সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া এক গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তিতে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করেছে। বর্তমানে অনলাইনে ব্যাপকভাবে প্রচারিত ‘ডিজিটাল গোল্ড’ ও ‘ই-গোল্ড’ নামের বিনিয়োগ পণ্যগুলো যে সেবি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয়, সে বিষয়টি পুনরায় স্পষ্ট করে জানানো হয়। এসব পণ্যকে সোনার নিরাপদ বিকল্প হিসেবে বাজারজাত করা হলেও, বিনিয়োগকারীদের জন্য এতে কোনও রকম সুরক্ষা বা নিয়ন্ত্রক সুরাহা নেই, বলছে সেবি।
2
9
সেবির বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম বিনিয়োগকারীদের কাছে ডিজিটাল সোনার স্কিম, ই-গোল্ড পণ্য কিংবা সোনাভিত্তিক অনলাইন অ্যাসেট বিক্রি করছে। সাধারণভাবে এগুলোকে সোনার বিকল্প বা সহজ বিনিয়োগ পথ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে এসব পণ্যকে সিকিউরিটিজ বা কমোডিটি ডেরিভেটিভস হিসেবে স্বীকৃত দেয়নি সেবি। ফলে সেবির আওতাভুক্ত যেসব বিনিয়োগ সুরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে—সেগুলোর কোনোটিই এই ডিজিটাল গোল্ড বিনিয়োগে প্রযোজ্য নয়।
3
9
বিজ্ঞপ্তিতে সেবি স্পষ্ট করে জানায়, “ডিজিটাল গোল্ড/ই-গোল্ড পণ্যের বিনিয়োগে সেবির কোনও নিয়ন্ত্রণ বা সুরক্ষা নেই। বিনিয়োগকারীরা যেন এবিষয়ে সচেতন থাকেন।”
4
9
যদিও ডিজিটাল সোনার জনপ্রিয়তা গত কয়েক বছরে দ্রুত বেড়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি মোবাইল-ফার্স্ট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ক্রেতাদের সহজে অনলাইনে সোনা কেনার সুযোগ দিচ্ছে। ডিজিটাল গোল্ড–এর ক্ষেত্রে দাবি করা হয় যে অনলাইনে কেনা সোনা ব্যাকড থাকে এবং নিরাপদ ভল্টে সংরক্ষণ করা হয়। ক্রেতারা চান তাহলে ভবিষ্যতে সেটি জুয়েলারি বা কয়েন আকারে রিডিমও করতে পারেন।
5
9
ফোনপে, গুগল পে, পেটিএম–এর মতো জনপ্রিয় পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মও সেফগোল্ড, কারাটলেন, তানিষ্ক, এমএমটিসি–প্যাম্প–এর মতো সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়ে ডিজিটাল সোনা কেনার ব্যবস্থা চালু করেছে। ফলে সাধারণ মানুষের কাছে খুব সহজেই সোনা বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিন্তু সহজলভ্য হওয়া মানেই নিরাপদ বিনিয়োগ নয়। সেবি এই বিষয়টিকেই গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেছে।
6
9
বিনিয়োগকারীদের মনে রাখতে হবে, ডিজিটাল গোল্ড কেনার ক্ষেত্রে জিএসটি, ক্যাপিটাল গেইনস ট্যাক্স, এবং শর্ট-টার্ম গেইনস ট্যাক্স—সব ধরনের কর প্রযোজ্য হতে পারে। অর্থাৎ, কর-সংশ্লিষ্ট ঝুঁকিও এখানে বিদ্যমান।
7
9
সেবি তার বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করেছে যে সোনায় নিরাপদভাবে বিনিয়োগ করতে চাইলে বিনিয়োগকারীরা সেবি নিয়ন্ত্রিত বিকল্প বেছে নিতে পারেন। যেমন—গোল্ড ইটিএফ, গোল্ড-ভিত্তিক মিউচুয়াল ফান্ড, কিংবা অন্য অনুমোদিত সোনা-সম্পর্কিত আর্থিক পণ্য। এসব বিনিয়োগ সেবির নির্ধারিত নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর মধ্যে পরিচালিত হয় এবং সেবির নিবন্ধিত মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়।
8
9
সেবির ভাষায়: “নিয়ন্ত্রিত সোনা-ভিত্তিক বিনিয়োগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয় এবং তা সেবির নির্ধারিত নীতিমালার আওতাভুক্ত। বিনিয়োগকারীরা যেন এসব আনুষ্ঠানিক পথ অনুসরণ করেন।”
9
9
অনিয়ন্ত্রিত ডিজিটাল গোল্ডে বিনিয়োগে লুকিয়ে রয়েছে বড় ধরনের ঝুঁকি, কারণ এগুলোর পেছনে কোনও সরকারি সুরক্ষা বা নিয়ন্ত্রক সংস্থার নজরদারি নেই। তাই সেবি বিনিয়োগকারীদের পুনরায় মনে করিয়ে দিয়েছে সোনা বিনিয়োগ করতে চাইলে নিয়ন্ত্রিত ও সুরক্ষিত মাধ্যমেই বিনিয়োগ করুন, অননুমোদিত ডিজিটাল স্কিমে নয়।