আজকাল ওয়েবডেস্ক: নরেন্দ্র মোদী ২০১৪-র নির্বাচনী প্রচারে বলেছিলেন, “আচ্ছে দিন আনে ওয়ালে হ্যায়।” এক দশক পর প্রকাশিত হল ২০২৩-২৪ সালের জাতীয় নমুনা সমীক্ষা সংস্থার (NSS) উপভোক্তা ব্যয় সংক্রান্ত রিপোর্ট। সেই পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের গ্রামীণ এবং শহুরে উভয় ক্ষেত্রেই মাসিক মাথাপিছু ব্যয়ের (MPCE) বৃদ্ধি হলেও, তার গতি আগের দশকের তুলনায় কমে গিয়েছে।
এই প্রতিবেদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল একটি নতুন সূচক – ‘থালি ইনডেক্স’। প্রতি ব্যক্তির খাদ্য ব্যয় থেকে হিসাব করা হয়েছে তারা দিনে কতটি থালি খেতে পারছেন। ক্রিসিলের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩-২৪ সালে একবেলার নিরামিষ থালির গড় খরচ ছিল ৩০ টাকা এবং আমিষ থালির খরচ ছিল ৫৮ টাকা।
পরিসংখ্যান বলছে, গ্রামীণ ভারতে এখনও প্রায় ৪০% মানুষ দিনে দুই বেলা নিরামিষ থালি কেনার সামর্থ্য রাখেন না। ৮০%-এর বেশি মানুষ দিনে এক নিরামিষ ও এক আমিষ থালির (মোট ৮৮ টাকা) যোগান দিতে পারেন না। শহরে এই সংখ্যা কিছুটা কম হলেও, ৫০% মানুষ ওই দুই থালির খরচ মেটাতে অক্ষম।
অন্যদিকে স্টেট ব্যাঙ্ক ও বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক দারিদ্র্য সংক্রান্ত অনুমান অনুযায়ী দেশে গরিব মানুষের হার ৫%-এর নিচে। গবেষকরা বলছেন, এই অনুমান বাস্তব চিত্রকে ধোঁকা দেয়। কারণ এই সমস্ত মূল্যায়ন ধরে নেয়, মানুষ তাদের সমস্ত আয় শুধু খাদ্যে ব্যয় করতে পারেন। বাস্তবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও যাতায়াতের খরচ খাদ্যে খরচের উপর প্রভাব ফেলে।
এই গবেষণা তাই প্রশ্ন তোলে বর্তমান দারিদ্র্য মাপার পদ্ধতি নিয়ে। গবেষকদের দাবি, অন্ততপক্ষে দিনে দু’বেলা খাওয়ার সামর্থ্যকে দারিদ্র্য নির্ধারণের মাপকাঠিতে ধরা উচিত। তাঁরা সতর্ক করছেন, দেশে বহু মানুষ টিকে থাকার জন্যই কম খাচ্ছেন — যেটা প্রকৃত জীবনের মানের প্রতিচ্ছবি। তাদের বক্তব্য, যদি খাদ্যের দামকে কেন্দ্র করে দারিদ্র্য মাপা হয়, তাহলে ভারতের 'আচ্ছে দিন' এখনও বহু দূরে।
