অভিষেক বচ্চন তাঁর প্রিয় মেকআপ আর্টিস্ট অশোক সাওয়ান্তকে স্মরণ করে এক আবেগঘন পোস্ট শেয়ার করেছেন। সোমবার ইনস্টাগ্রামে অভিষেক জানান, অশোকের সঙ্গে তিনি টানা ২৭ বছর কাজ করেছেন। তাঁর প্রথম ছবি ‘রিফিউজি’ থেকে অশোকই ছিলেন তাঁর মেকআপ আর্টিস্ট। শুধু সহকর্মী নয়, অশোক ছিলেন তাঁর পরিবারেরই একজন।
অভিষেক লিখেছেন, ‘অশোক দাদা আর আমি একসঙ্গে কাজ করেছি ২৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে। আমার প্রথম ছবির মেকআপও উনিই করেছিলেন। উনি শুধু আমার টিমের অংশ ছিলেন না, আমাদের পরিবারেরও একজন ছিলেন। তাঁর দাদা দীপক প্রায় ৫০ বছর ধরে আমার বাবার মেকআপম্যান।’
অভিনেতা আরও জানান, গত কয়েক বছর ধরে অসুস্থ থাকলেও অশোক সবসময় তাঁর খোঁজ নিতেন। ‘গত কয়েক বছরে উনি অসুস্থ ছিল, তাই শুটিংয়ে সবসময় আসতে পারতেন না। কিন্তু আমি যখনই শুটিং করেছি, একদিনও যায়নি যে উনি ফোন করে খোঁজ নেননি। খুবই নম্র, হাসিখুশি, মিষ্টি মানুষ ছিল অশোক দাদা। সবসময় ব্যাগে থাকত কিছু নিমকি চিভড়া আর ভাকরওয়াদি,’ লিখেছেন অভিষেক।
অভিষেক আরও লেখেন, ‘গতরাতে আমরা ওঁকে হারালাম। উনি আমার জন্য খুবই বিশেষ ছিলেন। প্রতিটি ছবির প্রথম শটের আগে ওঁর পায়ে হাত দিয়ে আশীর্বাদ নিতাম। এখন থেকে আকাশের দিকে তাকিয়ে সেই আশীর্বাদ নিতে হবে। ধন্যবাদ দাদা, তোমার ভালবাসা, যত্ন, মর্যাদা, প্রতিভা আর সেই চিরচেনা হাসির জন্য।’
অভিষেকের এই পোস্টে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই। অভিনেতা জ্যাকি শ্রফ লিখেছেন, ‘ওম শান্তি, খুবই শান্ত, ভদ্র মানুষ ছিলেন উনি।’ প্রিয়াঙ্কা চোপড়া শোকপ্রকাশ করে ভাঙা হৃদয় ও প্রার্থনার ইমোজি দিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, অশোক ‘ধুম’, ‘রান’, ‘তেরে মেরে সপনে’, ‘ব্লাফমাস্টার’-সহ একাধিক জনপ্রিয় ছবিতে মেকআপ আর্টিস্ট হিসাবে কাজ করেছেন।
অভিষেক বলিউডের অন্যতম প্রতিভাবান অভিনেতা, যিনি নিজের অভিনয় দক্ষতা এবং ব্যক্তিত্ব দিয়ে ধীরে ধীরে গড়ে তুলেছেন স্বতন্ত্র পরিচয়। কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন ও জয়া বচ্চনের পুত্র অভিষেক ২০০০ সালে ‘রিফিউজি ’ ছবির মাধ্যমে বলিউডে অভিষেক করেন। প্রথম দিকে কিছুটা ব্যর্থতা পেলেও যুবা, গুরু, বান্টি অউর বাবলি, দোস্তানা, পা এবং মনমর্জিয়াঁ–এর মতো ছবিতে তাঁর অভিনয় সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও সমান দক্ষতায় তিনি নিজের জায়গা তৈরি করেছেন। পর্দার বাইরে অভিষেক একজন সফল উদ্যোক্তা এবং ক্রীড়া অনুরাগীও, যিনি প্রো-কাবাডি ও ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত। সহ-অভিনেতা থেকে শুরু করে কলাকুশলী— সকলের সঙ্গেই অভিষেকের সুসম্পর্ক। বহু বছরের সহযাত্রী অশোকের প্রয়াণে যেন তাঁর হৃদয়ে গভীর শূন্যতা তৈরি হয়েছে।
