্ত্রের জন্য উপকারী, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং গাট মাইক্রোবায়োমকে সুস্থ রাখে।”
তবে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, আসল বিপদ ফ্রিজে রাখার মধ্যে নয়। বিপদ লুকিয়ে আছে তার আগের ধাপে। “সবচেয়ে বড় ভুল হল রান্না করা ভাত সারাদিন ঘরের তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া। অনেকেই এটা করেন এবং ভাবেন কিছু হয়নি। কিন্তু ব্যাসিলাস সেরিয়াস নামের ব্যাকটেরিয়ার কারণে হওয়া ফুড পয়জনিং একবার হলেই তার ফল ভোগ করতে হবে,” সতর্ক করেন তিনি।
যে ভুল কখনওই করা উচিত নয়
বিশেষ করে কলেজ পড়ুয়া বা যাঁরা দীর্ঘ সময় খাবার বাইরে রেখে দেন, তাঁদের জন্য এই সতর্কতা অত্যন্ত জরুরি। ঘরের তাপমাত্রায় পড়ে থাকা ভাত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধির আদর্শ পরিবেশ তৈরি করে। এর ফলে মারাত্মক ফুড পয়জনিং হতে পারে এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে।
শেষে তাঁর পরামর্শ, ভাত রান্না করার পর দ্রুত ঠান্ডা করুন, বায়ুরোধী পাত্রে ফ্রিজে রাখুন এবং একবারের বেশি কখনওই গরম করবেন না। এই কয়েকটি নিয়ম মেনে চললেই অনেক বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।
প্রতিদিনের খাবার নিয়ে সামান্য অসতর্কতাই বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পরিচিত ও ঘরোয়া খাবার হলেও কীভাবে তা ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সচেতনতা ও সঠিক অভ্যাস বজায় থাকলে অযথা অসুস্থতা এড়িয়ে সুস্থ জীবনযাপন করা অনেকটাই সহজ হয়ে ওঠে।
