আজকাল ওয়েবডেস্ক: উৎসবের আমেজ দেশজুড়ে। আলোর উৎসবে মেতে উঠেছে আপামর দেশবাসী। দিকে দিকে আলোর রোশনাই। দীপাবলি উপলক্ষে আলোয় সেজে উঠবে দেশের কোণা কোণা। তবে একটি মাত্র গ্রামে জ্বলবে না উৎসবের আলো। আলোর উৎসবে মেতে উঠবে না এই গ্রাম। দীপাবলিতেও অন্ধকারে ডুবে থাকবে। 

 

হিমাচল প্রদেশের সাম্মু গ্রাম: 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, হিমাচল প্রদেশের হামিরপুর জেলার হাম্মু গ্রামে চলতি বছরেও আলোর উৎসব উদযাপন হবে না। কয়েক দশকের পুরনো রীতি মেনেই দীপাবলি উদযাপন করেন না এই গ্রামের বাসিন্দারা। এক পুরনো অভিশাপের জেরেই দীপাবলিতেও আলো জ্বলে এই গ্রামে। 

 

কী কারণ? 

 

জানা গেছে, ওই গ্রামের এক মহিলা স্বামীর মৃত্যুর পর আত্মঘাতী হন। স্বামীর চিতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। তবে চরম পদক্ষেপের আগে গ্রামবাসীদের অভিশাপ দেন, এই গ্রামে আর কখনও দীপাবলি উদযাপন হবে না।‌ কেউই আলোর উৎসবে মেতে উঠতে পারবেন না। 

শনিবার গ্রামের প্রধান বীণা দেবী জানিয়েছেন, তরুণীর সেই অভিশাপের পরেই গ্রামে আর দীপাবলিতে উদযাপন হয় না। কোনও ঘরেই জ্বলে না আলো। 

 

আরও পড়ুন: বাজি পোড়ানো যাবে না দিওয়ালিতে, মাটির প্রদীপই ভরসা! গোটা রাজ্যে বড় ঘোষণা, নিয়ম ভাঙলেই শাস্তি

 

বিপর্যয়ের আশঙ্কা: 

 

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে দীপাবলিতে কয়েকটি মাটির প্রদীপ জ্বলে। তবে বাজি ফাটিয়ে, হুল্লোড়ে মেতে কেউ দীপাবলি উদযাপন করেন না। সকলের মনে ভয় ঢুকে গেছে। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, সেই অভিশাপের পর দীপাবলি উদযাপন করলে গ্রামেই বিপর্যয় নেমে আসবে। 

 

জেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সাম্মু গ্রাম স্তব্ধ থাকে দীপাবলিও। বাজি ফাটানো হয় না, আলো জ্বলে না। দীপাবলিতে অন্য চিত্র ধরা পড়ে এই গ্রামে। এক বয়স্ক গ্রামবাসী ঠাকুর বিধি চাঁদ জানিয়েছেন, 'কয়েক দশক আগে এক গর্ভবতী মহিলা দীপাবলি উদযাপনের জন্য তোড়জোড় করছিলেন। স্বামীর অপেক্ষায় প্রহর গুনছিলেন। সেই সময়েই গ্রামে প্রবেশ করে তাঁর স্বামীর মরদেহ। তরুণীর স্বামী সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। স্বামীর নিথর দেহ দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন গর্ভবতী মহিলা। শেষমেশ স্বামীর চিতায় ঝাঁপিয়ে পড়েনও ওই তরুণী।' 

 

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, আত্মঘাতী হওয়ার আগে তরুণী অভিশাপ দিয়েছিলেন, গ্রামে কেউ আর কখনও দীপাবলি উদযাপন করতে পারবেন না। এই অভিশাপের পর গ্রামের কেউ দীপাবলিতে উদযাপনে মেতে উঠলেই ঘোর বিপদ ঘনিয়ে আসত। হয় কেউ মারা যেতেন, নতুবা তুমুল সঙ্কট দেখা দিত পরিবারে। বছরের পর বছর যজ্ঞ করে, পুজো করে অভিশাপ কাটানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সবটাই বিফলে গেছে। তিন বছর আগে গ্রামের সকলে মিলে বড়সড় করে পুজোর আয়োজন করেছিলেন। তারপরেও দীপাবলিতে উদযাপনে সামিল হতে পারেননি কেউ। এর জেরেই প্রতি বছর দীপাবলিতে ঘরবন্দি হয়ে থাকেন গ্রামবাসীরা।