আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রস্রাবের সমস্যা নিয়ে নেপালের ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ৭৬ বছর বয়সি এক বৃদ্ধকে। বৃদ্ধ জানান, একদিকে যেমন প্রস্রাব করতে সমস্যা হচ্ছে, তেমনই প্রস্রাব করার সময় রক্তপাত হচ্ছে। দেরি না করে সরাসরি বৃদ্ধকে ইমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে যান চিকিৎসকেরা। সেই বৃদ্ধের পুরুষাঙ্গ পরীক্ষা করতেই চক্ষু চড়কগাছ চিকিৎসকদের। দেখা যায় পোকার লার্ভা কিলবিল করছে বৃদ্ধের গোপনাঙ্গে!
ঘটনার কথা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানপত্রিকা ‘ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ সার্জারি কেস রিপোর্টস’-এ। চিকিৎসকেরা নিজেদের রিপোর্টে জানিয়েছেন, বছর দুয়েক আগে ওই বৃদ্ধ প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়ার সমস্যায় আক্রান্ত হন। যদিও এই বয়সে সেটি বিরল নয়। কিন্তু সমস্যা হল, প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে সেটি মূত্রথলি এবং মূত্রনালীর উপর চাপ দেয়। যার ফলে প্রস্রাব করতে অসুবিধা হয়। এক্ষেত্রেও চিকিৎসকেরা ভেবেছিলেন তেমনই কিছু হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা করতে গিয়ে যা দেখলেন তাঁরা, তাকে বিরল থেকে বিরলতম আখ্যা দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
দেখা যায় বৃদ্ধের মূত্রনালীতে ক্ষত রয়েছে। আর সেখানেই কিলবিল করছে ম্যাগট বা মাছির লার্ভা! চিকিৎসকদের মতে মাছি দুর্গন্ধের প্রতি আকৃষ্ট হয়। সাধারণত কোনও ক্ষত স্থান ঠিক মতো পরিষ্কার না করলে সেখান থেকে যে গন্ধ বেরোয় তাতেই মাছি এসে বসে এবং ডিম পাড়ে। সেই ডিম ফুটেই লার্ভা জন্ম নেয়। এক্ষেত্রে বৃদ্ধ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন কিছুদিন আগে। ফলে বেশি নড়াচড়া করতে পারতেন না। তাঁর স্ত্রীই যাবতীয় সেবা যত্ন করতেন। চিকিৎসকদের আশঙ্কা ঠিক মতো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না করার জন্যেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
তবে এখানেই শেষ নয়। সিসটোস্কোপি করে চিকিৎসকেরা দেখেন, শুধু মূত্রনালী নয়, ছোট ছোট লার্ভা ঢুকে পড়েছে তাঁর মূত্রথলিতেও। বিজ্ঞানের ভাষায় এই অবস্থাকে ইউরোজেনিটাল মাইয়াসিস বলে। শেষ পর্যন্ত টারপেন্টেইন তেল দিয়ে ক্ষতস্থান সাফ করেন। এই তেলে লার্ভা শরীরের বাইরে বার হয়ে আসে। সব লার্ভা পরিষ্কার করার পর আইভারমেক্টিন ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয় বৃদ্ধের। ১১ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান বৃদ্ধ।
