আজকাল ওয়েবডেস্ক: দ্রুত দেশব্যাপী ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর) করার প্রস্তুতি শুরু করছে নির্বাচন কমিশন। তবে একসঙ্গে নয়, পর্যায়ক্রমে চলবে এই সংশোধন প্রক্রিয়া। কমিশন সূত্রে খবর, সম্ভবত চলতি মাসে দেশব্যাপী এসআইআর-এর প্রথম পর্যায়ের সময়সূচী ঘোষণা করবে কমিশন। এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হবে নভেম্বরে। উল্লেখ্য, এসআইআর ঘোষণার সময়সীমার শেষ তারিখ ১লা নভেম্বর।

রাজ্যগুলির নির্বাচনী আধিকারিকদের (সিইও) সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার-সহ অন্য়ান্য কমিশনাররা। দু'দিনের বৈঠকে মুখ্য় নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার এবং অন্য দুই নির্বাচন কমিশনার ড. সুখবীর সিং সান্ধু এবং ড. বিবেক যোশী সোমবার তফসিল চূড়ান্ত করে ঘোষণা করবেন।

আজ নয়াদিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড ইলেক্টোরাল ম্যানেজমেন্ট (আইআইএমডিইএম)-এ সম্মেলন চলছে। এতে সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের  সিইওরা উপস্থিত ছিলেন। কমিশন, সিইএ-দের আসন্ন এসআইআর-এর জন্য তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে এবং পূর্ববর্তী সংশোধনের সময়কালের সঙ্গে বর্তমান ভোটারদের মেলানোর জন্য পূর্ববর্তী নির্দেশাবলী অনুসারে অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে বলেছে।

কমিশনের একজন আধিকারিক বলেছেন, "বিহারে, এসআইআর প্রক্রিয়াটি ২৪ জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় চার মাস সময় নিয়েছিল। তবে, কমিশন এখন এই সময়সীমা কমানোর পরিকল্পনা করছে।" প্রক্রিয়াটি সহজ করার জন্য, কমিশন সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে পূর্ববর্তী এবং বর্তমান ভোটার তালিকার প্রাক-মিল শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে। ভোটার যাচাইকরণ প্রক্রিয়াটি কম সময়ে করতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

বিহারের পদ্ধতি থেকে শিক্ষা নিয়ে, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরাখণ্ড এবং কেরলের মতো রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি ইতিমধ্যেই তাদের পূর্ববর্তী এসআইআর ডেটা ব্যবহার করে ভোটারদের ম্যাপিং শুরু করেছে। গত সম্মেলনে বিহারের সিইওর উপস্থাপনায় এই কার্যকর ম্যাপিং প্রক্রিয়াটি তুলে ধরা হয়েছিল, যা অন্যান্য রাজ্য এখন গ্রহণ করেছে। অনেক রাজ্যই, ইতিমধ্যে তাদের সর্বশেষ এসআইআর ভোটার তালিকা অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে আপলোড করেছে।

প্রথম পর্যায়ে, এসআইআর অসম, তামিলনাড়ু, পুদুচেরি, কেরল এবং পশ্চিমবঙ্গ-সহ প্রায় ১০টি রাজ্যে অনুষ্ঠিত হবে। পরের বছর বাংলা, অসমে ভোট রয়েছে। প্রস্তুতি মূল্যায়ন করার জন্য কমিশন এই নির্বাচন-মুখী রাজ্যগুলির সিইও-দের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেছে।

এর আগে কমিশন সিইও-দের নিয়ে এসআইআর সংক্রান্ত বিষয়ে পর্যালোচনার করছিল চলতি বছরের ১০ সেপ্টেম্বর। সেই বৈঠকের এসআইআর প্রস্তুতির তথ্যও পর্যালোচনা করা হয়েছে চলতি সভায়। যেখানে রাজ্যগুলি তাদের ভোটার সংখ্যা, যোগ্যতা অর্জনের তারিখ এবং তাদের শেষ সম্পন্ন এসআইআর-এর অবস্থা তুলে ধরেছে।

দেশব্যাপী এসআইআর চালু করার মাধ্যমে, কমিশন আসন্ন নির্বাচনের আগে আরও পরিষ্কার এবং নির্ভুল ভোটার তালিকা নিশ্চিত করতে চাইছে। 

এসআইআর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর তীব্র। মুখর তৃণমূল নেত্রী তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। বিজেপির বিরুদ্ধে তোপের দেগেছেন তিনি। এসআইআর-এর বিরোধীতায় মমতা বলেছেন, "বিজেপির পার্টি অফিসে বসেই কী এসআরআর পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে? নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে স্ট্যাম্প মারবে? নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে আমরা নিরপেক্ষতা আশা করি। সরকার ও বিরোধী দল মিলিয়েই গণতন্ত্র।" 

বাংলায় এসআইআর করা যাবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়েছেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বলেছেন, "বিহারে (এসআইআর) করতে পেরেছিলেন। কারণ, ওখানে বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকার আছে। কিন্তু বাংলার ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আলাদা।"