আজকাল ওয়েবডেস্ক: বর্ষার মরসুম। কখনও মুষলধারে, কখনও বা টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়ছে। বিকেল হলেই মনটা সিঙাড়া খেতে ইচ্ছে করছে। সিঙাড়া না হলেও একটি আলুর চপ সঙ্গে মুড়ি। শেষ পাতে জিলিপি। আহা! জমে যাবে। কিন্তু প্রিয় এই সিঙাড়া এবং জিলিপতেই হয়ে যাচ্ছে শরীরের মারাত্মক ক্ষতি। সেটা মনে করিয়ে দিতেই উদ্যোগ নিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

অস্বাস্থ্যকর খাবার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ করে ভারত সরকার ঘোষণা করেছে যে সিঙাড়া, জিলিপি, পকোড়া, বড়াপাও এবং চা-বিস্কুটের মতো জনপ্রিয় খাবারগুলিতে শীঘ্রই সিগারেটের মতো স্বাস্থ্য সতর্কতা লেখা থাকবে। এই খাবারগুলিতে তেল, চিনি এবং ট্রান্স ফ্যাটের মাত্রা তুলে ধরা থাকবে। এই উপাদানগুলি বিভিন্ন রোগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

আরও পড়ুন: ভারতের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে চান? এই চারটি নথি থাকলেই যথেষ্ট, দেখে নিন সম্পূর্ণ তালিকা

নাগপুর এইমস কেন্দ্রীয় সরকারের এই উদ্যোগ নিজেদের ক্যাম্পাসে প্রথম চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ক্যাম্পাসের ক্যাফেটেরিয়া এবং খাবারের জায়গাগুলিতে খাবারের কাউন্টারের পাশে উজ্জ্বল, সহজে পড়া যাবে সতর্কতা বোর্ড প্রদর্শন করা শুরু হবে।

ভারত ক্রমশ বৃহত্তর স্বাস্থ্য সঙ্কটের মুখোমুখি হতে চলেছে। স্থূলতা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় কেন্দ্র এখন সেই দিকে মনোনিবেশ করছে। ঘন ঘন ভাজা এবং চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া এই রোগগুলির প্রধান কারণ। দ্য ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত একটি বিশ্বব্যাপী সমীক্ষায় অনুমান করা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে আনুমানিক ৪৪ কোটি ভারতীয় অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলকায় হতে পারে।

Pakora Thali Recipe | Rida Aftab | Masala TV

সরকার স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে এই সব খাবারের উপর কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে না। সিঙাড়া এবং জিলিপ এখনও পাওয়া যাবে দোকানে দোকানে। তবে, মানুষ কী খাচ্ছেন সে সম্পর্কে অবহিত করা হবে। লক্ষ্য খাবার বিক্রি বন্ধ নয়, সচেতনতা প্রচার করা।

আগামী কয়েক মাসের মধ্যে অন্যান্য শহর এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও এই সতর্কীকরণ কর্মসূচির প্রচার করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে যে এর ফলে সাধারণ মানুষ যথেষ্ট সতর্ক হবেন এবং আরও বেশি জনগণকে সুষম খাদ্যের জন্য উৎসাহিত করা যাবে। 

আরও পড়ুন: থমকে যেতে পারে সভ্যতার অগ্রগতি, অবলুপ্তির পথে পুরুষ, দাবি গবেষকদের! কিন্তু কেন? কোন পথে ভবিষ্যৎ?

নাগপুরে এইমসের এখন গেলেই দর্শনার্থীরা দেখতে পাবেন, জনপ্রিয় খাবারের স্টলের পাশে সতর্কীকরণ পোস্টার। চিনি, চর্বি এবং ট্রান্স ফ্যাটের পরিমাণ সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য, ঘন ঘন সেবনের ফলে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য ঝুঁকির রূপরেখা তৈরি করে এমন বার্তা। এই সতর্কীকরণগুলি পোস্টারগুলি যাতে সবার চোখে পড়ে সেই ভাবেই ডিজাইন করা হয়েছে। অনেকটা সিগারেটের প্যাকেজিংয়ের সতর্কতার মতো।

সিগারেটের প্যাকেটে সতর্কীকরণ বার্তা থাকে। এই সতর্কীকরণ বার্তাগুলি মূলত ধূমপানের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য দেওয়া থাকে। সিগারেটের প্যাকেটে ছবি-সহ সতর্কীকরণ লেখার নিয়ম চালু হয়েছিল ২০০৯ সালের ৩ মে। এর আগে, ২০০৮ সালের ২ অক্টোবর সারা দেশে প্রকাশ্যে ধূমপানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। পড়ে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, প্রতি বছর বিশ্বে তামাকের জন্য ৬০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয় সরাসরি ধূমপানের কারণে। নিজেরা ধূমপান না করেও পরোক্ষ ভাবে ধূমপানের কারণে মৃত্যু হয় ৬ লক্ষেরও বেশি মানুষের। হিসেব অনুযায়ী, প্রতি ৬ সেকেন্ডে এক জন মানুষের মৃত্যুর কারণ- তামাক।