ঐশ্বর্য রাই বচ্চন রাখঢাকে কখনওই বিশ্বাসী নন। বিশেষ করে যখন তিনি এমন বিষয়ে কথা বলেন যা বিশ্বজুড়ে মহিলাদের উপর প্রভাব ফেলে। এবার তিনি স্ট্রিট হ্যারাসমেন্ট অর্থাৎ রোজ রাস্তায় মহিলাদের যে হেনস্থার মুখোমুখি হতে হয়, তার বিরুদ্ধে কণ্ঠ তুলেছেন। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—এর দায় কখনওই নারীর উপর, তার পোশাক, ঠোঁটের লিপস্টিক বা ব্যক্তিগত পছন্দের উপর চাপানো উচিত নয়।
এক নাম করা ব্র্যান্ডের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ হিসাবে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন তিনি। দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে সেই বিউটি ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ঐশ্বর্য। ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা একটি ভিডিওয় তিনি অনুরোধ জানান, যেন কেউ এই সমস্যাটি তুলে ধরতে পিছপা না হন।
ঐশ্বর্য আরও যোগ করেন, “চোখের দিকে তাকানো এড়িয়ে যাবেন? না। সমস্যার দিকে সরাসরি তাকান। মাথা উঁচু করে দাঁড়ান। নারীত্ব ও নারীবাদ—আমার শরীর, আমার মূল্য। নিজের মূল্য কখনও কমিয়ে দেখবেন না। নিজেকে নিয়ে সন্দেহ করবেন না। নিজের অধিকারের পক্ষে দাঁড়ান। আপনার পোশাক বা লিপস্টিককে কখনও দোষ দেবেন না। স্ট্রিট হ্যারাসমেন্ট কখনওই আপনার দোষ নয়।”
ভিডিওটি প্রকাশের পর থেকেই সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসার ঝড় ওঠে। অনেকেই বলেন, ‘স্ট্রিট হ্যারাসমেন্ট বাস্তব সমস্যা, অথচ খুব কমই এ নিয়ে খোলাখুলি কথা বলা হয়। বিষয়টি তুলে ধরার জন্য ভাল লাগল।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘এটি সব নারীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।’
ঐশ্বর্যকে শেষ দেখা গিয়েছিল ‘পন্নিয়িন সেলভান: পার্ট ২’-এ। যেখানে তাঁর সঙ্গে অভিনয় করেছেন বিক্রম, রবি মোহন, কার্তি, তৃষা কৃষ্ণন, প্রভু, আর. শরৎকুমার, শোভিতা ধুলিপালা-সহ আরও অনেকে। মুক্তির পর ছবিটি ইতিবাচক সমালোচনা পায় এবং বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩৪৪.৬৩ কোটি আয় করে।
এই ছবির জন্য ঐশ্বর্য সাউথ ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল মুভি অ্যাওয়ার্ডসে সমালোচকদের বিচারে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন। স্বামী অভিষেক বচ্চনও তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা করে এটিকে ‘এ যাবৎকালের তাঁর সেরা কাজ’ বলে মন্তব্য করেন।
কিছুদিন আগে ঐশ্বর্য অন্ধ্রপ্রদেশের পুট্টাপার্থিতে আয়োজিত শ্রী সত্য সাই বাবার জন্মশতবর্ষ উদযাপনে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ক্রিকেট কিংবদন্তি শচীন তেন্ডুলকর, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু কিঞ্জারাপু এবং জি কিশন রেড্ডিও যোগ দেন। বক্তৃতা শুরু করার আগে মঞ্চে বসে থাকা প্রধানমন্ত্রীকে প্রণাম করেন প্রাক্তন বিশ্বসুন্দরী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঐশ্বর্যের সৌহার্দ্যপূর্ণ কথোপকথন এবং মঞ্চে তাঁর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের দৃশ্য দেখে অনুরাগীদের একাংশ নতুন জল্পনায় মেতে উঠেছে। তাঁদের ধারণা, খুব শিগগিরিই হয়তো ভারতীয় জনতা পার্টিতে যোগ দিতে পারেন ঐশ্বর্য। অর্থাৎ দীর্ঘদিনের অভিনয়জীবনের পরে এবার রাজনৈতিক আঙিনায় পা রাখতে পারেন এই আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেত্রী।
সামাজিক মাধ্যমে নানা মন্তব্য ছড়িয়ে পড়েছে—কারও মতে, সেখানে ঐশ্বর্যর উপস্থিতি এবং বক্তব্য ইঙ্গিত দিচ্ছে তাঁর সম্ভাব্য রাজনৈতিক ভবিষ্যতের দিকে, আবার কেউ কেউ মনে করছেন, তেমন কিছুই নয়। প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান প্রদর্শনই শুধুমাত্র এই গুঞ্জনের ভিত্তি।
