আজকাল ওয়েবডেস্ক: কিডনি দেহের অন্যতম প্রধান একটি অঙ্গ। দেহের বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতে কিডনির ভূমিকা অপরিহার্য। ঠিক যেমন ভাবে জলের ফিল্টারের ভিতর দীর্ঘদিন ময়লা পড়লে কঠিন আস্তরণ জমে যায়, তেমনই কিডনির ভেতরে খনিজ ও লবণের জমাট বাঁধলে কিডনি স্টোন বা বৃক্কের পাথর তৈরি হয়। চিকিৎসা পরিভাষায় একে রেনাল ক্যালকুলাস, নেফ্রোলিথিয়াসিস বা ইউরোলিথিয়াসিসও বলা হয়। প্রস্রাবে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ যেমন - ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, ইউরিক অ্যাসিড, সিস্টিন ইত্যাদি যখন অতিরিক্ত পরিমাণে জমা হয়ে একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ক্রিস্টাল বা স্ফটিক গঠন করে, তখন এই পাথর তৈরি হয়। সাধারণত কিডনি স্টোন আকারে খুব ছোট (বালির কণার মতো) হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর আকার গল্ফ বলের মতো বড়ও হতে পারে।

কীভাবে বুঝবেন কিডনি স্টোন হয়েছে?
কিডনিতে পাথর হলে সবসময় যে লক্ষণ দেখা দেবে তা নয়, বিশেষ করে পাথর খুব ছোট হলে কোনও উপসর্গ ছাড়াই এটি প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে যেতে পারে। তবে, পাথর বড় হলে বা নড়াচড়া করলে অথবা মূত্রনালিতে আটকে গেলে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে। 

আরও পড়ুন: নিজেই জানতেন না তিনি অন্তঃসত্ত্বা! মলত্যাগ করতে গিয়ে সন্তানের জন্ম দিলেন মহিলা
আরও পড়ুন: রোগীদের উপুড় করে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে নিতেন! তারপর…? বিস্ফোরক অভিযোগ নামী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

তীব্র ব্যথা: সাধারণত পিঠের দিকে, পাঁজরের ঠিক নিচে, একপাশে বা উভয় পাশে হঠাৎ করে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। এই ব্যথা কিছুক্ষণ পরপর হতে পারে এবং তীব্রতা খুবই বেশি হয়। অনেকে একে প্রসব যন্ত্রণার সঙ্গেও তুলনা করেন।

তলপেট ও কুঁচকিতে ব্যথা ছড়িয়ে পড়া: কিডনির ব্যথা ধীরে ধীরে তলপেট এবং কুঁচকির দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। পাথর যত নিচের দিকে নামতে থাকে, ব্যথার স্থানও পরিবর্তিত হতে থাকে।

প্রস্রাবে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া: প্রস্রাব করার সময় তীব্র ব্যথা বা জ্বালাপোড়া অনুভব হতে পারে। পাথর মূত্রনালি বা মূত্রথলির কাছাকাছি চলে এলে এই লক্ষণ দেখা দেয়।

প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন ও রক্তপাত: প্রস্রাবের রঙ গোলাপি, লালচে বা বাদামি হয়ে যেতে পারে। কিডনি স্টোন নড়াচড়া করার ফলে মূত্রনালিতে আঘাত লাগার কারণে রক্তপাত হতে পারে। প্রস্রাবে রক্তের উপস্থিতির কারণে মূত্র গোলাপী হয়ে যেতে পারে।

বমি বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া: কিডনিতে পাথরের তীব্র ব্যথার সঙ্গে প্রায়শই বমি বমি ভাব বা বমি হতে দেখা যায়। ব্যথার কারণে হজম প্রক্রিয়াও ব্যাহত হতে পারে।

এছাড়াও, ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, ঘোলাটে বা দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হওয়া এবং সংক্রমণের কারণে জ্বর ও কাঁপুনি আসা ইত্যাদি লক্ষণও দেখা দিতে পারে। এই ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।