পাঞ্জাবি সঙ্গীত জগতে ফের শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রয়াত জনপ্রিয় লোকসঙ্গীত শিল্পী গুরমীত মান। এই শিল্পীর প্রয়াণ পাঞ্জাবি সঙ্গীতপ্রেমী এবং শিল্পমহলে গভীর শোকের সৃষ্টি করেছে। তবে, তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কোনও নিশ্চিত খবর প্রকাশিত হয়নি, যা এই শোকের মাত্রাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

 

 

গুরমীত মান দীর্ঘদিন ধরে পাঞ্জাবি লোকসঙ্গীতকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছেন। তাঁর কণ্ঠের গভীরতা, লোক-ঐতিহ্যের প্রতি তাঁর নিবেদন এবং মন ছুঁয়ে যাওয়া গানের কথা তাঁকে শ্রোতাদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় করে তুলেছিল। পাঞ্জাবের গ্রাম বাংলার জীবন, প্রেম, বিরহ এবং সংস্কৃতিকে তিনি তাঁর সঙ্গীতের মাধ্যমে সার্থকভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা পাঞ্জাবি প্রবাসীদের মনেও বিশেষ স্থান দখল করে আছে।


রুপরে জন্মগ্রহণ করা গুরমীত মান শুধুমাত্র একজন শিল্পী ছিলেন না, তিনি একসময় পাঞ্জাব পুলিশেও সুনামের সঙ্গে কাজ করেছেন। নিজের শৈল্পিক সাধনা এবং জনসেবার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য তিনি বিশেষ সম্মান লাভ করতেন। তাঁর বিনয় এবং কাজের প্রতি নিষ্ঠা তাঁকে মঞ্চের বাইরেও এক শ্রদ্ধার পাত্র করে তুলেছিল।

 


তাঁর কর্মজীবনে তিনি বহু জনপ্রিয় গান এবং অ্যালবাম উপহার দিয়েছেন, যার মধ্যে 'সোহরেয়াঁ দ্য পিণ্ড' এবং 'চণ্ডীগড় ইন রুম' অন্যতম। শিল্পী প্রীত পায়াল-এর সাথে তাঁর যুগলবন্দীগুলি ছিল বিশেষভাবে জনপ্রিয়। 'বোলিয়াঁ বোলি ম্যায় পাওয়ান' এবং 'কাকে দিয়ান পুরহিয়ান'-এর মতো গানগুলি আজও শ্রোতাদের হৃদয়ে গেঁথে আছে তাঁদের সরলতা ও আন্তরিকতার জন্য।

 

আরও পড়ুন: কাউকে সামনে পেলেই কামড়ে দিতেন! টাইগার শ্রফের নামের পিছনে লুকিয়ে কোন গল্প? ফাঁস করলেন খোদ অভিনেতা

 


গান গাওয়ার পাশাপাশি, গুরমীত মান পাঞ্জাবি কমেডি, অভিনয় এবং প্রযোজনাতেও নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। তাঁর বহুমুখী প্রতিভা এবং বিনোদন জগতের প্রতি তাঁর আবেগ ছিল প্রশ্নাতীত। তাঁর কাজ পাঞ্জাবের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে তুলে ধরে এবং এই ঐতিহ্যকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটায়।

 


সম্প্রতি রাজবীর জওয়ান্দার মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর পরই গুরমীত মানের প্রয়াণ পাঞ্জাবি সঙ্গীত জগৎকে শোকে ভাসিয়ে দিয়েছে। তাঁর মৃত্যু একটি যুগের সমাপ্তি বলে মনে করা হচ্ছে। সরলতা ও আন্তরিকতায় ভরা তাঁর কণ্ঠস্বর তাঁর কালোত্তীর্ণ গানগুলির মাধ্যমে চিরকাল বেঁচে থাকবে। পাঞ্জাবি লোকসঙ্গীতের প্রতি তাঁর অসামান্য অবদান এবং তিনি যে প্রাণবন্ত সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছেন, তার প্রতিচ্ছবি হিসেবে গুরমীতের উত্তরাধিকার অটুট থাকবে।