আজকাল ওয়েবডেস্ক: জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (জেএনইউএসইউ) নির্বাচনে বামেদের দাপট জারি রইল। কেন্দ্রীয় প্য়ানেলে চারটির মধ্যে তিনটিতেই জয়লাভ করেছে বামেরা। আরএসএস-অনুমোদিত এবিভিপি নয় বছর পর যুগ্ম সম্পাদক পদে জয়লাভ করেছে।

সোমবার ভোরে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ  নির্বাচনের ফলাফল ঘোষিণা করা হয়। সেই অনুসারে, অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (এআইএসএ)-এর নীতীশ কুমার ১৭০২ ভোট পেয়ে সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) শিখা স্বরা ১৪৩০ ভোট পেয়েছেন এবং স্টুডেন্টস ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া (এসএইআই) সমর্থিত তৈয়বা আহমেদ ৯১৮ ভোট পেয়েছেন।

ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্টস ফেডারেশনের (ডিএসএফ) মনীষা ১,১৫০ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি পদে জয়লাভ করেছেন। তিনি হারিয়েছেন এবিভিপির নিত্তু গৌতমকে। নিত্তু ১,১১৬ ভোট পেয়েছেন।

ডিএসএফ সাধারণ সম্পাদক পদেও জয়লাভ করেছেন। মুন্তেহা ফাতিমা ১৫২০ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। ওই পদে দ্বিতীয় হয়েছেন এবিভিপির কুনাল রাই। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ১৪০৬ ভোট।

প্রগতিশীল ছাত্র সমিতির (পিএসএ) প্রার্থী নিগম কুমারীকে  (১,২৫৬ ভোট) হারিয়ে যুগ্ম সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন এবিভিপির বৈভব মীনা। তাঁর প্রাপ্ত ভোট ১৫১৮। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন এআইএসএ-র নরেশ কুমার (১৪৩৩ ভোট)।

জেএনইউ ছাত্র সংসদের যুগ্ম সম্পাদক পদে ২০১৫-১৬ সালে জিতেছিলেন এবিভিপি-র সৌরভ শর্মা। তার নয় বছর পর ফের জিতলেন এই গেরুয়া সংগঠনের বৈভব মীনা। জেএনইউএসইউ-এর সভাপতি পদে২০০০-০১ সালে শেষবার এবিভিপি-র সন্দীপ মহাপাত্র বিজয়ী হয়েছিলেন।

এই বছরের নির্বাচনে বাম জোটে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। এআইএসএ এবং ডিএসএফ এক জোট হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এবং এসএফআই এবং অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস ফেডারেশন (এআইএসএফ) বিরসা আম্বেদকর ফুলে স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (বিএপিএসএ) এবং পিএসএ-এর সঙ্গে জোট গঠন করে।

এবিভিপি স্বাধীনভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল।

 

?ref_src=twsrc%5Etfw">April 27, 2025

তিনটি কেন্দ্রীয় প্যানেল পদে বাম জোটের জয়কে স্বাগত জানিয়েছে এআইএসএ। তবে যুগ্ম সম্পাদক পদে এবিভিপি-র-এর জয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এআইএসএ। এবিভিপি-র জয়কে ঝেএনইউ ক্যাম্পাসে বামপন্থীদের আধিপত্যের প্রতি চ্যালেঞ্জ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এআইএসএ-এর তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, 'এটা সত্যিই উদ্বেগের বিষয় যে এবিভিপি ৮৫ ভোটের ব্যবধানে যুগ্ম সম্পাদক পদে জয়লাভ করেছে। ভর্তি প্রক্রিয়ার এই কাঠামোগত আক্রমণ এবং দুর্নীতি সত্ত্বেও যাতে ফ্যাকাল্টিতে বিজেপির অনুগতরা ক্যাম্পাসে একচেটিয়া প্রভাব কায়েম করতে না পারেন, তা নজরে রাখবে বামপন্থীরা।'

জোটের এই জয়কে সরকারের নতুন শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে একটি মতামত বলে অভিহিত করা হয়েছে, যা সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত শিক্ষাকে দুর্বল করে এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করে।

বিপরীতে, এবিভিপি তাদের জয়কে "জেএনইউ-এর রাজনৈতিক দৃশ্যপটে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তন" বলে অভিহিত করেছে এবং জানিয়েছে যে- এটি বামপন্থীদের "তথাকথিত লাল দুর্গে আঘাত।"  

জেএনইউ ছাত্র সংসদের নবনির্বাচিত যুগ্ম সম্পাদক মীনা বলেছেন, "আমি এই জয়কে আমার ব্যক্তিগত অর্জন বলে মনে করছি না। বরং এটি উপজাতীয় চেতনা এবং জাতীয়তাবাদী আদর্শের একটি বিশাল এবং আকর্ষণীয় বিজয়, যা বছরের পর বছর ধরে বামপন্থীরা দমন করে আসছে।"