আজকাল ওয়েবডেস্ক: ব্যাঙ্ক টাকা রাখা সবচেয়ে নিরাপদ। এমনই ভাবেন বেশিরভাগ মানুষ। কিন্তু, সর্ষের মধ্যেই ভূত থাকে?

রাজস্থানের কোটার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের একজন মহিলা শীর্ষ আধিকারিক মানুষের ব্যাঙ্কের প্রতি চরম আস্থা-বিশ্বাসকে ব্যবহার করে গ্রাহকদের কাছ থেকে চার কোটি টাকারও বেশি প্রতারণা করেছেন। ওই মহিলা লোভের বশে শেয়ারে বিনিয়োগ করে স্বল্প সময়ের মধ্যে উচ্চ রিটার্ন পাওয়ার স্বপ্নে বুঁদ ছিলেন। অভিযুক্ত, ৪১ জনেরও বেশি গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে টাকা ব্যবহার করেছিলেন। জালিয়াতি দুই বছর ধরে চলতে থাকে, কিন্তু ব্যাঙ্কের কেউই এ সম্পর্কে কোনও ধারণা করতে পারেননি।

আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের রিলেশনশিপ ম্যানেজার সাক্ষী গুপ্তা 'ইউজার এফডি (ফিক্সড ডিপোজিট)' লিঙ্কের অপব্যবহার করেন। ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ৪১ জন গ্রাহকের ১১০টি অ্যাকাউন্ট থেকে ৪.৫৮ কোটি টাকা অবৈধভাবে তুলে নেন। তদন্ত অনুসারে, সাক্ষী গুপ্তা শেয়ার বাজারে টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। তবে, বাজারে ক্ষতির পরে তিনি ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে টাকা আর জমা করতে ব্যর্থ হন। অভিযুক্ত সাক্ষীকে এখন গ্রেপ্তার করে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে। গত রাতে তাঁর বোনের বিয়ের আসর থেকে পুলিশ সাক্ষীকে গ্রেপ্তার করে।

একজন গ্রাহক যখন তাঁর এফডি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে ব্যাঙ্কে আসেন তখন এই জালিয়াতির বিষয়টি প্রকাশ পায়। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাঙ্কের তরফে পুলিশের কাছে মামলা দায়ের করা হয়।

ওই মহিলা ব্য়াঙ্ক আধিকারিক গ্রাহকদের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে সংযুক্ত মোবাইল নম্বরও পরিবর্তন করে দেন, যাতে তাঁরা লেনদেনের বার্তা সম্পর্কে জানতে না পারেন। তদন্তকারী আধিকারিক ইব্রাহিম খান বলেন, "তিনি তাঁর পরিবারের সদস্যদের ফোন নম্বরগুলি এই অ্যাকাউন্টগুলির সঙ্গে সংযুক্ত করে চার কোটি টাকারও বেশি টাকা তুলে নেন। এমনকি তিনি এমন একটি সিস্টেম তৈরি করেন যার মাধ্যমে তিনি তাঁর সিস্টেমে ওটিপি পেতেন, যাতে অ্যাকাউন্টধারীরা জালিয়াতির কোনও আভাস না পান।" 

এই ঘটনায় আইসিআইসিআই ব্যাংক এখনও কোনও বিবৃতি জারি করেনি। তবে, ব্যাঙ্ক সূত্র জানিয়েছে যে, তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দেবে।

সাক্ষী গুপ্তার গ্রেপ্তারের খবর পাওয়ার পর একজন গ্রাহক তাঁর টাকা নিরাপদ কিনা তা পরীক্ষা করতে ব্যাঙ্কে আসেন। মহাবীর প্রসাদ বলেন, "আমি শুনেছি সাক্ষী গুপ্তা লোকেদের কাছ থেকে চার কোটি টাকা প্রতারণা করেছে। আমি এখানে এসেছি আমার টাকা নিরাপদ আছে কিনা তা পরীক্ষা করতে।" মহাবীর  জিজ্ঞাসা করেন, "আমাদের টাকা কোথায় রাখা উচিত? আমরা বাড়িতে রাখতে পারি না, এখন ব্যাঙ্কেরও এই অবস্থা। আমাদের কী করা উচিত?"