সংবাদ সংস্থা মুম্বই: দু’দশকের প্রতীক্ষার পর যখন ‘হেরা ফেরি ৩’-এর প্রজেক্টে গতি বাড়ছিল, ঠিক তখনই অনুরাগীদের মাথায় বাজ পড়ল একপ্রকার। ‘পরেশ রাওয়াল হঠাৎ করেই প্রজেক্ট থেকে সরে দাঁড়ালেন—এবং তা জানিয়ে দিলেন এক সরল বিবৃতিতে! বিষয়টি যতটা অবাক করার মতো, তার চেয়েও বেশি ক্ষতবিক্ষত করেছে প্রযোজনা সংস্থা ‘কেপ অফ গুড ফিল্মস’-কে, যার অধিকর্তা খোদ অক্ষয় কুমার।

 

এই সিদ্ধান্তের জেরে প্রবল আইনি বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন বর্ষীয়ান অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। “এই হঠাৎ সরে দাঁড়ানো শুধু প্রজেক্টের ক্ষতি নয়, বরং একাধিক স্তরে আইনি জটিলতা তৈরি করেছে,” জানিয়েছেন সংস্থার আইনজীবী পূজা তিড়কে।

 

তিনি আরও বলেন, “পরেশজি জানুয়ারিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবির সঙ্গে যুক্ত থাকার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী চুক্তি হয়, ট্রেলারের শুটিংও হয়। এমনকি ছবির আড়াই মিনিটের দৃশ্যও রেকর্ড হয়। হঠাৎ করেই একদিন চিঠি আসে—তিনি আর যুক্ত নন! এটা গোটা টিমের কাছে যেন বজ্রাঘাত।”

 

পরেশ রাওয়ালের এমন আচরণ শুধু আর্থিক ক্ষতির কারণ নয়, বড়সড় “সুনাম নষ্ট” বলেই মনে করছেন সংস্থার আইনজীবীরা। “ছবির অন্যান্য অভিনেতাদেরও সম্মান জড়িয়ে আছে। দর্শকরা যেভাবে এই ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ভালবাসেন, সেখানে এমন আচরণ ভীষণ হতাশাজনক। তবে আমরা আশাবাদী, বিষয়টা আলোচনার মাধ্যমে মেটানো যাবে,” বলেও আশা প্রকাশ করেন তিড়কে।

 

তিনি জানিয়েছেন, পরেশ রাওয়ালকে ৭ দিনের সময়সীমা দিয়ে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে। তাঁর সিদ্ধান্তের ফলে প্রযোজকদের আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও শিডিউল, সেট, এবং অন্যান্য টিম মেম্বারদের কাজের পরিকল্পনায় বড়সড় সমস্যা ঘটেছে।

 

২০০০ এবং ২০০৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হেরা ফেরি’ ও ‘ফির হেরা ফেরি’-তে পরেশ রাওয়ালের বাবুরাও গনপত্রাও আপ্টে চরিত্রটি হয়ে উঠেছিল এক আইকনিক ছাপ। তার অভিব্যক্তি, সংলাপ, হাস্যরস—সবকিছু মিলিয়ে এই চরিত্র একাই বহন করত ছবির গতি।

 

এই তৃতীয় পর্বে পরিচালনায় ছিলেন প্রিয়দর্শন, যিনি প্রথম ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন। ফলে প্রত্যাশার পারদ ছিল তুঙ্গে। কিন্তু এখন প্রশ্ন—বাবুরাও ছাড়া কি সত্যিই সম্ভব ‘হেরা ফেরি ৩’? পরেশ রাওয়ালের এই চমকে দেওয়া সিদ্ধান্ত এখন শুধু সিনেমার গণ্ডিতে আর আটকে নেই, বরং ছড়িয়ে পড়েছে আদালতের দ্বারপ্রান্তে।