দেবের সঙ্গে তাঁর যৌথ প্রযোজনায় ‘ধূমকেতু’ ভেঙে দিয়েছে বিগত কয়েক বছরের বাংলা ছবির বক্স অফিস রেকর্ড। এরপর চলতি বছরেই এসভিএফ-এর সঙ্গে তাঁর যৌথ প্রযোজনায়, সৃজিত মুখার্জির পরিচালনায় আসছে ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’। সেই রাণা সরকার এবার ঘোষণা করলেন তাঁর নতুন ছবি। ছবির নাম ‘এম্পারার ভার্সেস শরৎচন্দ্র’। এবং সারথি? পরিচালক সৃজিত মুখার্জি! এই ছবি প্রযোজনার দায়িত্বে ফের একবার একসঙ্গে থাকছে এসভিএফ এবং দাগ ক্রিয়েটিভ মিডিয়া। 

 

আরও পড়ুন: ঋতুপর্ণ ঘোষের সঙ্গে ‘মুখ দেখাদেখি বন্ধ’ থেকে ‘জাবড়া ফ্যান’ হওয়া, প্রয়াত পরিচালকের জন্মদিনে স্মৃতি হাতড়ালেন মীর

এই নতুন ছবি ঘিরেও যে প্রত্যাশার পারদ চড়ছে, ঘোষণার মুহূর্তে থেকেই সেকথা বলাই বাহুল্য। ছবির পোস্টার শেয়ার করে ফেসবুকে রাণা লিখেছেন, 

“নানা কারণে বাংলা ভাষায় এ ধরনের বই কেউ লিখে না। 
তাই আমি যখন লিখলাম, তখন সবদিক জেনেই লিখেছি। 
কিন্তু বাংলাদেশের গ্রন্থকার হিসেবে যদি মিথ্যার আশ্রয় না নিয়ে থাকি এবং তা সত্ত্বেও যদি রাজশাস্তি ভোগ করতে হয় তো করতেই হবে, তা মুখ বুজেই মেনে চলি কিন্তু প্রতিবাদ করা কি উচিত নয়?

আমার প্রতি আপনি এই অবিচার তুলেছেন যেন আমি শাস্তি এড়াবার ভয়েই প্রতিবাদের ঝড় তুলেছি,কিন্তু বাস্তবিক তা নয়। দেশের লোকে যদি প্রতিবাদ না করে তবে আমাকেই করতে হবে তবে হৈ চৈ করে নয়, আরেকখানা গ্রন্থ লিখে”

- শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (৯ই জুলাই,১৯২৮) 

Our next with Srijit Mukherji releasing on 1st May,2026.

#newmovie #announcement #patherdabi #freedom #fighter #bengali #cinema #EmperorVsSaratChandra 

SVF Mahendra Soni DagCmedia”

(পোস্টের বানান অপরিবর্তিত রাখা হল) 

 

 

 

‘এম্পারার ভার্সেস শরৎচন্দ্র’ ছবি প্রসঙ্গে আজকাল ডট ইন-কে পরিচালক জানালেন, আগামী বছর শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘পথের দাবী’ উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার শতবর্ষ। ১৯২৬ সালের ৩১ অগাস্ট এই বই প্রকাশিত হয়েছিল। ইংরেজ সরকার বইটিকে নিষিদ্ধ করে দেয় ১৯২৭ সালের জানুয়ারি মাসে। ইংরেজ সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে ওঠা, বই নিষিদ্ধ হওয়া এবং সমাজে তার প্রভাব, পুরোটা নিয়েই এই ছবি। পরিচালকের উদ্দেশ্যে প্রথম প্রশ্ন ছিল, কেন শরৎচন্দ্রকে তিনি বাছাই করলেন? কারণ ইংরেজরা তো বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো  সাহিত্যসম্রাটের উপন্যাস, বই নিষিদ্ধ করেছিল।  পরিচালকের অননুকরণীয় ভঙ্গিমায় জবাব, “সেই সময় শুধু বাংলার নয়, গোটা ভারবর্ষের সবথেকে জনপ্রিয় লেখক ছিলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। বাংলার ঘরে ঘরে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর লেখা থেকে মঞ্চসফল নাটক হচ্ছে, সিনেমা হচ্ছে, তাঁর লেখা নভোলে ইংরেজিতে অনুবাদ হয়ে বেরোচ্ছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে...সেরকম সাফল্যের তূরীয় পর্যায়ে বসে সেই মানুষটি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে যেভাবে গর্জে উঠছেন, সেটা ভীষণ ইন্সপায়ারিং!” 

 

এই ছবি যেহেতু পিরিয়ড ফিল্ম এবং সেই সময় বাংলার মাটিতে চলেফিরে বেড়ানো থেকে গর্জে উঠছেন একেকটি বুক কাঁপানো নাম। সেইসব মনীষীদের চরিত্রে কি দেখা যাবে এই ছবিতে? এক মুহূর্ত সময় না নিয়ে নিজস্ব ছন্দে সৃজিতের জবাব, “নিশ্চয়ই! আপাতত বলতে পারি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ-এর নাম। সঙ্গে শরৎচন্দ্রের বইয়ের প্রকাশকদেরও উল্লেখ থাকছে।”  পাশাপাশি পরিচালক এও বাংলা ছবির দুনিয়ার নামী অভিনেতাদের নাম মাথায় রয়েছে, এই ছবির প্রধান মুখ হওয়ার জন্য। তবে কাস্টিং চূড়ান্ত হয়নি। কারণ কাস্টিংটা সবার শেষে করেন তিনি। এবং সেটা নিয়েই এখন চিন্তাভাবনা, আলোচনা শুরু করবেন তিনি। ছবির বিষয় এত বড়, লার্জার ড্যান লাইফ সব চরিত্ররা থাকবেন, বলিউডের কোনও জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীকে দেখা যেতে পারে এই ছবিতে? স্মিত হেসে জবাব এল, “না, কারণ আমি ডাবিংয়ে বিশ্বাস করি না। একটু বুঝিয়ে বলি। আমি হিন্দি ছবি, ওয়েব সিরিজ পরিচালনা করেছি এবং বহু নামীদামি অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গেই কাজ করেছি। তাঁদের সংলাপ তাঁরাই হিন্দিতে ডাব করেছেন। কোনও হিন্দি ছবির অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সংলাপ অন্য কোনও বাঙালি অভিনেতা-অভিনেত্রী আউড়ে দেবেন, এই গোটা বিষয়টাতেই আমি বিশ্বাসী নয়। আর এই ছবিটা তো বাংলার।” 

 

পিরিয়ড ফিল্ম যেহেতু তাই ‘এম্পারার ভার্সেস শরৎচন্দ্র’ কি বড়পর্দায় সাদা-কালো রঙে দেখা যাবে? পরিচালক জানালেন, এখনও এরকম কোনওকিছুরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।  তবে সৃজিতের কথা থেকেই জানা গেল, চলতি বছরের নভেম্বরেই শুরু হবে শুটিং। এরপর এ ছবি মুক্তি পাবে ২০২৬-এর পয়লা মে।