আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রতিটি প্রাণীই তার পরিবেশকে নিজের মতো করে অনুভর করে থাকে। মানুষের উপস্থিতি শনাক্ত করার ক্ষেত্রে প্রাণীদের ক্ষমতা একেকটি প্রজাতির ক্ষেত্রে একেবারেই আলাদা। কেউ চোখের ওপর বেশি নির্ভরশীল, কেউ গন্ধের মাধ্যমে দূর থেকেই আমাদের টের পায়, আবার অনেক প্রাণী চোখ, কান ও নাক—এই তিনটি ইন্দ্রিয়ের সমন্বয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। মূলত, একটি প্রাণীর চোখ, কান ও নাক কীভাবে বিবর্তনের মাধ্যমে টিকে থাকার জন্য তৈরি হয়েছে, সেটির ওপরই নির্ভর করে তারা কত দূর থেকে মানুষকে শনাক্ত করতে পারে।
কুকুর মানুষের উপস্থিতি বুঝতে সবচেয়ে দক্ষ প্রাণী। তারা দৃষ্টি, গন্ধ ও নড়াচড়া শনাক্ত করার ক্ষমতার সমন্বয় ব্যবহার করে।
দৃষ্টিশক্তির সীমা:
পুলিশ ও কর্মরত কুকুরদের ওপর করা বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কুকুর কোনও মানুষকে প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ মিটার দূর থেকেই শনাক্ত করতে পারে। তবে মানুষটি যদি স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, তাহলে কুকুরকে তুলনামূলকভাবে কাছে আসতে হয়। কারণ বেশি দূরত্বে স্পষ্টভাবে তারা দেখতে পায় না।
গন্ধ ও শ্রবণশক্তি:
কুকুরের সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র হল তাদের ঘ্রাণশক্তি। তারা মানুষের মুখ বা অবয়ব না দেখেও একজন ব্যক্তির গন্ধ চিনতে পারে। অনেক সময় মানুষের উপস্থিতি তারা চোখে দেখার বহু আগেই গন্ধের মাধ্যমে বুঝে ফেলে। এই কারণেই অনুসন্ধান, উদ্ধার ও অপরাধ তদন্তে কুকুর অপরিহার্য।
কুকুরের আরও একটি বিরাট শক্তি হল তারা বহুদিন ধরে নিজেরে স্মৃতিতে ধরে রাখতে পারে। ফলে সেখান থেকে তারা বহু বছর পর দেখা হওয়া মানুষটিকেও অতি সহজে চিনে নেয়। সেখান থেকে তাদের কাছে অপরিচিত বলে কিছুই থাকে না।
মানুষের কাছে থাকে বলে কুকুররা বরাবরই তাদের প্রিয় হয়। মানুষের বিভিন্ন সুবিধা অসুবিধার বিষয়টি তারা সহজে বুঝতে পারে। সেখান থেকে তাদের পক্ষে মানুষের সঙ্গে মিশে থাকতে অনেক বেশি সুবিধা হয়। কুকুরই একমাত্র প্রাণী যারা নিজের প্রভুর জন্য নিজের থেকে বহু শক্তিশালী প্রাণীর সঙ্গেও লড়াই করতে পিছুপা হয়না।
সব মিলিয়ে দেখা যায়, প্রাণীরা মানুষকে যেভাবে শনাক্ত করে, তা তাদের জীবনধারা ও বিবর্তনগত প্রয়োজনের প্রতিফলন। কারও কাছে গন্ধই সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সংকেত, আবার কারও কাছে নড়াচড়া বা শব্দ। এই ভিন্নতাই প্রাণিজগতের সংবেদনশীলতাকে আরও বৈচিত্র্যময় করে তুলেছে।
