আজকাল ওয়েবডেস্ক: আষাঢ় মাস শেষ হতে চলল। কিন্তু যখনই বৃষ্টি থামছে তখনই হিংস্র বাঘের মতো আক্রমণ করছে প্রখর রোদ। এমন পরিবর্তনশীল আবহাওয়াতে ক্রমেই বাড়ছে হিট স্ট্রোক হওয়ার প্রবণতা। সকালের মেঘলা আকাশ দেখে অনেকেই ছাতা ছাড়াই বেরিয়ে পড়ছেন। কিন্তু বেলা বাড়তেই রোদ এমন তীব্র হয়ে উঠছে যে শরীর তার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে এবং দ্রুত গরম হতে শুরু করছে। ঠিক এই কারণেই দেখা দেয় হিট স্ট্রোকের মতো মারণরোগ। সাধারণত ১০৪° ফারেনহাইট বা ৪০° সেলসিয়াসের বেশি উষ্ণতায় হিট স্ট্রোক হয়।

প্রধান কারণ
দীর্ঘক্ষণ ধরে উচ্চ তাপমাত্রায় এবং আর্দ্রতাপূর্ণ পরিবেশে থাকা হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। পাশাপশি গরমে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীর পর্যাপ্ত ঘাম তৈরি করতে পারে না এবং শরীরের ভেতরের তাপ বাইরে বেরতে পারে ন। এই রোগে আক্রান্ত রোগীর দ্রুত চিকিৎসা না করালে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, কিডনি এবং পেশীর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে, এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে। পাশাপাশি হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে এবং শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করতে পারে এমন খাবার খাওয়াও এই সময় অত্যন্ত জরুরি।
আরও পড়ুন: আরও পড়ুন: ‘স্তনদুগ্ধ আইসক্রিম’ খেতে হুড়োহুড়ি বড়দেরও! কত দাম? কোথায় পাওয়া যাবে এই স্বাদ?
আরও পড়ুন: রোগীদের উপুড় করে নিম্নাঙ্গের অন্তর্বাস খুলে নিতেন! তারপর…? বিস্ফোরক অভিযোগ নামী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে
১.  তরমুজ: তরমুজে প্রচুর পরিমাণে জল (প্রায় ৯২%) এবং প্রয়োজনীয় ইলেক্ট্রোলাইটস থাকে। এটি শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে এবং গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়ক। এছাড়াও, এতে লাইকোপিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করতে পারে।

২.  শসা: শসাতেও প্রচুর পরিমাণে জল থাকে এবং এটি শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া শসা দামেও কম, খেতে হালকা এবং সহজে হজমযোগ্য, যা গরমে পেটের জন্য আরামদায়ক। শসাতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থও থাকে ।

৩.  ডাবের জল: গরমে শরীরের ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্য বজায় রাখা খুব জরুরি। ডাবের জলে প্রাকৃতিক ইলেক্ট্রোলাইটস (যেমন পটাসিয়াম) এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ থাকে যা শরীরকে দ্রুত রিহাইড্রেট করতে সাহায্য করে এবং হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।
৪.  লেবুর শরবত: রাস্তায় যদি জল তেষ্টা পায়, তবে ঠান্ডা পানীয় না খেয়ে লেবু জল খান। লেবুতে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। লেবুর শরবত শুধু শরীরকে সতেজই করে না, এটি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। সামান্য লবণ মেশালে লেবুজল শরীরের ইলেকট্রোলাইটসের ভারসাম্য বজায় রাখতে আরও কার্যকর হয়ে ওঠে।

৫.  পেঁয়াজ: কাঁচা পেঁয়াজে কিছু যৌগ থাকে যা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে বলে মনে করা হয়। গ্রীষ্মকালে স্যালাডে বা অন্য খাবারের সঙ্গে কাঁচা পেঁয়াজ খাওয়া হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। তবে এর তীব্র গন্ধ অনেকের কাছে অপছন্দের হতে পারে।

এই খাবারগুলি সরাসরি হিট স্ট্রোক নিরাময় না করলেও, নিয়মিতভাবে এগুলি খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে, ডিহাইড্রেশন এড়ানো যায় এবং ইলেক্ট্রোলাইটসের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব, যা হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে, হিট স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।