আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহিলাদের সবচেয়ে পছন্দের প্রসাধনীগুলির অন্যতম লিপস্টিপ। অনেকেই বন্ধু কিংবা কাছের মানুষের সঙ্গে লিপস্টিক, লিপবাম বা ঠোঁটে ব্যবহৃত অন্য কোনও প্রসাধনী ভাগাভাগি করে নেন। চিকিৎসকদের মতে, এই অভ্যাস থেকে ছড়াতে পারে এক অতি সংক্রামক ভাইরাসঘটিত রোগ- হারপিস। ঠোঁটে ব্যবহার্য প্রসাধনী যদি একজন রোগাক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসে, আর পরে অন্য কেউ সেটি ব্যবহার করেন, তবে সেই ভাইরাস অজান্তেই ছড়িয়ে যেতে পারে শরীরে।

কী এই ভাইরাস?
হারপিস মূলত দুই ধরনের হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ ১ এবং টাইপ ২। ঠোঁট বা মুখগহ্বর সংক্রান্ত হারপিস সাধারণত টাইপ ১ দ্বারা হয়। সমস্যার বিষয় হল, একবার দেহে প্রবেশ করলে এই ভাইরাস সম্পূর্ণরূপে নির্মূল হয় না; শরীরের স্নায়ুতে লুকিয়ে থেকে বারবার সক্রিয় হতে পারে।

কীভাবে সংক্রমণ ছড়ায়?
হারপিস ভাইরাস প্রধানত আক্রান্ত ব্যক্তির লালা, ঘা বা ত্বকের সংস্পর্শে ছড়ায়। তাই কারও ব্যবহৃত লিপস্টিক, লিপবাম বা এমনকী গ্লাস ও চামচ ভাগাভাগি করলেও সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। ঠোঁটে ফাটল বা ক্ষত থাকলে সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়। ঠোঁটে যদি ভাইরাস সক্রিয় অবস্থায় থাকে তবে মুহূর্তের সংস্পর্শেই তা ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আরও পড়ুন: প্রকাণ্ড করতে গিয়েছিলেন লিঙ্গ, ফস করে পুরোটাই কেটে ফেললেন চিকিৎসক! মাথায় হাত রোগীর

লক্ষণগুলি কী কী?
হারপিস সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ এমনই স্বল্প যে, প্রায়শই অবহেলা করেন অনেকে। সাধারণ জ্বর বা ঠোঁট ফাটা ভেবে ভুল হয়। কিন্তু একটু সময় নিয়ে খেয়াল করলে এর নির্দিষ্ট কিছু উপসর্গ ধরতে পারা যায়।

১। ঠোঁটে ফোস্কা বা ঘা: ছোট ছোট জলভরা ফোস্কার মতো দেখা যায়, যা পরে শুকিয়ে খোসা হয়ে যায়।

২। জ্বালা বা চুলকানি: ফোস্কা ওঠার আগে ঠোঁটে অস্বস্তিকর জ্বালাভাব, খুচখুচে অনুভূতি হয়।


৩। ব্যথা ও অস্বস্তি: আক্রান্ত স্থানে খাওয়া-দাওয়া বা কথা বলার সময় ব্যথা অনুভূত হয়।


৪। মৃদু জ্বর ও ক্লান্তি: সংক্রমণ প্রথমবার হলে অনেকের শরীরে সামান্য জ্বর, গলাব্যথা ও অবসাদ দেখা দিতে পারে।


৫। লসিকা গ্রন্থি ফোলা: ঘাড়ের চারপাশে লসিকা গ্রন্থি ফুলে উঠতে পারে।

আরও পড়ুন: প্রকাণ্ড করতে গিয়েছিলেন লিঙ্গ, ফস করে পুরোটাই কেটে ফেললেন চিকিৎসক! মাথায় হাত রোগীর

কেন বিপজ্জনক?
হারপিস একবার শরীরে প্রবেশ করলে আজীবন থেকে যায়। চিকিৎসার মাধ্যমে কেবল উপসর্গ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ঠোঁটে একাধিকবার ফোস্কা ওঠা, ব্যথা বা জ্বালা হওয়ার প্রবণতা থেকে যায়। বিশেষত অন্তঃসত্ত্বা নারী ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস গুরুতর সংকট ডেকে আনতে পারে।

প্রতিরোধের উপায়

১। কারও ব্যবহৃত লিপস্টিক, লিপবাম বা প্রসাধনী ভাগাভাগি করবেন না।

২। আক্রান্ত অবস্থায় অন্যকে চুম্বন করা বা ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

৩। রোজের ব্যবহারের গ্লাস, চামচ, স্ট্র-এর মতো জিনিস আলাদা করে রাখুন।

৪। রোগ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ প্রয়োগ করুন।

আরও পড়ুন: প্রকাণ্ড করতে গিয়েছিলেন লিঙ্গ, ফস করে পুরোটাই কেটে ফেললেন চিকিৎসক! মাথায় হাত রোগীর
সব মিলিয়ে, সৌন্দর্যচর্চার সামগ্রী ভাগাভাগি করার অভ্যাস অনেকের কাছে তুচ্ছ মনে হলেও, এটি হারপিসের মতো সংক্রমণ ছড়ানোর একটি বড় মাধ্যম হতে পারে। তাই সচেতনতা ও ব্যক্তিগত জিনিসপত্র ব্যবহারে সতর্ক থাকাই এই রোগ প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়।