বিনোদনের রসদ জোগাতে সিরিজের জুরি মেলা ভার। নতুন সিরিজের গল্প মন কেড়ে নেয় দর্শকের। পছন্দের সিরিজের একটা সিজন শেষ হতেই পরবর্তী সিজনের অপেক্ষায় থাকেন দর্শক মহল।
ক্যামেলিয়া প্রযোজনা সংস্থার ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ফ্রাইডে-তে আসছে সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়ের তৈরি রহস্য রোমাঞ্চে মোড়া সিরিজ। নাম '১৯৫৪ দ্য হিস্টোরিক্যাল ক্রাইম'। যদিও আগে এর নাম ছিল ‘১৯৫৪ বেলারানি মার্ডার কেস'। সত্য ঘটনা অবলম্বনে তৈরি এই সিরিজে গোয়েন্দা চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষকে। লালবাজারের দুঁদে গোয়েন্দা 'সমরেন্দ্র সেনগুপ্ত'-এর চরিত্রে ধরা দেবেন তিনি। গোয়েন্দার চরিত্রে রুদ্রনীলকে খুব বেশি দেখা যায়নি। এর আগে অভিরূপ ঘোষ পরিচালিত ‘কে: দ্য সিক্রেট আই’ ছবিতে গোয়ন্দা চরিত্রে দর্শক রুদ্রনীলকে দেখেছিলেন। তবে, নতুন এই সিরিজে রয়েছে একাধিক চমক। সিরিজে খলনায়কের চরিত্রে দেখা যাবে সৌরভ দাসকে। যিনি তাঁর স্ত্রী বেলারানিকে নৃশংসভাবে খুন করেন।

শুক্রবার প্রকাশ্যে এল এই সিরিজের প্রথম পোস্টার। শহরের বুকে হাড় হিম করা ঘটনার প্রভাবে যে হুলস্থুল কাণ্ড ঘটেছিল, সেই ছবি যেন স্পষ্ট হল সিরিজের পোস্টারে। পোস্টারটি ভাগ করে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ফ্রাইডের সমাজমাধ্যমে লেখা হয়, 'শহরের বুকে ঘটে যাওয়া এক মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের রহস্যের জট খুলবে এবার।'
সিরিজে বেলারানির চরিত্রে দেখা যাবে অভিনেত্রী প্রান্তিকা দাসকে। আজকাল ডট ইন-কে প্রান্তিকা এর আগে বলেছিলেন, "আমার চরিত্রকে কেন্দ্র করেই গল্প এগোয়। ১৯৫৪ সালের উত্তর কলকাতার ছবি উঠে আসবে এই সিরিজে। শুটিং শেষ। খুব তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবে সিরিজটি।" প্রান্তিকা, সৌরভ, রুদ্রনীল ছাড়াও সিরিজে দেখা যাবে পূজারিণী ঘোষ, সুদীপা বসু, কৌশিক সেন, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর অন্ধকার অতীত রয়েছে 'তটিনী'র! 'পরশুরাম'র চোখের আড়ালে চলছে কোন গোপন চক্রান্ত?
ওই সময় লালবাজার গোয়েন্দা বিভাগের দাপট দেখার মতো। স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের মতোই কর্মদক্ষতা সেই সময়ের গোয়েন্দাদের। পরিচালকের মনে হয়েছে, কেন এঁদের কথা জানবে না কলকাতাবাসী? তাছাড়া, এই প্রজন্ম সত্যি ঘটনা দেখতে বেশি ভালবাসে। এই কারণেই তিনি বই নয়, বাস্তব গোয়েন্দাকে ধরতে চেয়েছেন।
অভিনয় বাস্তবসম্মত করতে কী কী করেছেন সায়ন্তন, রুদ্রনীল? পরিচালক সেই সময়ের লালবাজারের হোমিসাইড বিভাগের দাপুটে অফিসার অলোক সান্যাল-সহ একাধিক অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তাঁদের চোখ দিয়ে চিনেছেন সমরেন্দ্র সেনগুপ্তকে। অলোক সান্যাল এখন লালবাজার ট্রাফিক কন্ট্রোল বিভাগের যুগ্ম কমিশনার। তিনি সিরিজে বিচারকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। পরিচালকের পথে হেঁটেছেন অভিনেতাও। রুদ্রনীল আজকাল ডট ইনকে সাফ জানিয়েছিলেন, ‘‘কোনও বিখ্যাত গোয়েন্দাকে অনুসরণ করিনি। পরিচালক, চিত্রনাট্য আর নিজের পড়াশোনার উপরে জোর দিয়েছি। নিজের মতো করে বুঝেছি সমরেন্দ্র সেনগুপ্তকে। বাকিটা দর্শক বলবেন।’’
প্রসঙ্গত, কলকাতা শহরে বিগত কয়েক দশকে বহু নৃশংস খুনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তী কলকাতায় সবথেকে নৃশংস ঘটনা ছিল বেলারানি দত্ত হত্যা মামলা। সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে দা-এর কোপ মেরে খুন এবং শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলার মত নৃশংসতা এই মামলা ছাড়া অন্য কোনও মামলায় খুব কমই দেখা গিয়েছে। ভারতের ইতিহাসে অপরাধের তদন্তে এই মামলাতেই প্রথম প্লাস্টিক সার্জারির সাহায্য নেওয়া হয়েছিল। ফলে সেদিক দিয়েও বেলারানি দত্ত হত্যা মামলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
