মধ্য নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আবারও লা নিনা পরিস্থিতি ফিরে এসেছে। ছয় বছরের মধ্যে এটি পঞ্চমবারের মতো প্রাকৃতিক আবহাওয়ার ঘটনাটি আবির্ভূত হয়েছে।
2
9
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে মার্কিন জাতীয় মহাসাগরীয় ও বায়ুমণ্ডলীয় প্রশাসন (NOAA) এ কথা জানিয়েছে, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে লা নিনা পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিল। এই পরিস্থিতি ডিসেম্বর ২০২৫-ফেব্রুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে। এর ফলে ভারতে কী প্রভাব পড়বে।
3
9
লা নিনা হলো এল নিনো সাউদার্ন অসিলেশন (ENSO)-এর একটি পর্যায়। ENSO-র ফলে মধ্য এবং পূর্ব গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগর বরাবর সমুদ্রের তাপমাত্রার পরিবর্তিত হয়। ENSO-এর তিনটি পর্যায় আছে- উষ্ণ (এল নিনো), শীতল (লা নিনা) এবং নিরপেক্ষ। যা দুই থেকে সাত বছরের অনিয়মিত চক্রে ঘটে।
4
9
লা নিনা পর্বের সময়, স্বাভাবিকের চেয়ে শক্তিশালী বাতাস উষ্ণ জলকে পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে ঠেলে দেয়, যার ফলে ভারত সহ মধ্য ও পূর্ব অঞ্চলগুলি শীতল হয়ে যায়। ভারতে এল নিনোর প্রভাবে বৃষ্টিপাত হ্রাস এবং তাপমাত্রার বৃদ্ধি পায়। যেখানে লা নিনার ফলে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পায়, তাই তাপমাত্রা কমে যায়। মৌসম ভবনের আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, লা নিনার কারণে ভারতের বেশ কিছু অংশে, বিশেষ করে উত্তরে তীব্র ঠান্ডা পড়তে পারে। এর ফলে পাহাড়ি অঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ এবং তুষারপাতের পরিমাণ বাড়তে পারে।
5
9
তবে, লা নিনা বলতে তীব্র শীতকালকে বোঝায় না। এর অন্যতম কারণ হল বিশ্ব উষ্ণায়ন। যা আবহাওয়ার শীতল প্রভাবকে দমিয়ে দিতে পারে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) গত মাসে বলেছিল যে লা নিনার প্রত্যাবর্তন সত্ত্বেও, বিশ্বব্যাপী গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের উপরে থাকবে।
6
9
লা নিনার শীতল প্রভাব থাকা সত্ত্বেও তা অস্বাভাবিক উষ্ণ বছরগুলির ধারা ভাঙতে পারেনি। গত ১০টি বছরই রেকর্ড করা সবচেয়ে উষ্ণ বছর। এমনকি গত বছর এল নিনো মিলিয়ে যাওয়ার পরও তাপমাত্রা রেকর্ডের কাছাকাছি ছিল। ২০২৪ সাল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উষ্ণ বছর হিসেবে রেকর্ড হয়েছে।
7
9
উত্তর ভারতে ইতিমধ্যেই দীপাবলির আগে শীতের আমেজ অনুভূত হচ্ছে। নয়ডা, গাজিয়াবাদ এবং গুরগাঁও সহ দিল্লি-এনসিআরের কিছু অংশে সকালে হালকা কুয়াশা দেখা যাচ্ছে। শীত এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে আসেনি ভারতে। যদিও বর্ষাকাল বিদায় নেওয়ার ফলে আগামী সপ্তাহে কিছু বৃষ্টিপাত হতে পারে।
8
9
উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ু (অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর) স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি আর্দ্র থাকবে বলেও ধারণা মৌসম ভবনের। বিশেষ করে তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং আশেপাশের এলাকায় গড় বৃষ্টিপাতের হার ১১২ শতাংশের বেশি হতে পারে।
9
9
শীতকাল দীর্ঘ হলে দিন ও রাতের তাপমাত্রার মধ্যে আরও বেশি তারতম্য দেখা দেবে। দেশের অনেক অঞ্চলে আরও বেশী ঠান্ডা পড়বে এবং স্বাভাবিকের চেয়ে দীর্ঘ এবং লম্বা শীতকাল থাকবে।