সংবাদ সংস্থা মুম্বই: ‘হেরা ফেরি ৩’-এর জন্য অধীর আগ্রহে দিন গুনছিলেন দর্শক। ‘আরে বাবুরাও আয়েলা রে!’ বলে হল কাঁপাবে আবার সেই ত্রয়ী—এটাই ছিল প্রত্যাশা। কিন্তু ঠিক সেখানেই এল বাজ পড়া! বাবুরাও মজার চরিত্রে চিরচেনা পরেশ রাওয়াল নিজেই পিছিয়ে গেলেন এই ছবি থেকে। এবং এই ছবি ছাড়ার পেছনে নেই কোনও সৃজনশীল মতবিরোধ, বরং আর্থিক ও সময়সংক্রান্ত অসঙ্গতি—যা তৈরি করেছে গোটা ইন্ডাস্ট্রিতে আলোড়ন।
এক্স পোস্টে (সাবেক টুইটার) নিজেই জানিয়ে দিয়েছেন পরেশ রাওয়াল— “আমার আইনজীবী অমিত নায়েক যথোপযুক্ত উত্তর পাঠিয়েছেন আমার চুক্তি বাতিল ও প্রস্থানের বিষয়ে। ওরা একবার পড়লেই ওদের সব প্রশ্ন মিটে যাবে।”
My lawyer, Ameet Naik, has sent an appropriate response regarding my rightful termination and exit. Once they read my response all issues will be laid to rest.
— Paresh Rawal (@SirPareshRawal)Tweet by @SirPareshRawal
এই টুইট দেখেই হইচই পড়ে যায় নেটদুনিয়ায়। এক ভক্ত লেখেন, “সব ঠিকঠাক চলছিল, হঠাৎ কী এমন হল যে ওঁকে ছবি ছাড়তে হল?” আরেকজন লেখেন, “ক্কি আর পরেশ তো বেস্ট ফ্রেন্ডস! হঠাৎ কী হল যে এমন ভাঙন ধরল?” জোর খবর, চুক্তি বাতিলের পর পরেশ রাওয়াল শুধু ছবি সাইনিং অ্যামাউন্ট ১১ লাখ টাকাই ফেরত দেননি, সঙ্গে দেন অতিরিক্ত ১৫ শতাংশ সুদও! অর্থাৎ যা নিয়েছিলেন, তার থেকেও বেশি ফেরত দিয়েছেন নির্মাতাদের।
এর পিছনে ছিল সময়ের অঙ্ক। সিনেমার শুটিং পরের বছরে, মুক্তি তার থেকেও পরে। ফলে পুরো পারিশ্রমিক পেতে অপেক্ষা করতে হত প্রায় দুই বছর। এই দীর্ঘ প্রতীক্ষাই তাঁকে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। বর্তমানে হেরা ফেরি ৩ ছবির নির্মাতাদের হতাশা চরমে। পরিচালক প্রিয়দর্শন থেকে শুরু করে সুনীল শেট্টি—সবাই স্তব্ধ পরেশের এই ঘোষণায়। সবচেয়ে বড় ধাক্কা খেয়েছেন খোদ অক্ষয় কুমার, যিনি শুধু অভিনেতা নন, এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রযোজকও।
নিজের প্রোডাকশন হাউসের তরফে আইনজীবী পূজা তিড়কের মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছেন অক্ষয়। অক্ষয় কুমারের আইনজীবীর তরফে বলা হয়েছে এক প্রতিবেদনে, “এর মারাত্মক আইনি পরিণতি হবে। পুরো ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্ষতি হল। আমরা তাঁকে লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছি—এই সিদ্ধান্তের জন্য বহু খরচ জলে গেছে, কাস্ট, ক্রু, সিনিয়র অভিনেতাদের সঙ্গে করা চুক্তি, শুটিং, এমনকী ট্রেলারের খরচও বাদ পড়বে না।”
২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হেরা ফেরি’ এবং ২০০৬-এর সিকুয়েলে পরেশ রাওয়ালের ‘বাবুরাও’ চরিত্র দর্শকের হৃদয়ে চিরস্থায়ী হয়ে আছে। তাঁর বিদায়ে শুধু সিনেমা নয়, যেন নস্ট্যালজিয়ার এক টুকরো ঝরে গেল। তাহলে ‘বাবুরাও’ সত্যিই বিদায় নিলেন?
এখন প্রশ্ন একটাই— ‘বাবুরাও’ ছাড়া ‘হেরা ফেরি ৩’ কি সত্যিই সম্ভব?
