নিজস্ব সংবাদদাতা: বাতের ব্যথায় কষ্ট পাওয়া রোগীদের জন্য এ এক যুগান্তকারী আবিষ্কার। যেন ঈশ্বরের দেওয়া কোনও বর। কারণ বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এমন একটি জিনকে পুনরুজ্জীবিত করতে সক্ষম হয়ে মছেন, যা মানুষের জিনোম থেকে লক্ষ লক্ষ বছরেরও বেশি সময় আগে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল। আর বিজ্ঞানীদের দাবি, এই জিনেই হয়তো লুকিয়ে আছে গাউট এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার চাবিকাঠি।
বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ যন্ত্রণাদায়ক গাউট রোগে আক্রান্ত। বাংলায় একে চলতি ভাষায় বলে গেঁটে বাত। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে এই রোগ হয়। অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড জয়েন্টে সূঁচালো ক্রিস্টাল বা স্ফটিক তৈরি করতে পারে, যার ফলে তীব্র ব্যথা এবং প্রদাহ দেখা দেয়। শুধু তাই নয়, এটি কিডনি এবং লিভারের রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক লাইস ব্যালিকো এবং এরিক গশার এক বিলুপ্তপ্রায় জিনের উপর গবেষণা করেছেন, যার নাম ইউরিকেস। একসময় আমাদের প্রাচীন পূর্বপুরুষদের দেহে এই জিনটি উপস্থিত ছিল।
‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ নামক গবেষণা পত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, লক্ষ লক্ষ বছর আগে এই জিনটি শরীরে ইউরিক অ্যাসিড ভেঙে ফেলার জন্য প্রয়োজনীয় একটি উৎসেচক তৈরি করত। কিন্তু আধুনিক মানুষের শরীর থেকে বিবর্তনের কারণে জিনটি হারিয়ে যাওয়ায়, এখন আর সেই উৎসেচক তৈরি হয় না।
গবেষণাপত্রটির সহ-লেখক তথা গবেষক গশার বলেন, “ইউরিকেস না থাকায় মানুষ এই রোগের শিকার হচ্ছে। তাই আমরা দেখতে চেয়েছিলাম, এই নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া জিনটিকে পুনরায় সক্রিয় করলে কী ঘটে।”
গবেষণাগারে এই প্রাচীন জিনটিকে পুনরুজ্জীবিত করার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা এমন চিকিৎসা পদ্ধতি তৈরি করতে চাইছেন যা হাইপারইউরিসেমিয়া বা রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের উচ্চ মাত্রা নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধ করতে পারে এবং গাউটের মতো অসুখের ঝুঁকি কমাতে পারে।
আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে
গশার আরও বলেন, “মানুষের যকৃতের কোষে ইউরিকেস পুনরায় সক্রিয় করার মাধ্যমে আমরা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে এবং অতিরিক্ত ফ্রুক্টোজকে ট্রাইগ্লিসারাইডে ( ট্রাইগ্লিসারাইড একটি ফ্যাট, যা লিভারে জমা হয়) রূপান্তরিত হওয়া আটকাতে সক্ষম হয়েছি।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরিকেস জিনের এই পুনরুজ্জীবন গাউটের মতো দুরারোগ্য সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান খুঁজে বার করতে পারলে উপকৃত হবেন কোটি কোটি মানুষ। পাশাপাশি এই গবেষণা সফল হলে অন্যান্য রোগের ক্ষেত্রেও চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে এই ধরনের পদ্ধতি ভবিষ্যতে ব্যবহার করা যেতে পারে।
