আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাতের অন্ধকারে হাতে স্মার্টফোন। ঘুম তো দূর ঘণ্টার পর ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে সমাজমাধ্যমে ক্রমাগত উঠে আসা একের পর ক্ষণস্থায়ী পোস্টে। উঠে আসছে একের পর এক দুঃসংবাদ, যুদ্ধ, মহামারি, দুর্ঘটনা বা হিংসার খবর। মন খারাপ লাগলেও চোখ সরানো দায়। ডিজিটাল দুনিয়ার এই ভয়ঙ্কর অভ্যাসেরই নাম ‘ডুম স্ক্রোলিং’।
সহজ কথায়, জেনেবুঝেও লাগাতার নেতিবাচক খবর বা বিষয়বস্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে দেখে যাওয়ার এই বাতিককেই ডুম স্ক্রোলিং বলা হয়। সোশ্যাল মিডিয়া বা নিউজ ফিডের অন্তহীন স্রোতে ভাসতে ভাসতে ব্যবহারকারী যেন এক অমোঘ আকর্ষণের ফাঁদে জড়িয়ে পড়েন। যাঁরা এ কাজ করেন, তাঁরা হয়ত মনে করেন চাইলেই বন্ধ করে দিতে পারবেন এই অভ্যাস। কিন্তু বিজ্ঞান বলছে, এও এক নেশার বস্তু। চাইলেই ছেড়ে দেওয়া যায় না। মস্তিষ্ক ক্রমাগত বিপদের সঙ্কেত খুঁজতে থাকে, আর তার জোগান দেয় অন্তর্জাল।
হার্ভার্ড হেলথের গবেষণা জানাচ্ছেন, ‘ডুম স্ক্রোলিং’-এর কুপ্রভাব সুদূরপ্রসারী। প্রথমত, এটি সরাসরি মানসিক স্বাস্থ্যের উপর আঘাত হানে। ক্রমাগত দুঃসংবাদ দেখতে দেখতে মন উদ্বেগ, আতঙ্ক এবং গভীর হতাশায় ডুবে যায়, যা থেকে অবসাদের মতো গুরুতর সমস্যাও দেখা দিতে পারে। দ্বিতীয়ত, বিশ্বের সব খারাপ দিক দেখতে দেখতে বাস্তব সম্পর্কে এক ভ্রান্ত ও নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।
এখানেই শেষ নয়, দিনের পর দিন এমন চলতে থাকলে এর ফলে ঘুমের চক্র মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অনিদ্রার সমস্যা দেখা দেয়, মনোযোগের অভাব ঘটে, মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় এবং দৈনন্দিন কাজে অনীহা দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এহেন ডিজিটাল আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার পথ একটাই। সচেতনতা। জোর করে হলেও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইন্টারনেট থেকে বিরতি নিন এবং ইতিবাচক কাজে মন দিন। এটাই এই চক্র ভাঙার প্রথম ধাপ।
