ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের পাশে দাঁড়ালেন অভিনেত্রী রেণুকা সাহানে। ওজন বৃদ্ধি নিয়ে যাঁরা সমালোচনা করেন, তাঁদের কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, মা হওয়ার পর ঐশ্বর্য একাধিকবার আন্তর্জাতিক রেড কার্পেটে উপস্থিত হয়েছেন। কিন্তু প্রতিবারই তাঁর পোশাক বা চেহারা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলের শিকার হতে হয়েছে তাঁকে।

সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রেণুকা বলেন, “ঐশ্বর্যকে আমাদের গর্বের সঙ্গে উদযাপন করা উচিত। যাঁরা ওঁর সম্পর্কে ভাল কিছু বলতে পারেন না, তাঁদের মুখ বন্ধ রাখাই উচিত।”

তিনি আরও বলেন, “বছরের পর বছর ধরে ঐশ্বর্য আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন। বড় বড় ব্র্যান্ডের মুখ হয়ে বহু বছর ধরে তিনি সম্মান অর্জন করেছেন। অথচ আমরা কেবল বলি—‘ওহ, এটা পরা ঠিক হয়নি!’ দয়া করে এসব বন্ধ করুন। যদি ভাল কিছু বলার না থাকে, চুপ থাকুন।”

রেণুকা আরও যোগ করেন, আজকের দিনে অভিনেত্রীদের উপর যে চাপ তৈরি হয়েছে তা অকল্পনীয়। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে প্রতিনিয়ত তাঁদের বিচার করা হচ্ছে, তাঁদের নিখুঁত দেখতে হবে—এই মানসিকতা তাঁদের উপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ তৈরি করছে।

তিনি বলেন, “মা হওয়ার পরও সমাজ চায় নারীরা সঙ্গে সঙ্গে আগের শরীরে ফিরে যাক। এটা একেবারেই অবাস্তব।”

উল্লেখ্য, ঐশ্বর্য হওয়ার পর তাঁর স্বামী অভিষেক বচ্চনও এই বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। এক সাক্ষাৎকারে অভিষেক বলেছিলেন, “কারও চেহারা নিয়ে এমন সংবেদনহীন মন্তব্য করা একেবারেই অমানবিক এবং অশোভন।”

ঐশ্বর্য ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতের অন্যতম সফল ও প্রভাবশালী অভিনেত্রী। ১৯৯৪ সালে ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ খেতাব জিতে তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছিলেন। এরপর ‘হাম দিল দে চুকে সনম’, ‘দেবদাস’, ‘গুরু’, ‘যোধা আকবর’ এবং ‘তাল’-এর মতো সিনেমায় তাঁর অভিনয় দক্ষতা দর্শক ও সমালোচকদের সমানভাবে মুগ্ধ করেছে। শুধু বলিউড নয়, ঐশ্বর্য হলিউডের ‘ব্রাইড অ্যান্ড প্রেজুডিস’, ‘দ্য পিংক প্যান্থার ২’-এর মতো আন্তর্জাতিক প্রকল্পেও নিজের অবস্থান দৃঢ় করেছেন। গ্ল্যামার, প্রতিভা এবং আত্মবিশ্বাসের মেলবন্ধনে তিনি আজও ভারতের অন্যতম আইকনিক মুখ, যিনি সৌন্দর্যের পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নের প্রতীক হিসাবেও পরিচিত।

রেণুকাও একজন জনপ্রিয় ভারতীয় অভিনেত্রী, যিনি টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র—দুই মাধ্যমেই সমান সাফল্য অর্জন করেছেন। নয়ের দশকে ‘সুরভি’ নামের তথ্যবহুল অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা হিসেবে তিনি ঘরে ঘরে পরিচিতি পান। পরবর্তীতে ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন!’ ছবিতে মাধুরী দীক্ষিতের দিদির ভূমিকায় অভিনয় করে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেন। তাঁর সহজ-সরল অভিনয়, উজ্জ্বল হাসি এবং স্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব দর্শকের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। শুধু অভিনেত্রী হিসীবেই নয়, রেণুকা একজন সফল পরিচালকও—তাঁর পরিচালিত ‘ত্রিভঙ্গ’ ছবিটি সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। তিনি সর্বদা নিজের মতামত খোলাখুলি প্রকাশ করেন এবং সমাজে নারীর প্রতি শ্রদ্ধা এবং সহানুভূতির গুরুত্ব নিয়েও সোচ্চার।